সব্যসাচী বাগচী 


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

গার্ড মুলার-অলিভার কানদের দেশেও দুর্গাপুজো! হ্যাঁ ঠিকই পড়ছেন। লন্ডন, দুবাই, ফিলাডেলফিয়া, ডারবান, ব্রিসবেন কিংবা টোকিয়ো যেখানে বাঙালির বাস, সেখানেই বিরাজ করেন উমা। তেমনই জার্মানিতেও ধুমধামের সঙ্গে পালন হচ্ছে দুর্গোৎসব। ওঁদের দুটি শরৎ পেরিয়ে গিয়েছে। তিন বছরে পা দিল এরলাঙ্গেন এলাকার 'দুর্গাভিলে'। একেবারে সাবেকি ধাঁচের প্রতিমা গড়ে চলে মা দুর্গার আলোচনা। মাত্র তিনটি বঙ্গ পরিবার ও কয়েক জন বাঙালি ছাত্রছাত্রীরা একেবারে বিপ্লব ঘটিয়ে দিয়েছেন। গর্বিত করছেন বঙ্গ সমাজকে। শুভানুধ্যায়ীদের তালিকা ইতিমধ্যেই দুই হাজার ছাড়িয়ে গিয়েছে। 


বাঙালির প্রগতির জয় রথ যেমন এগিয়েছে, ঠিক তেমন করেই এগিয়ে যাচ্ছে এরলাঙ্গেন এলাকার 'দুর্গাভিলে'। বয়স মাত্র তিন। কোলের বাচ্চার মতো একটু একটু করে বড় হচ্ছে ওঁদের স্বপ্ন। কারণ ওঁদের স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত করতে এগিয়ে এসেছেন এলাকার অসংখ্য স্থানীয় মানুষ। এরলাঙ্গেনের সব জায়গা থেকেই লোক আসে। তবে এ বার উদ্যম একটু বেশির দিকে। ইন্ডিয়ান কনসাল জেনেরাল এই পুজোকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। পরবর্তীকালে যুক্ত হয়েছেন এরলাঙ্গেনের মেয়র। 



কলকাতার মানুষদের কাছে বাগবাজার সার্বজনীন কিংবা শোভাবাজার রাজবাড়ির প্রতিমা আলাদা গুরুত্ব বহন করে। মায়ের মুখ ও একচালা ঠাকুর দেখতে কাতারে কাতারে মানুষ জড়ো হন। মায়ের অপরূপ মুখ ও শোভা দেখে কর্পূরের মতো উবে যায় সব ক্লান্তি। 'দুর্গাভিলে'-তে এসে আপনি ঠিক তেমন মায়ের মুখ ও সজ্জা দেখতে পারবেন। কারণ এখানেও যে গত দু'বারের মতো সাবেকি প্রতিমা তৈরি হচ্ছে। সঙ্গে ডাকের সাজ। এবং মা দুর্গা ছাড়া কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী, স্বরস্বতি সব মাটি দিয়েই তৈরি হচ্ছে। প্রতিমা গড়ার দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে সামলাচ্ছেন দীপঙ্কর সরকার। 


পড়ুন, বাঙালির প্রাণের উৎসবে আমার 'e' উৎসব। Zee ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল শারদসংখ্যা


দীপঙ্কর সরকার বলছিলেন, 'আসলে জার্মানিতে এক টুকরো কলকাতা কিংবা বাংলাকে তুলে আনাই আমাদের লক্ষ্য। বিভিন্ন দেশে বাঙালিরা পুজো করার জন্য কুমোরটুলি থেকে মা দুর্গা উড়িয়ে আনেন। তবে আমরা কিন্তু আলাদা নজির গড়ার জন্য নিজেরাই মাটির মূর্তি গড়ছি। স্কুল-কলেজে পড়ার সময় ঠাকুর বানাতাম। অনেক বছর পর ফের ঠাকুর বানিয়ে যেন নিজের ছোটবেলায় ফিরে গেলাম। কলকাতা থেকে সাজগোজ তৈরি করেছি। রথযাত্রার দিন কাঠামো পুজোর পর মহালয়ার দিন মায়ের চক্ষু দান করেছি। এখন আমাদের প্রস্তুতি জোরদার এগোচ্ছে। এ বার যেহেতু আমাদের থিম সাবেকি, তাই গোটা প্যান্ডেলে পেপার কাটিং-এর সাহায্যে ৮০টি মায়ের মুখ তৈরি করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে ব্যস্ততা একেবারে তুঙ্গে।'



পুজোর পাশাপাশি সন্ধ্যার জন্য রয়েছে মনোরম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। স্থানীয় প্রস্তুতিও ভালই চলছে। এতদিনের পুজোর ঐতিহ্য বজায় রাখতে সচেষ্ট সবাই। দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন যাতে ভোগ, অঞ্জলি, আরতি, সব যেন নিখুঁত হয়। শেষে তাড়াহুড়ো করে যেন ভণ্ডুল না হয়ে যায় কিছু। এই পুজো নিয়ে মজার গল্পও কম নেই। রান্নাঘরে রাঁধুনিরা বকা খেতেন, ‘মুখ না চালিয়ে হাত চালান’ শুনে। মায়ের ভোগ ছাড়া, খিচুড়ি, লাবড়া, পোলাও, আলুর দম, লুচি, ছোলার দামা, চাটনি, পায়েস, মিষ্টি।



তবে শুধুই হুল্লোড় নয়, সমাজসেবাতেও ব্রতী এই সংস্থা। বিস্তৃত সেই কর্মযজ্ঞ। টলমল করে হেঁটে চলা নানা ঘাতপ্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে নিজের পায়ের তলায় শক্ত জমি করে নিয়েছেন এনারা। এ বার শুধু এগিয়ে যাওয়ার পালা। 


 



(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)