পাইলট - এটিসি ভুল বোঝাবুঝিতেই দুর্ঘটনাগ্রস্ত ইউএস বাংলা-র বিমান?
টাওয়ারের সঙ্গে পাইলটের কথপোকথন শুনলে বোঝা যায়, টাওয়ারের বার বার নির্দেশ বদল ও সেই নির্দেশ বুঝতে পাইলটদের সমস্যাতেই মঙ্গলবার দুপুরে দুর্ঘটনায় পড়ে ইউএস বাংলার উড়ান বিএস ২১১। কাঠমান্ডুর ত্রিভূবন আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্টের রানওয়েটি উত্তর-দক্ষিণ বরাবর। এর দক্ষিণ দিকের মুখটিকে চিহ্নিত করা হয় ০২ সংখ্যা দিকে। উত্তর দিকের মুখটিকে বলা হয় ২০।
ওয়েব ডেস্ক: এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল ও পাইলটের ভুল বোঝাবুঝিতেই কাঠমান্ডু বিমানবন্দরে দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়েছে ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের বোম্বাইডার বিমানটি। প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে এমনই তথ্য।
ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে পাইলট ও এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের কথপোকথনের অংশবিশেষ। তাতে স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া বা বোঝা, কোনও ক্ষেত্রে সমস্যাতেই ভুল জায়গায় অবতরণ করে বিমানটি। এর পরই তাতে আগুন ধরে যায়। দুর্ঘটনায় এখনো পর্যন্ত ৪৯ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে।
টাওয়ারের সঙ্গে পাইলটের কথপোকথন শুনলে বোঝা যায়, টাওয়ারের বার বার নির্দেশ বদল ও সেই নির্দেশ বুঝতে পাইলটদের সমস্যাতেই মঙ্গলবার দুপুরে দুর্ঘটনায় পড়ে ইউএস বাংলার উড়ান বিএস ২১১। কাঠমান্ডুর ত্রিভূবন আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্টের রানওয়েটি উত্তর-দক্ষিণ বরাবর। এর দক্ষিণ দিকের মুখটিকে চিহ্নিত করা হয় ০২ সংখ্যা দিকে। উত্তর দিকের মুখটিকে বলা হয় ২০।
আরও পড়ুন - রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর জন্য তৈরি হচ্ছে অত্যাধুনিক নতুন বিমান, আকাশে উড়বে ২০২০-তে
কথপোকথনের রেকর্ডিংয়ের প্রকাশিত চার মিনিটের অংশ অনুযায়ী টাওয়ার থেকে প্রথমে বিএস ২১১-কে ২০ রানওয়ের দিকে না এগোনোর নির্দেশ দেওয়া হয়। জানানো হয় ওই দিক থেকে আরেকটি বিমান অবতরণ করছে। বিমান ডান দিকে ঘুরতে শুরু করলে টাওয়ারের তরফে পাইলটের কাছে জানতে চাওয়া হয়, তিনি কোন দিক থেকে নামতে চান। পাইলট ২০ দিক থেকে অবতরণের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এর পর টাওয়ারের তরফে পাইলটকে প্রশ্ন করা হয়, তিনি রানওয়ে দেখতে পাচ্ছেন কি না। জবাবে পাইলট জানান, 'না'। এর পর বিমানকে ডান দিকে ঘোরানোর নির্দেশ দেয় টাওয়ার।
এর পর পাইলট জানান, তিনি রানওয়ে দেখতে পাচ্ছেন। এই সময় পাইলট হঠাত্ জানান তিনি রানওয়ে ০২-তে নামতে চলেছেন। অর্থাত্ আগের অভিমুখ থেকে বিপরীত দিক থেকে অবতরণের কথা জানান তিনি। টাওয়ার থাকে সেদিক থেকে অবতরণের অনুমতি দেয়। ককপিট থেকে শেষ বার্তায় টাওয়ারকে প্রশ্ন করা হয়, আমরা কি অবতরণ করতে পারি? শেষ মুহূর্তে বিপদ বুঝে পাইলটদের সাবধান করতে চিত্কার করে ওঠেন টাওয়ারে থাকা এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের কর্মী। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। সঙ্গে সঙ্গে টাওয়ার থেকে বপদঘন্টি বাজানো হয়।
ইতিমধ্যে ঘটনার তদন্তে নেমেছে নেপাল প্রশাসন। কার ভুলে দুর্ঘটনা, তা নিয়ে বিমানসংস্থা ও নেপাল এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের মধ্যে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। ইউএস বাংলা বিমানসংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, বিমানের পাইলট ক্যাপ্টেন আবিদ সুলতান বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত পাইলট। তাঁর ৫,০০০ বেশি ঘণ্টা উড়ানের অভিজ্ঞতা রয়েছে। শুধুমাত্র বোম্বাইডার ড্যাস ৮ কিউ৪০০ বিমানেই তাঁর ১,৭০০ ঘণ্টার বেশি উড়ানের অভিজ্ঞতা রয়েছে। এহেন অভিজ্ঞ পাইলট কী করে এমন শিশুসুলভ ভুল করতে পারেন বোধগম্য হয় না।