Bangladesh: ক্রমশ একা হয়ে পড়ছেন ইউনূস! বদলের বাংলাদেশে তাঁর উপর আস্থা ক্রমশ কমছে...
Bangladesh: সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন নিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠন হয়ে গিয়েছে। কিন্তু নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো প্রস্তুতিই দেখছি না।
জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: ক্রমশ কি একা হয়ে পড়ছেন ইউনূস? অন্তর্বর্তী সরকার কি ইউনূস নিয়ে হতাশ? এই সব প্রশ্ন উঠছে, কেননা, বদলের বাংলাদেশে তাঁর উপর আস্থা ক্রমশ কমছে বলে শোনা যাচ্ছে। আসলে নির্বাচন নিয়ে তাঁর বক্তব্য মনঃপূত হয়নি কারও। বিশেষত বিরক্ত বিএনপি। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা যে সময়ের কথা বলেছেন, তা বিএনপির কাছে যৌক্তিক মনে হয়নি। এ কথা জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা আশা করেছিলাম, প্রধান উপদেষ্টা রোডম্যাপ দেবেন, কিন্তু তিনি তা দেননি। এটা আমাদের হতাশ করেছে। বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
আরও পড়ুন: Hooghly: ধানজমিতে নামার সময়ে উল্টে গেল ট্রাক্টর! চাপা পড়ে মৃত্যু তিন যুবকের...
গতকাল বুধবার রাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন নিয়ে বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠন হয়ে গিয়েছে, কিন্তু নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো প্রস্তুতি দেখছি না। নির্বাচনের সময়ের ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণ ও তাঁর প্রেস সচিবের বক্তব্যকে পরস্পরবিরোধী বলেও উল্লেখ করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, তাঁদের দেওয়া বক্তব্য কোনটা সঠিক, আমরা বুঝতে পারছি না।
এই সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত লিখিতভাবে জানানো হয়। তাতে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতির উদ্দেশ্যে যে ভাষণ দিয়েছেন, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে উপদেষ্টার ভাষণের যে ব্যাখ্যা দেন, তা নিয়েও সভায় আলোচনা হয়। বিএনপির স্থায়ী কমিটি মনে করে, মুহাম্মদ ইউনূসের ভাষণে নির্বাচন সংক্রান্ত বক্তব্য অস্পষ্ট। তাঁর বক্তব্যে নির্বাচনের একটি সম্ভাব্য সময়ের কথা বলা হলেও নির্বাচনের রোড ম্যাপ সম্পর্কে সেখানে কোনও সুনির্দিষ্ট কথা নেই।
স্থায়ী কমিটির সভা থেকে এ-ও বলা হয়েছে, মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সীমা ২০২৫ সালের শেষ অথবা ২০২৬ সালের প্রথম অংশে অনুষ্ঠানের কথা বলেন, যা একেবারেই অস্পষ্ট এবং নির্দিষ্ট কোনও সময়-উল্লেখ নেই। বিএনপির মহাসচিব জানিয়েছেন, তাঁদের দলের নীতিনির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটি মনে করে, নির্বাচনকেন্দ্রিক সংস্কারগুলো সম্পন্ন করে দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব। জনগণ এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কাছে সুস্পষ্ট বক্তব্য প্রত্যাশা করে।
প্রসঙ্গত, আওয়ামী লীগ সরকার ২০১১ সালে ১৫তম সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা বাতিল করে এবং সংবিধানে ফিরিয়ে আনে জাতীয় চার মূলনীতি-- জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা। তখনই সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল রেখে অন্যান্য ধর্মের সমমর্যাদাও নিশ্চিত করার আইন আনা হয়। পাশাপাশি ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ভাষণ, ২৬ মার্চের স্বাধীনতা ঘোষণা ও স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সঙ্গে বেআইনি ভাবে ক্ষমতা দখল করলে সর্বোচ্চ শাস্তির বিধানও অন্তর্ভুক্ত করা হয় সংবিধানে। জাতির পিতা হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বীকৃতি দেওয়া হয় ২০২১ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়েই। মঙ্গলবার পৃথক রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের দেওয়া রায়ে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলুপ্তি-সংক্রান্ত ওই ১৫ তম সংশোধনী আইনের ২০ ও ২১ ধারা সংবিধানের সঙ্গে সংঘর্ষপূর্ণ এই 'অভিযোগে' তা বাতিল ঘোষণা করা হয়। রায়ের পরে রিটকারীর আইনজীবী সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা ওই ১৫ তম সংশোধনীটিই সম্পূর্ণ ভাবে বাতিল করতে চেয়েছিলেন। তবে আদালত বেশ কয়েকটি ধারা বাতিল করলেও অন্যগুলি করেনি। তবে আদালত বলেছে, ভবিষ্যৎ সংসদ জাতির প্রয়োজন অনুযায়ী সেগুলি রাখতেও পারে, বাতিলও করতে পারে।