শ্রীলঙ্কায় নিষিদ্ধ হল হিন্দুদের বলি প্রথা
নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় অবশ্য মুসলিম সম্প্রদায়ের কোরবানি পড়ছে না।
নিজস্ব প্রতিনিধি : ধর্মীয় আচারের বিধি হিসাবে পশুবলি দেওয়ার প্রথা বহুপুরনো। এমন এক প্রথার পক্ষে ও বিপক্ষে দাঁড়ানো মানুষের সংখ্যাও প্রচুর। বহুপুরনো সেই রীতি এবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শ্রীলঙ্কা সরকার। ভারতের পড়শি দেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের পশু-পাখি বলি দেওয়ার প্রথা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হতে চলেছে। ধর্মীয় আচারের অঙ্গ হিসাবে বহুদিন ধরে চলা পশুবলি প্রথা বন্ধ হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই উঠেছে অনেক প্রশ্ন। হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষের একাংশ বলছে, সরকারের এমন সিদ্ধান্ত তাঁদের ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপের সমান।
আরও পড়ুন- ইলিশের সম্পূর্ণ জিনোম শৃঙ্খল প্রকাশ করলেন বাংলাদেশের ৪ গবেষক
শ্রীলঙ্কা সরকারের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, এই বিষয়ে হিন্দু ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে দেশের মন্ত্রীসভা। বেশিরভাগ উদারপন্থী হিন্দু এই সিদ্ধান্ত সমর্থন করছেন বলেও দাবি করেন তিনি। তবে তিনি এটাও জানান, অনেক ধর্মীয় সংগঠনের তরফে এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করা হয়েছে। সেইসব সংগঠন একজোট হয়ে দাবি তুলেছে, বলিপ্রথা তাদের ধর্ম বিশ্বাসের একটি বহুপুরনো রীতি। প্রাচীনকাল থেকে চলতে থাকা এই রীতি নিয়ে সরকারি হস্তক্ষেপ কোনওমতেই সঙ্গত নয়।
আরও পড়ুন- কুকুরের বদলি হিসাবে সেনায় যোগ দিল একদল বেজি
দেব-দেবীদের প্রসন্ন বা সন্তুষ্ট করার জন্য রীতি মেনে ছাগল, মহিষ, মুরগি বা অন্যান্য প্রাণী বলি দেওয়ার রীতি বহুদিন ধরে চলে আসছে শ্রীলঙ্কায়। এদেশেও বহুকাল ধরে চলছে এমন প্রথা। তবে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সিংহভাগ দীর্ঘদিন ধরে এই প্রথাকে নিষ্ঠুর ও বর্বর বলে আপত্তি জানাচ্ছেন। মুসলিমদের কোরবানি নিয়েও একাধিকবার প্রশ্ন তুলেছেন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা। বলি প্রথা বা কোরবানি নিয়ে সময়ে সময়ে সোচ্চার হয়েছে বিভিন্নি পশুপ্রেমী সংস্থাও। কিন্তু লাভের লাভ কিছু হয়নি। শ্রীলঙ্কা সরকারের এমন সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত বলবত্ থাকে কি না সেটাই দেখার।
শ্রীলঙ্কার এই নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় অবশ্য মুসলিম সম্প্রদায়ের কোরবানি পড়ছে না। প্রসঙ্গত, জনসংখ্যার দিক থেকে শ্রীলঙ্কায় মুসলমানদের অবস্থান তৃতীয়।