ওয়েব ডেস্ক: জেট গতিতে বাড়ছে দেশের জনসংখ্যা। রুখতে জন্ম নিয়ন্ত্রণের হাজারো বিজ্ঞাপন চালু করেছে কেন্দ্র। একইহাল ডেনমার্ক সরকারেরও। ওদেশের মিডিয়াতেও এধরণের বিজ্ঞাপনের রমরমা। তবে, জন্ম নিয়ন্ত্রণের নয়। উল্টে ডেনমার্ক সরকার বিজ্ঞাপন দিচ্ছে জন্মের হার বাড়াতে। কী রকম? চলুন দেখে যাক।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

কম বেশি ন মাসের গর্ভধারণের পর সন্তানের মুখ দেখেন মা। আচ্ছা, কোনও বিজ্ঞাপন সাফল্যের মুখ দেখতেও কী ন মাস সময় লাগে? ভাবছেন এ আবার আবার কোন হেঁয়ালি? না হেঁয়ালি নয়। এমনটাই ঘটে গেছে ডেনমার্কে।


ডেনমার্কে বেবি বুম



বিজ্ঞাপনের গুনে কম জনসংখ্যার দেশ ডেনমার্কে এখন বেবি বুম। পলিটিকেনের রিপোর্ট বলছে, ২০১৬-র গ্রীষ্মে ডেনমার্কে ১৬ হাজার ২০০ শিশু জন্ম নেবে। গতবছরের তুলনায় সংখ্যাটা ১ হাজার ২০০ বেশি 


ভাবছেন তো মজা করছি। না, একেবারে না। তাহলে খোলসা করেই বলা যাক। সেক্সের স্বর্গরাজ্য বলে পরিচিতি রয়েছে কোপেনহেগেনের। অথচ, খাও পিও জিয়ো-র স্লোগানে বুঁদ ডেনমার্কের নতুন প্রজন্ম সেক্সে যতটা উত্সাহী, সন্তান ধারণ বা প্রতিপালনে ততটা নয়। পরিসংখ্যান বলছে, ডেনমার্কে প্রথম মা হওয়ার গড় বয়স ২৯.১ বছর। এত দেরিতে সন্তান ধারণ তৈরি করছে সমস্যা। সন্তান উত্পাদনের ক্ষমতা কমছে। পাল্লা দিয়ে কমছে শিশু জন্মের হার।  মাথায় হাত ড্যানিস সরকারের।  সরকারি সুযোগ সুবিধা দিয়েও মোকাবিলা করা যাচ্ছেনা পরিস্থিতি। পরিসংখ্যানের দিকে নজর রাখলেই স্পষ্ট হয়ে যাবে গোটা ব্যাপারটা। 


এই মুহূর্তে ১০ বছরের কম বয়সী ড্যানিশ শিশুদের ১০ শতাংশই ফার্টিলিটি ট্রিটমেন্টের পর জন্মেছে। এখানেই শেষ নয়। আরও চমকে দেওয়ার মতো তথ্য দিচ্ছে সেদেশে ফার্টিলিটি নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংস্থা। সন্তান প্রতিপালনের মতো গুরুতর দায়িত্ব নিতে একেবারেই নাকি গররাজি ড্যানিশরা। তাই আগ্রহ নেই সন্তান ধারণেও। প্রাপ্তবয়স ড্যানিশ পুরুষদের ২০%  বাবা হন নি। মা হননি মোট প্রাপ্তবয়স্ক মহিলার ১৪%।



ছবিটা রাতারাতি বদলে গেছে এবছর গ্রীষ্মে। জনসংকোচের দেশ ডেনমার্কে এবার বেবি বুম। সৌজন্যে নাকি বিজ্ঞাপন। অন্তত তেমনটাই দাবি সেদেশের বিভিন্ন সংস্থার।


আশার আলো বিজ্ঞাপন?


আম ডেনদের সেক্স ও সন্তানধারণে উত্সাহ দিতে গত বছর সেপ্টেম্বরে স্পাইসি সেক্স অ্যাড এয়ার করে SPIES ট্রাভেল নামে একটি সংস্থা। ক্যাম্পেনের নাম দেওয়া হয়  DO IT FOR MOM। বিজ্ঞাপনে এয়ার হতেই সাড়া পড়ে যায়। পজিটিভ রেসপন্স দেখে এগিয়ে আসে ডেনমার্ক সরকারও। গোটা কোপেনগেহেন শহর মুড়ে ফেলা হয় হোর্ডিংয়ে। যার মূল বক্তব্য  সন্তান ধারণ ক্ষমতা চিরদিনের জন্য নয়। তাই সময় থাকতে মেক মোস্ট আউট অফ ইট। হোর্ডিংয়ের পর পালা টেলিভিশন অ্যাডের। জেন ওয়াই ডেনদের সন্তানধারণে উত্সাহ দিতে শুরু হয় টেলিভিশন শো। নাম স্ক্রিউ ফর ডেনমার্ক।


হাতে নাতে ফল


বিজ্ঞাপন প্লাস শো। দুইয়ের যোগফলে বাজিমাত। কয়েকমাসের মধ্যে ডেনমার্কে শিশু জন্মের হারে বৃদ্ধি। পরিমান এতটাই যে উচ্ছ্বসিত সেদেশের সরকারও। আরও একবার নজর রাখা যাক পরিসংখ্যানের দিকে।


২০১৬-র গ্রীষ্মে  শিশু জন্মের হার গতবছরের তুলনায় ১৪% বেড়েছে। গত ছ বছরে এই প্রথম বার্ষিক শিশু জন্মের হার ৬০ হাজার  হতে চলেছে। তবে, শুধুই বিজ্ঞাপন নয়। শিশু জন্মের হার বাড়াতে স্কুলে সেক্স এডুকেশনে ওপরও জোর দেওয়া হচ্ছে। তার সঙ্গে বাবা-মায়ের কাছে আবেদন, সরকারি স্কুল বাঁচাতে দয়া করে  শিশুর জন্ম দিন। ১২২কোটির দেশে বসে সোনার পাথর বাটি মনে হচ্ছে তো?