নিজস্ব প্রতিবেদন : অপেক্ষা আর কয়েক মুহূর্তের। আর কিছু সময়ের মধ্যেই চাঁদের মাটি ছোঁবে ভারতের দ্বিতীয় চন্দ্রযান। ৭ই সেপ্টেম্বর রাত দেড়টা থেকে আড়াইটের মধ্যে আসবে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। ধীরে ধীরে বিপরীতমুখী থ্রাস্ট ব্যবহার করে চাঁদের মাটি ছোঁবে ল্যান্ডার বিক্রম। আর তারই আগে অ্যানিমেশন ভিডিয়োর মাধ্যমে বিক্রমের চাঁদের মাটি ছোঁওয়ার পেছনের খুঁটিনাটি ব্যাখ্যা করল ইসরো। 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

 



এখন চাঁদের চারপাশে কক্ষপথে প্রদক্ষিণ করছে চন্দ্রযান-২। চলতি মাসের ১ তারিখ শেষবারের মতো কক্ষ পরিবর্তন করে চন্দ্রযান-২। ২ সেপ্টেম্বর চন্দ্রযান-২-এর অর্বিটার থেকে বিচ্ছিন্ন হয় ল্যান্ডার বিক্রম। তারপরে পরিকল্পনামাফিক পর পর দুই দিন দুই বার চাঁদের থেকে কক্ষের দূরত্ব কমায় বিক্রম। মহাকাশ অভিযানের ভাষায় যা ডিঅর্বিটিং। এই ভাবেই কার্যত চাঁদের একদম কাছাকাছি পৌঁছে যায় চন্দ্রযান-২। 


এরপর কীভাবে চাঁদের দিকে আরও এগিয়ে যাবে বিক্রম? কীভাবে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করবে চন্দ্রযান-২-এর ল্যান্ডার? পুরো বিষয়টাই অ্যানিমেশনের সাহায্যে ব্যাখ্যা করল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। টুইটারে সেই ভিডিয়ো পোস্ট করল ইসরো। দেখে নিন সেই ভিডিয়ো। 


 



ল্যান্ডার বিক্রমের তলার অংশে থাকছে চারটি পায়ের মতো অংশ। সেই অংশেই থাকছে 'টাচডাউন সেন্সর'। তাছাড়া,  বিক্রমের বিভিন্ন অংশে যুক্ত আছে অত্যাধুনিক ক্যামেরা সেনসর। এর মধ্যে কোনওটির কাজ চন্দ্রপৃষ্ঠের স্ক্যানিং করে অবতরণের সঠিক স্থান নির্বাচন করা। আবার কোনওটির কাজ বিক্রমের নিম্নমুখী অবতরণ বেগের হিসাব রাখা। থাকছে চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে দূরত্ব পরিমাপের জন্য লেজার অল্টিমিটার।


আরও পড়ুন : লঞ্চ হল Reliance JioFiber, দীর্ঘমেয়াদি প্ল্যানের সঙ্গে মিলবে টিভি!


একাধিক পর্যায়ে চাঁদের মাটিতে নেমে আসবে বিক্রম। প্রথমে আসবে 'রাফ ব্রেকিং ফেজ'। এই পর্যায়ে চাঁদের আশপাশে প্রদক্ষিণ করতে থাকা বিক্রমের বেগ কমানো হবে। চারটি ইঞ্জিন একসঙ্গে চালু করে প্রদক্ষিণ অভিমুখের বিপরীতমুখী থ্রাস্ট সৃষ্টি করা হবে। এর ফলে সেটি ব্রেকের মতো কাজ করবে। ধীর হবে বিক্রমের প্রদক্ষিণের গতি। ফলে আসতে আসতে চাঁদের দিকে এগোতে থাকবে ল্যান্ডার। এর পর চন্দ্রপৃষ্ঠের কাছাকাছি পৌঁছে(৩০কিমি) শুরু হবে 'ফাইন ব্রেকিং ফেজ'। এই পর্যায়ে ল্যান্ডিং ডিটেকশন ক্যামেরার সাহায্যে চন্দ্রপৃষ্ঠের পরিস্থিতি ও অবতরণের আদর্শ স্থান খতিয়ে দেখবে বিক্রম। 


এরপর আসবে 'হোভারিং স্টেজ'। দুটি ইঞ্জিনের সাহায্যে ধীরে ধীরে নামতে থাকবে বিক্রম। এই সময়ে চাঁদ থেকে প্রায় ৪০০ মিটার দূরত্বে থাকবে ল্যান্ডার। 'রিটার্গেটিং'-এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট করে নেওয়া হবে অবতরণের স্থান। 


সবশেষে ১০ মিটার বাকি থাকতে জ্বলে উঠবে বিক্রমের মাঝের প্রধান ইঞ্জিন। ধীরে ধীরে চাঁদের মাটিতে পাখির পালকের মতো নেমে আসবে বিক্রম। তবে এক্ষেত্রে আরও একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, চাঁদের পৃষ্ঠে যে মসৃণ ধূলিকণা রয়েছে, তা বিক্রমকে ক্ষতি করতে পারে। অবতরণের সময় খেয়াল রাখতে হবে, যাতে ধূলো খুব বেশি না ওড়ে। রাত দেড়টা থেকে রাত আড়াইটের মধ্যে এই অপারেশটি করা হবে বলে জানিয়েছেন জ্যোর্তিবিজ্ঞানীরা। 


এর পরেই পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতি বিচার করে বিক্রমের ভিতর থেকে বেরিয়ে আসবে রোভার প্রজ্ঞান। চাঁদের মাটিতে থাকাকালীন বিক্রমের শক্তির উত্স হিসাবে থাকছে সোলার প্যানেল। সৌরশক্তিকে কাজে লাগাবে বিক্রম।