ভারতের যায়-আসে না, এমন ৮টি পদক্ষেপ করে মুখ বাঁচানোর চেষ্টা কোণঠাসা ইমরানের
বুধবার কাশ্মীরের পরিস্থিতির পর্যালোচনা করতে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির সঙ্গে বৈঠকে বসেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
নিজস্ব প্রতিবেদন: জম্মু-কাশ্মীরে মোদী সরকার ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপের পর অস্বস্তিতে পড়েছেন ইমরান খান। তাঁর নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে দেশেই। এমতাবস্থায় মুখ বাঁচাতে লোক দেখানো কয়েকটি পদক্ষেপ করতেই হতো পাক প্রধানমন্ত্রীকে। তেমনটাই করেছেন ইমরান। বুধবার জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির সঙ্গে বৈঠকে ইসলামাবাদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও কমানো হবে। ভারতের স্বাধীনতা দিবস অর্থাৎ ১৫ অগস্ট কালো দিন পালন করবে পাকিস্তান।
বুধবার কাশ্মীরের পরিস্থিতির পর্যালোচনা করতে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির সঙ্গে বৈঠকে বসেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ওই বৈঠকের পর পাক প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে পদক্ষেপের কথা।
১. ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক কমানো হবে।
২. ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সমঝোতাগুলি নিয়ে হবে পর্যালোচনা।
৩. ভারতের সঙ্গে সমস্ত রকম বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাতিল।
৪.জম্মু-কাশ্মীরের বিষয়টি রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে জানাবে পাকিস্তান।
৫. ১৪ অগস্ট স্বাধীনতা পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস। ওই দিনটি কাশ্মীরিদের সমর্পণ করবে পাকিস্তান।
৬. পরের দিন ভারতের স্বাধীনতা দিবস কালো দিন হিসেবে পালিত হবে পাকিস্তানে।
৭. বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রে থাকা পাক কূটনীতিবিদদের কাশ্মীরে ভারতের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলতে হবে।
৮. সেনাকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
পাকিস্তানের ৭টি সিদ্ধান্তেই ভারতের কোনও যায়-আসে না। উরি হামলার পর থেকে পাকিস্তানের সঙ্গে এমনিতেই আলোচনা বন্ধ করে দিয়েছে মোদী সরকার। পুলওয়ামার পর বালাকোটে ভারতের এয়ারস্ট্রাইকের পরও আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন ইমরান। কিন্তু কানে দেয়নি ভারত। এমনকি ভারতীয় যুদ্ধবিমান চালক অভিনন্দনকেও নিঃশর্তে ছাড়িয়ে আনতে সমর্থ হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। তখন ইসলামাবাদকে স্পষ্ট জানানো হয়েছিল, অভিনন্দনকে অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে, কোনওরকম শর্ত মানা হবে না। আর পাকিস্তান কালো দিন না সাদা দিন পালন করল, তাতে ভারতের কোনও সমস্যা হবে না। দুনিয়াজুড়ে পাকিস্তান বলতে সন্ত্রাসীদের আখড়া। তাদের কথা শুনবেই বা কে! আর কাশ্মীর ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়। সেটা নিয়ে রাষ্ট্রসঙ্ঘের হস্তক্ষেপ মানবে না নয়াদিল্লি। আর নয়াদিল্লির মনোভাব ভালোমতোই জানে রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদ।
কিন্তু, এত সব জানার পরও কেন ইমরানের এমন সিদ্ধান্ত?
ইমরান খানের জমানাতেই বালাকোটে এয়ারস্ট্রাইক করেছে ভারতীয় বায়ুসেনা। এরপর অভিনন্দন বর্তমানকেও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা করতে বাধ্য হন ইমরান খান। এবার কাশ্মীর থেকে ৩৭০ অনুচ্ছেদও প্রত্যাহার করে নিয়েছে ভারত সরকার। এর মধ্যে আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইমরানের ন্যূনতম সম্মানও জোটেনি। সেনার বাজেট কমিয়ে সামাজিকখাতে খরচ করছেন ইমরান। সে কারণে 'হাতের পুতুল' প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে নারাজ পাক সেনা। ইমরানের জয়ে পাক সেনার ভূমিকা ছিল। ফলে ঘরে-বাইরে সংকটে তাঁর নেতৃত্ব। এমতাবস্থায় তাঁকে একটা যুদ্ধ-যুদ্ধ খেলা জমাতেই হতো বলে মত কূটনৈতিক মহলের একাংশের।
আরও পড়ুন- লোকসভায় 'যুগপুরুষ' নরেন্দ্র মোদীকে ভারতরত্ন দেওয়ার দাবি করলেন বিজেপি সাংসদ