জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: সোমবার আবার। সুদানের রাজধানীতে ফের এয়ার স্ট্রাইক। জেড্ডায় কদিন আগেই শান্তিচুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়েছে, কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। এক সৌদি কূটনীতিক মনে করেন, আসলে দু'পক্ষই মনে করে তারা যুদ্ধে জিতবে। তাই এই সংঘাত চলছেই। দু'পক্ষ বলতে সেদেশের সেনাপ্রধান আবদেল ফাতাহা আল-বুরহান এবং তার এককালের ডেপুটি মহাম্মেদ হামদান ডাগলো। গত ১৫ এপ্রিল রাজধানী খার্তুম-সহ সুদানের বিভিন্ন এলাকায় সেনা এবং আধাসামরিক বাহিনী 'র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স'-এর ক্ষমতার লড়াই শুরু হয়। গত কয়েক দিন পশ্চিমের দারফুর এলাকায় দুই বাহিনীর সংঘর্ষে শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। এরই মধ্যে সৌদি আরবের মধ্যস্থতায় যুদ্ধ থামাতে জেড্ডায় আলোচনা শুরু হয়েছে দুই প্রতিপক্ষ শিবিরের প্রতিনিধিদের মধ্যে। কিন্তু কোনও ফল ফলছে না। সংঘর্ষ বিরতি উপেক্ষা করেই সুদানে রক্তক্ষয়ী ক্ষমতার লড়াইয়ে সামিল সেনা এবং আধাসেনা। 

 


 

সুদানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মরত ভারতীয়ের সংখ্যা ছিল ৩,০০০-এর মতো। সুদানে লড়াই শুরু হওয়ার পরে তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল দিল্লি। তবে ইতিমধ্যেই অধিকাংশ ভারতীয়কে সুদান থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

 


২০০৩ সালে তৎকালীন অখণ্ড সুদানের দারফুর এলাকাতেই বেধেছিল লড়াই। আরবীয় মুসলিমপ্রধান সুদান ভেঙে তখন তৈরি হয়েছিল খ্রিস্টান দেশ দক্ষিণ সুদান। সুদানের এখনকার গৃহযুদ্ধে প্রতিপক্ষ সে দেশের সশস্ত্র বাহিনীরই দুই জেনারেল-- সেনাপ্রধান ও সহকারী সেনা প্রধান। দুই জেনারেলের বিরুদ্ধেই মানবাধিকার ভঙ্গ, লুটতরাজ, নৃশংসতা ও ধর্ষণে মদতের অভিযোগ রয়েছে।

গত কয়েক দশকে সুদানে সামরিক বাহিনীর গৃহযুদ্ধের গণহত্যায় এই দুই জেনারেলের বড় ভূমিকা ছিল। 

 

স্বৈরতন্ত্রী শাসক ওমর আল বশির তিরিশ বছর ক্ষমতাসীন থেকে শেষ পর্যন্ত ২০১৯ সালে গণ-অভ্যুত্থানের জেরে ক্ষমতা থেকে অপসারিত হন। তার পর প্রভাবশালী সামরিক গোষ্ঠীর নেতা এবং অসামরিক নেতারা মিলে একটি কাউন্সিল গঠন করে নিজেদের মধ্যে ক্ষমতা ভাগাভাগির ব্যবস্থা করেন। কিন্তু ২০২১-এর অক্টোবরে সেই সময়ের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে উৎখাত করেন সেনাপ্রধান বুরহান। এর পর তিনি ২০২৩ সালে, এই বছরে নির্বাচন ঘোষণা করেন। অর্থাৎ, চলতি বছরে নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু আদৌ হবে কিনা তা নিয়েই এখন  ঘোর প্রশ্নচিহ্ন উঠে গিয়েছে। 

 

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে সুদানে এই গৃহযুদ্ধ বন্ধের যে প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে, তা কি আদৌ ফলপ্রসূ হবে?