`ধর্মের জিগির` তুলে বাংলাদেশের রংপুরে হিন্দুদের উপর হামলা, ভষ্মীভূত ঘরবাড়ি
বাংলাদেশে ফের হিন্দুদের উপরে হামলা
নিজস্ব প্রতিবেদন: বাংলাদেশে ফের সাম্রদায়িক হিংসার শিকার হলেন সংখ্যালঘু হিন্দুরা। ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননার পোস্ট করার অভিযোগে রংপুরের সদর উপজেলায় হিন্দুদের ঘরবাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় সেখানকার সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়ের উন্মত্ত জনতা। ঘটনায় ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা ৩০। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন পুলিস কর্মীরাও।
ঢাকা ট্রিবিউনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নারায়ঞ্জের টিটু রায় (আদি নিবাস ঠাকুরবাড়ি গ্রাম) নামের এক ব্যক্তি ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননাকর পোস্ট করেছিলেন বলে অভিযোগ। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই টিটুকে গ্রেফতারির দাবিতে রংপুরে মিছিল হয়। কিন্তু ওই ফেসবুক অ্যাকাউন্টটি কি আসল? বিবিসি বাংলা-কে ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক বলেন, ''তদন্তের সুযোগই দেওয়া হয়নি। আমরা মামলা নিয়েছি। তাকে ধরা গেলে বিষয়টি পরিস্কার হবে।''
উল্লেখ্য, ভুয়ো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্ট করে সংখ্যালঘুদের উপরে হামলা, বাংলাদেশে সাম্প্রতিককালে অনেকটাই বেড়েছে। ২০১২ সালে কক্সবাজারের রামুকে বৌদ্ধপল্লিতে একই অভিযোগে হামলা চালানো হয়েছিল। গতবছর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরেও একই কায়দায় হিন্দুদের উপরে হামলা চালিয়েছিল উন্মত্ত জনতা।
রংপুরে আক্রান্ত হিন্দুদের অভিযোগ, পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে যাচ্ছে, তা আঁচ করেও আগাম ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। শুক্রবার প্রায় কুড়ি হাজার জনতা হামলা চালায় রংপুরে হিন্দু মহল্লায়। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় ঘরবাড়ি।
ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে পুলিস রবার বুলেট ব্যবহার করে। পুলিসের গুলিতে নিহত হন এক ব্যক্তি। আহত হন বেশ কয়েকজন। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুলিসকে লক্ষ্য করেও পাল্টা হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আক্রান্ত সুধীর রায় বিডি-২৪-কে জানিয়েছেন, কয়েক জন এসে তাঁর ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। সবকিছু হারিয়ে তিনি পথে বসেছেন।
স্থানীয় ওসি জিন্নাত আলি জানান, ধর্মীয় অবমাননার অভিযোগ তুলে ২৯ অক্টোবর থানায় হামলা করেছিল দুষ্কৃতীরা। পরিকল্পিতভাবেই হিন্দুদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপরে চোরাগোপ্তা হামলা বেড়ে গিয়েছে। পাশাপাশি সংখ্যালঘু এলাকায় পরিকল্পিতভাবেও হামলা চালানো হচ্ছে। বহুক্ষেত্রেই সংখ্যালঘুদের এলাকাছাড়া করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে।
আরও পড়ুন, চাপের মুখে পদত্যাগ করলেন বাংলাদেশের প্রথম হিন্দু প্রধান বিচারপতি