নিজস্ব প্রতিবেদন: সীমান্ত রেখা সংলগ্ন বাদমে, টসোরোনার মতো বিতর্কিত এলাকার দখল নিতে ১৯৯৮ সাল থেকে টানা দু’বছর গৃহযুদ্ধ চলে ইথিওপিয়া এবং এরিট্রিয়ার। এরপরও ছায়া যুদ্ধে বারংবার পরস্পরে জড়িয়েছে আফ্রিকার হত দরিদ্র দুই দেশ। কমপক্ষে ৩ লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়। দুই দশক ধরে চলা ইথিওপিয়া এবং এরিট্রিয়ার ‘যুদ্ধ-যুদ্ধ খেলার’ সমাপ্তি যাঁর হাত ধরে হয়, আজ তাঁকেই ‘শান্তির দূত’ হিসাবে নোবেল দিল নোবেল কমিটি। তিনি ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যাবি আহমেদ আলি। মাত্র ৪৩ বছর বয়সেই এই সম্মানে ভূষিত হলেন তিনি।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING


এক বছর হয়েছে ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন অ্যাবি আহমেদ আলি। গৃহযুদ্ধে ‘ক্ষতবিক্ষত’ ইথিওপিয়ার মূল সমস্যাগুলির সমাধানে সবচেয়ে বেশি জোর দিয়েছেন অ্যাবি। প্রতিবেশি দেশের নাগরিকদের জেল থেকে মুক্তি দেওয়া, জঙ্গি সংগঠনগুলিকে মূল স্রোতে ফেরানো এবং রাষ্ট্রের দমনপীড়নের জন্য অকপটে স্বীকার বিশ্বের কাছে অ্যাবির ইতিবাচক এই ভাবমূর্তি অনেকখানি বাড়িয়ে তোলে। গৃহযুদ্ধের আঁচ পেরিয়ে ইথিওপিয়ার অর্থনীতি মজবুত করার লক্ষ্যে এখন মন দিয়েছেন তিনি। অ্যাবির এক বন্ধু পেশায় ব্যবসায়ী নোবেল পুরস্কারের খবর জেনে বলেন, “জানতাম ও পাবে। অ্যাবিই পারবে ইথিওপিয়াকে পালটে দিতে।”



বাবা মুসলিম, মা খ্রিস্টান- বেশাশা শহরে গরিব পরিবারে জন্ম অ্যাবি আহমেদ আলির। ঘরে না ছিল বিদ্যুত, পানীয় জলের ব্যবস্থা। তার মধ্যেই অ্যাবির শৈশব, কৈশোর অতিবাহিত হয়েছে।   কত রাত ঘরের মেঝেতে শুয়ে কাটিয়েছেন অ্যাবি। এক রেডিয়ো সাক্ষাত্কারে এ সব অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গিয়ে অ্যাবি বলেন, “গ্র্যাজুয়েশন পর্যন্তও ঘরে বিদ্যুত ছিল না। পাকা রাস্তার স্বপ্ন কখনও দেখিনি।” কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষা নিয়ে অংশগ্রহণ করেন ইথিওপিয়ান ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্সে। ১৯৯১ সালে তাঁর রাজনীতিতে প্রবেশ। ওরমো ডেমোক্র্যাটিক পার্টির চেয়ারম্যান হয়ে ওঠা তারপর নির্বাচনে জিতে প্রধানমন্ত্রী।


১৯৯৩ সালে ইথিওপিয়া থেকে বেরিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে পরিচিতি পায় এরিট্রিয়া। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ভারত-পাকিস্তানের মতোই সীমান্ত সমস্যা নিয়ে চাপানউতর লেগে ছিল দুই রাষ্ট্রের। বিতর্কিত এলাকা বাদমে, টসোরোনার দখল নিতে গৃহযুদ্ধে জড়ায় দুই দেশ। ওই যুদ্ধে ইথিওপিয়ার পাশে রাশিয়া, চিনের মতো দেশের সামরিক সাহায্য পেলেও জয়লাভ করে এরিট্রিয়াই। কিন্তু দুই দেশের তিক্ততা মেটাতে এগিয়ে আসেন প্রধানমন্ত্রী অ্যাবি আহমেদ আলি। ২০১৮ সালে জুলাইয়ে ‘শান্তির চুক্তিতে’ স্বাক্ষর করে দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধান। এভাবে প্রতিবেশিকে বুকে জড়িয়ে নোবেল আদায় করে নিলেন ইথিওপিয়ার প্রধানমন্ত্রী।