International Mother Language Day: রক্ত দিয়েই বাংলা ভাষাকে রক্ষা, একুশের ইতিহাসকে আজও কুর্নিশ জানায় বিশ্ব
আজ ভাষা দিবস। যে মায়ের ভাষার অধিকার রক্ষার লড়াই থেকে একটি রাষ্ট্রের জন্ম। সেই লড়াই ভাইয়ের রক্তে রাঙানো অমর ২১। মাতৃভাষা আন্দোলনের ৭১ বছর পূর্ণ হবে আজ। মুক্তিযোদ্ধাদের অক্লান্ত লড়াই ও আত্মত্যাগের পর বাংলাদেশ স্বাধীন হয়, যে দেশের ভিত্তি ছিল বাংলা ভাষা।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: তখনও মৌলানা ভাসানি, বঙ্গবন্ধু মুজিবরের জয়বাংলা ডাকে তেমন করে মাতেনি বাংলাদেশ। তখন বাংলাদেশ- পূর্ব পাকিস্তান। তখন ঊনিশশো বাহান্ন। এরপই সোজা ১৯৭১ সাল। শুধুমাত্র বাংলাভাষার জন্য একটি রাষ্ট্র তৈরি হয়। বাংলাদেশ। একটা ভাষা-একটা মন-একটাই পরিচয় বাঙালি। যে মায়ের ভাষার অধিকার রক্ষার লড়াই থেকে একটি রাষ্ট্রের জন্ম। যে লড়াই ভাইয়ের রক্তে রাঙানো অমর ২১। আজ সেই ভাষা দিবস। যে ভাষাকে বাঁচিয়ে রাখার এই যুদ্ধ আজ বাংলাদেশের কাঁটাতার পেরিয়ে আন্তর্জাতিক তকমা পেয়েছে। ২০১০ সালে এই দিনকে 'আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস'-র (International Mother Language Day) স্বীকৃতি দেয় রাষ্ট্রসংঘ।
আরও পড়ুন, Turkey Earthquake: জনজীবন স্বাভাবিক হওয়ার আগেই ফের কেঁপে উঠল তুস্কের হাতায়, মৃত কমপক্ষে ৩
পশ্চিম পাকিস্তানে প্রধান ভাষা উর্দু, আর পূর্ব পাকিস্তানের হল বাংলা। স্বাধীনতার পর উর্দু ভাষাকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রীয় ভাষা করার জন্য পাকিস্তান সরকার নড়ে চড়ে বসে। কিন্তু পূর্ব পাকিস্তান তা একেবারেই চায় না। শুরু হয় প্রতিবাদ। বাংলাকে রাষ্ট্রীয় ভাষার মর্যাদা দিতে হবে - এই দাবি নিয়েই পূর্ব পাকিস্তানের মাটিতে শুরু হয় ভাষা আন্দোলন। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের অন্তর্গত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও সমাজকর্মীরা পাকিস্তান সরকারের এই ভাষা নীতির ঘোর বিরোধিতা করেন। নিজেদের মাতৃভাষাকে রক্ষা করতে পথে নামেন তাঁরা।
১৯৫২ সালের এই দিনেই রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলার দাবিতে আন্দোলনকারী ছাত্রদের উপরে গুলি চালিয়ে দেয় তৎকালীন পাক সরকারের পুলিস। শহিদ হন সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউররা। সেদিন পাকিস্তানের পুলিস গুলি চালালেও প্রতিবাদ থামানো যায়নি। তাই এই দিনটি ভাষা শহীদ দিবস হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। ওই ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা দুই বাংলাকে। বাংলাদেশের কবি ফজলে লোহানী লিখেছিলেন,শহরে সেদিন মিছিল ছিল।
পৃথিবী সেদিন উল্টো ঘোরেনি, এগিয়ে গেছে।
সবাই শুনলো খুন হয়ে গেছে, খুন হয়ে গেল।
মায়ের দু'চোখের দু'ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়েছে রমনার পথে।
মাতৃভাষা আন্দোলনের ৭১ বছর পূর্ণ হবে আজ। মুক্তিযোদ্ধাদের অক্লান্ত লড়াই ও আত্মত্যাগের পর বাংলাদেশ স্বাধীন হয়, যে দেশের ভিত্তি ছিল বাংলা ভাষা। মঙ্গলবার ২১ ফেব্রুয়ারির সকালে ভাষা শহিদদের স্মরণে বাংলাদেশের রাস্তায় রাস্তায় নেমে প্রভাত ফেরি। গানে গানে ভাষা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান মানুষজন। হাজার হাজার মানুষের গন্তব্য হয় ঢাকার আজিম পুরের কবরস্থান। একুশ ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবস উপলক্ষ্যে আজ বাংলাদেশে সরকারি ছুটির দিন। সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গেই ভাষা শহিদের স্মরণে অর্ধনমিত রাখা হয় জাতীয় পতাকা।