সৌমিত্র সেন


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

হ্যাঁ, এ-পোড়া পুরুষবিশ্বে পুরুষদের জন্যও আবার একটি দিন ধার্য হয়েছে! 


একটু লিঙ্গবৈষম্যমূলক সুর শোনা যাচ্ছে? না, মোটেই তেমন নয় বিষয়টি। আসলে বিশ্ব জুড়ে তো মনে করা হয় পুরুষতান্ত্রিক সমাজে অবহেলিত-নিপীড়িত নারীরাই। ফলে নারীদিবস পালনের যদি-বা কিছু তাৎপর্য থেকে থাকে, গিভেন সোশ্যাল কনটেক্সটে পুরুষদিবস পালনের কী সার্থকতা? 


এ বিতর্কে কেউ কেউ পীড়িত পতি পরিষদ টাইপের মঞ্চের কথা মনে করিয়ে দিয়ে হয়তো লড়াইয়ের অন্য জানলা হাট করে খুলে দিতে চাইবেন। হয়তো বলতে চাইবেন-- না, মশায়, পুরুষরাও খুব দুঃখে থাকেন, কষ্টে থাকেন! ওঁরাও কাঁদেন, ব্যথা পান, মুখ লুকান। ওঁদের জন্যও একটু সহানুভূতি রাখুন। বেশ কথা। কিন্তু আদপেই তাল ঠুকে দ্বন্দ্বযুদ্ধে আহ্বানের বিষয়ই নয় এটি।


এ আসলে সভ্য ভদ্র সমাজের প্রথাসিদ্ধ কাঠামোর ভিতরে বৈষম্যহীন উদযাপনের এক মধুর অ্যাপ্রোচ। যেখানে বিচ্ছেদ নয়, মিলন; সংঘাত নয়, সহাবস্থান; প্রতিযোগিতা নয়, সহমর্মিতার স্নিগ্ধ আবহ। যে-আবহে আসলে পুরুষদের জন্য শুভেচ্ছা ও সমব্যথার আবেগ ও অনুভূতি জমাট হয়ে রয়েছে।



আমাদের সমাজজীবনে পুরুষদের সামগ্রিক অবদানকে সম্মান জানানোর লক্ষ্যে এ দিনটির উদযাপন প্রথম শুরু হয় ১৯৯২ সালে। প্রাথমিক ভাবে অবশ্য দিনটি ৭ ফেব্রুয়ারি পালিত হত। ১৯৯৯ সালে বদলে হয় ১৯ নভেম্বর। ভারতে দিনটি ২০০৭ সাল থেকে নিয়মিত পালিত হয়ে আসছে। দিনটির এ বছরের থিম হল-- 'বেটার হেলথ ফর মেন অ্যান্ড বয়েজ'। 'হেলথ' উল্লেখ রয়েছে বটে, তবে, শুধু শরীর নয়, সারা পৃথিবীর পুরুষদের (বালক, কিশোর, তরুণ এবং পুরোদস্তুর পুরুষ নির্বিশেষে) শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার শুভকামনার দিন এটি। যে-প্রার্থনায় সামিল হতে পারেন সকলে। সমাজের সর্বস্তরের মানুষ। 


এই অবসরে মেয়েরা নিশ্চয়ই ঠোঁট টিপে হেসে বলবে না, এবার ছেলেদের দুর্দশার কথা ভেবে কোনও কবি না লিখে ফেলেন-- আমি এক সাধারণ ছেলে, ওগো শরৎবাবু, একটা গল্প লেখো আমার জন্য!


আসলে সমাজের অগ্রগতির জন্য তার দু'টি অংশকেই সুস্থ ও সতেজ থাকতে হবে। পুরুষদিবস আসলে সেই বেসিক ট্রুথকেই মনে করিয়ে দেওয়ার দিন! দিনটি কোনও ভাবেই নারীদিবসের অনুকরণ নয়, প্রতিস্পর্ধী নয়, ব্যঙ্গও নয়! এ এক অঙ্গীকার। সকলে একসঙ্গে ভালো থাকার ও ভালো ভাবার অঙ্গীকার। 


আরও পড়ুন:  বিশ্ব শৌচাগার দিবসে বিশ্ব জুড়ে পরিচ্ছন্নতারই অঙ্গীকার