নিজস্ব প্রতিবেদন: মার্কিন বাসীর মন কাড়তে মরিয়া ডোনাল্ড ট্রাম্প। একাধিক কারণে দেশের একাংশ মানুষের কাছে অন্যতম ‘অপছন্দের’ মানুষ হয়ে উঠেছেন। সামনেই নির্বাচন। ঘাড়ে ইম্পিচমেন্টের খাড়া। অভিবাসন নীতি নিয়ে বিরোধীদের কাছে চক্ষুশূল। তাই দেশের মানুষের আস্থা অর্জনে এই মুহূর্তে এমন কিছু একটা করা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু প্রশ্ন, ইরানের রিভলিউশনারি গার্ডের কুদস ফোর্সের কমান্ডার জেনারেল কাসেম সোলেমানিকে হত্যা করে কতটা হাওয়া পরিবর্তনে সক্ষম হলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট! কেনই বা সোলেমানি বধ তাঁর লক্ষ্য ছিল?


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

কার্যত সদর্পেই ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন, তাঁর নির্দেশেই সোলেমানিকে মারা হয়েছে। মার্কিন কূটনীতিক এবং ব্যবসায়ীদের উপর হামলার ছক কষেছিলেন কাসেম সোলেমানি। এমনও কথা তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, দিল্লিতে নাশকতার  ইন্ধন দিয়েছিলেন তিনি। এ কথা সত্য, পশ্চিম এশিয়া ভূ-কূটনীতি পাল্টে দিতে সক্ষম হয়েছিলেন ইরানের সেনা জেনারেল। সেখানে লড়াই করা মার্কিন সেনাদের ঘুম ছুটিয়েছিলেন তিনি। অত্যন্ত কৌশলে ইরাকের কুদস ফোর্স ছায়াযুদ্ধে নাকানি-চোপানি খাওয়ায় মার্কিন ঘাঁটিগুলিকে। নেপথ্যে ছিলেন কাসেম সোলেমানি। লেবানন, সিরিয়া, ইরাক-সহ মধ্যপ্রাচ্যে একাধিক দেশে মার্কিন ঘাঁটির সঙ্গে ছায়াযুদ্ধে সামিল হয়েছে কুদস সেনা। আমেরিকার বিরুদ্ধে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি পোক্ত করতে সক্ষম হয়েছে সে সব জায়গায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে ঠারে ঠারে বুঝিয়ে দিয়েছেন হাসান রৌহানি, তাদেরকে এভাবে দমানো যাবে না।



২০১৮ সালে বারাক ওবামার জমানায় হওয়া ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি ভঙ্গ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপরই আর্থিক নিষেধাজ্ঞা এনে সরাসরি সংঘাতে জড়ায় আমেরিকা। এমনকি ‘মিত্র দেশগুলিকে’ হুঁশিয়ারি দিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়ে দেন, ইরান থেকে তেল কিনলে তার ফল ভাল হবে না। আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে দেওয়ার জুজু দেখাতে শুরু করেন তিনি। ইরানও মধ্যপ্রাচ্যে থাকা মার্কিন ঘাঁটিগুলিকে লক্ষ্য করে নিশানা দাগানো শুরু করে। ছায়াযুদ্ধে অপ্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছিল সোলেমানের নেতৃত্বে কুদস সেনা। সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতে তেলবাহী জাহাজে বোমা, অ্যারমকোয় ড্রোন হামলা, মার্কিন বাহিনী ও ব্যবসায়ীদের উপর ধারাবাহিক হামলায় আমেরিকার কাছে ‘খলনায়ক’ হয়ে উঠেছিলেন তিনি। শেষে ইরাকের বাগদাদে মার্কিন দূতাবাসে হামলা চালানোর পর আমেরিকার সঙ্গে যুদ্ধ যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়।



আরও পড়ুন- মসজিদের মাথায় উড়ল লাল ঝাণ্ডা, আমেরিকার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা ইরানের!


ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সোলেমানি। তাঁর মৃত্যুতে কিছু ব্যাকফুটে ইরান। যে ভাবে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে, বিশ্বের কাছে মানবিকধিকারের প্রশ্ন তুলে ধরেছেন সে দেশের প্রেসিডেন্ট রৌহানি। বিশেষজ্ঞদের মতে, সরাসরি যুদ্ধে না যাওয়ার পথেই হাঁটবে তেহেরান। মার্কিন আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জেরে ইতিমধ্যে সে দেশে মূল্যবৃদ্ধি আকাশ ছুঁয়েছে। বিশ্ববাজারের মন্দার জেরে অর্থনীতিও ধুঁকছে। এমন সময় ইরানের যুদ্ধের ঘোষণা মূর্খের কাজ হবে বলে মনে করছেন কূটনীতিবিদরা।