নিজস্ব প্রতিবেদন: কুসংস্কারের 'সৌজন্যে' ফের মৃত্যু এক তরুণীর। মৃত্যুর কারণ, ঋতুস্রাব!


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

নেপালের আছাম জেলার তুরমাখাদ গ্রামীণ (পুরসভা-৩) এলাকার এক পরিতক্ত্য ঘর থেকে উদ্ধার করা হয় বছর তেইশের গৌরী বায়ক নামের তরুণীকে। ঋতুমতী হওয়ায় ওই ঘরে বেশ কিছুদিন একাই থাকতে হয়েছিল তাঁকে। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গিয়েছেন ওই তরুণী। যদিও ময়না তদন্তের রিপোর্ট এখনও পুলিসের হাতে আসেনি।


আরও পড়ুন- ক'দিন পরেই বিয়ে, হবু বরের সঙ্গে গল্প করায় গুলি করে খুন


ময়না তদন্তের রিপোর্ট যাই আসুক না কেন, গৌরীর মতো এমন ঘটনা প্রতিবছর আকছাড় ঘটছে নেপালে। কুসংস্কারের কঠিন বেড়াজালে আটকে প্রাণ হারাচ্ছেন সে দেশের মহিলারা। কিন্তু, কী সেই কুসংস্কার?


প্রাকৃতিক নিয়ম মেনে মেয়েরা ঋতুমতী হলে তাঁদের কিছুদিনের জন্য 'ত্যাজ্য কন্যা' করে পরিবার। যতদিন না মাসিক পর্ব শেষ হচ্ছে, ততদিন একটি পরিতক্ত্য ঘর বা গোয়ালঘরে একা থাকতে হয় মেয়েদের। সেই ঘরকে স্থানীয় ভাষায় বলা হয় 'ছৌপদী'। অন্ধকার ছোট্ট ঘরের মধ্যে কঠোর নিয়ম পালন আর 'সংযমী জীবন যাপন' করতে হয় তাঁদের। এ সময় পুষ্টিকর খাদ্য তো দেওয়াই হয় না, তার উপর খাবারের পরিমাণও কমিয়ে দেওয়া হয়। ধর্মীয় বা সামাজিক অনুষ্ঠান তো দূর, বাড়ির পুরুষদের ছোঁয়াও যায় না এই সময়। ঋতুস্রাব চলাকালীন মেয়েদের এখানে 'অপবিত্র' বলে মনে করা হয়। এমনকী, ঠান্ডা লাগলে কম্বল পর্যন্ত ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না। এই পর্বে 'বুরলাপ' নামে পাটের কাপড় ব্যবহার করেন মহিলারা। বাধ্য হয়ে প্রচণ্ড ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচতে এই সময় ঘরে আগুন জ্বালিয়ে রাখেন তাঁরা।


আরও পড়ুন- শাড়ি-হিরের নেকলেস নয়, বাংলাদেশি ভক্তদের দেওয়া নলকূপই দীপিকার জন্মদিনে সেরা উপহার


গত বছর এমনই একটি বদ্ধ ঘরে (ছৌপদী) শ্বাসরোধ হয়ে মারা গিয়েছিল বছর পনেরোর রোশনি তিরুয়া। ২১ বছরের আরেক তরুণীও মারা যায়। গত অগস্টে এই কুসংস্কারের বিরুদ্ধে আইন নিয়ে আসে নেপাল সরকার। অভিযুক্তদের ৩ মাস জেল এবং ৩ হাজার টাকা জরিমানা করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। পাশাপাশি সচেতনতা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে প্রশাসন। কিন্তু প্রত্যন্ত গ্রামে এখনও কুসংস্কারের অন্ধকারে 'ছৌপদী'-তে রাত কাটান মহিলারা।