World Dirtiest Man: ৭০ বছর গায়ে ছোঁয়াননি জল, স্নানের পরই মারা গেলেন বিশ্বের ‘নোংরাতম’ মানুষ!
জলের আর এক নাম জীবন...কিন্তু, আমুর কাছে বোধ হয় জলের নাম মরণই ছিল! স্নান করার পরই মারা গেলেন ‘বিশ্বের সবচেয়ে নোংরা ব্যক্তি’ আমু হাজি। ৯৪ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন ইরানের এই বৃদ্ধ।
পূজা দাস: স্নানকে বরাবরই ভয় পেতেন তিনি। প্রায় অর্ধেক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে এক ফোটাও জল গায়ে লাগাতে দেননি তিনি। ধারণা ছিল, জলের সংস্পর্শে এলেই মৃত্যু হবে তাঁর। সেই ধারণাই এবার সত্য প্রমাণিত হল। স্নান করার পরই মারা গেলেন ‘বিশ্বের সবচেয়ে নোংরা ব্যক্তি’ আমু হাজি। ৯৪ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন ইরানের এই ব্যক্তি। জানা যায়, দক্ষিণ ইরানের দেজগা নামক এক গ্রামেরই বাসিন্দা ছিলেন আমু। গ্রামের মানুষেরা যাতে তাঁকে জোর করে স্নান না করিয়ে দেয় তাই সকলের থেকে আলাদা হয়ে গ্রামের কাছাকাছি এক পরিত্যক্ত গুহাতে বসবাস করতেন তিনি। তবে মাসখানেক আগে জোর করেই তাঁকে স্নান করিয়ে দেয় গ্রামবাসীরা। যে কারণেই ঘটে যায় এই বিপত্তি।
আরও পড়ুন: কানাডায় দীপাবলির অনুষ্ঠানে উত্তেজনা, খালিস্তানি সমর্থক এবং ভারতীয়দের মধ্যে সংঘর্ষ
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, অল্প বয়সে প্রেমে প্রত্যাখাত হওয়ার পর থেকেই স্বাভাবিক জীবন যাপন ছেড়েছিলেন তিনি। এরপর থেকেই স্নান বিষয়টিকে নিজের জীবন থেকে মুছে ফেলেছিলেন এই বৃদ্ধ। এরপরই প্রায় ৭০ বছর এইভাবেই স্নান না করেই কাটিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। ২০১৩ সালে তাঁর এই অদ্ভুত জীবন কাহিনিকে ঘিরে একটি তথ্যচিত্রও তৈরি করা হয়েছিল। যার নাম ‘দ্য স্ট্রেঞ্জ লাইফ অফ আমু হাজি’ (The Strange life of Amu Haji)। এরপর থেকেই তাঁর নানান ভিডিয়ো ভাইরাল হতে থাকে সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে। যেখানে তাঁকে দেখে রীতিমতো আঁতকে উঠেছিল নেটিজেনরা। এক সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন মারফত জানা গিয়েছে, তাঁর খাবার ছিল রাস্তায় পড়ে থাকা পশুপাখির মাংস এবং জলাশয়ের জল। সবচেয়ে প্রিয় খাবার ছিল সজারুর মাংস। অস্বাস্থ্যকর খাবারের পাশাপাশি সিগারেট খাওয়ারও অভ্যাস ছিল এই ইরানি বৃদ্ধার। বেশ কিছুদিন আগেই তাঁর একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছিল। যেখানে একসঙ্গে একাধিক সিগারেট টান দিচ্ছিলেন তিনি।
তবে এর থেকেও অবাক করা এক তথ্য সামনে এসেছে কয়েক বছর আগে। গ্রামবাসীরা জোর করেই একবার ডাক্তার দেখিয়েছিলেন তাঁকে। সেখান থেকেই বেশ কিছু টেস্ট করাতে দেন তিনি। এবং টেস্টের রিপোর্ট থেকে জানা যায়, এতদিন স্নান না করার পরও কোনওরকম গুরুতর রোগ বা কোনও ব্যকটেরিয়াঘটিত রোগ তাঁর শরীরে দানা বাঁধতে পারেনি। যা শুনে একেবারেই অবাক হয়ে জান গোটা গ্রামবাসী। স্নান করার এক মাসের মাথায় তাঁর এই মৃত্যু প্রশ্ন তুলে দিল গোটা দেশবাসীর কাছে। স্থানীয়রা হয়তো ভাবছেন, তাঁদের কাছে জলের আর এক নাম জীবন...কিন্তু, আমুর কাছে বোধ হয় জলের নাম মরণই ছিল!