জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: অল্প-স্বল্প সময় আগে নয়, বিলুপ্ত হয়ে গেল ৪০ হাজার বছর। অস্ট্রেলিয়ায় ৪০ হাজার বছর আগে থান্ডার বার্ড নামের বিশালাকার এক পাখি বিলুপ্তি হয়ে গিয়েছিল। যদিও এই পাখির সমসাময়িক পাখি এমু কিন্তু নানা বাধা-বিপত্তি পেরিয়েও টিকে থাকল। থান্ডার বার্ড বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার জন্য এত দিন দায়ী করা হত পাখিটির হাড়ের রোগ ও মানুষের উৎপাত। তবে নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে অন্য তথ্য। এখন বলা হচ্ছে, পাখিটি হারিয়ে যাওয়ার মূল কারণ জলবায়ুগত পরিবর্তন। 'গার্ডিয়ান' সংবাদপত্রে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এই বিষয়টি জানা গেল। থান্ডার বার্ডের বৈজ্ঞানিক নাম 'ড্রোমোরনিথিড'। অস্ট্রেলিয়ার ফ্লিনডারস রেঞ্জের উত্তরাঞ্চলে ও অ্যালিস স্প্রিংস শহরের কাছে খোঁড়াখুঁড়ি করে পাখিটির ফসিলের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। ওই জীবাশ্মের নমুনা বিশ্লেষণ করে পাখিটির প্রজনন সম্পর্কে নতুন ধারণা পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

ওই জীবাশ্মগুলি নিয়ে গবেষণা করে দেখা গিয়েছে, হাজার বছর ধরে থান্ডার বার্ডের আকারে ও প্রজননচক্রে পরিবর্তন এসেছিল। তা সত্ত্বেও বদলে যাওয়া জলবায়ুর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারেনি তারা। দক্ষিণ আফ্রিকার ইউনিভার্সিটি অব কেপটাউনের অধ্যাপক অনুসূয়া চিনসামি-তুরান বলেন, অসাধারণ এই পাখিগুলিকে তখনই জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়েছিল। কারণ, সেই সময়ে অস্ট্রেলিয়ার আবহাওয়া ক্রমশ আরও উষ্ণ ও শুষ্ক হয়ে উঠছিল।


আরও পড়ুন: Diamond Rain on Planets: এই হীরকরাজার দেশে হিরে ঝরে আকাশ থেকে! শুধু কুড়িয়ে নেওয়ার অপেক্ষা...


থান্ডার বার্ড কেন অস্ট্রেলিয়ার এমু পাখির মতো মানুষের সহাবস্থানে টিকে থাকতে পারল না? 


এর উত্তর লুকিয়ে আছে থান্ডার বার্ডের বড় হওয়া এবং ক্রমে প্রজননক্ষম হয়ে ওঠার জন্য প্রয়োজনীয় সময়কালের মধ্যে। ড্রোমোরনিথিড পরিবারের আদি ও সবচেয়ে বড় আকৃতির প্রজাতিটি ছিল ড্রোমোরনিস স্টিরটোনি। ৭০ লাখ বছর আগে সেগুলি পৃথিবীর বুকে চরে বেড়াত। এর উচ্চতা ছিল ৩ মিটার, ওজন ৬০০ কেজি। পুরোপুরি বেড়ে উঠতে ও প্রজননের জন্য সক্ষম হতে  ১৫ বছর পর্যন্ত সময় লাগত এর। ড্রোমোরনিথিড পরিবারের সবচেয়ে শেষ ও ছোট প্রজাতিটি হল জেনিওরনিস নিউটনি। পাখিটি প্লেস্টোসিন যুগের শেষ ভাগে দেখা যেত। তখন জলবায়ু ছিল খুবই শুষ্ক। ঋতুগুলির চেনা আবহাওয়াও বদলে যাচ্ছিল। যখন-তখন দেখা দিত খরার মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়। জেনিওরনিস নিউটনির ওজন ছিল ২৪০ কেজি, এমুর চেয়ে ছ'গুণ বেশি। এ প্রজাতিটি ড্রোমোরনিস স্টিরটোনির তুলনায় দ্রুত প্রাপ্তবয়স্ক হত। প্রজননক্ষম হতে এর সময় লাগত ১-২ বছর (যদিও এই সময়কাল বর্তমান সময়ের পাখিগুলির প্রজননক্ষম হওয়ার সময়ের চেয়ে ঢের বেশি)।


থান্ডার বার্ডের জীবাশ্ম নিয়ে অধ্যাপক অনুসূয়া চিনসামির সঙ্গে গবেষণা করেছেন অস্ট্রেলিয়ার ফ্লিনডারস ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ট্রেভর ওরদি। তিনি বলেন, বিলুপ্ত হওয়ার বহু আগে এমুর সঙ্গেই বসবাস করত থান্ডার বার্ড। পাখিটির জেনিওরনিস নিউটনির প্রজাতি আগের প্রজাতিগুলির তুলনায় ভালোভাবে পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতেও পেরেছিল এবং ২০ লাখ বছর টিকে ছিল। যদিও এগুলির প্রজননক্ষমতা ও বংশবিস্তারের গতি এমুর চেয়ে কম ছিল। তিনি আরও বলেন, প্রায় ৫০ হাজার বছর আগে এমু পাখি অস্ট্রেলিয়ায় মানুষের মুখোমুখি হয়। প্রজননের সক্ষমতার কারণেই পাখিটি টিকে গেল। কিন্তু এর ১০ হাজার বছরের মধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেল থান্ডার বার্ড!


(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)