নিজস্ব প্রতিবেদন: কুলভূষণ মামলায় আন্তর্জাতিক আদালতে বুধবার বড়সড় কূটনৈতিক জয় পেল ভারত। পাক জেলে বন্দি প্রাক্তন নৌ সেনা অফিসারের মৃত্যুদণ্ড আপাতত রদ করল আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালত। একইসঙ্গে কুলভূষণের সঙ্গে ভারতীয় দূতাবাসের আধিকারিকদের যোগাযোগের অনুমতি মিলেছে।         


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

হাফিজ সইদ গ্রেফতারের দিনই আন্তর্জাতিক আদালতে কুলভূষণ যাদবের মৃত্যুদণ্ড আপাতত রদ। একইদিনে জোড়া কূটনৈতিক সাফল্য ভারতের। সাজানো অভিযোগে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ। তারপর কী অবস্থায় আছেন কুলভূষণ যাদব? উত্তর দেয়নি পাকিস্তান। আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের দ্বারস্থ হয় নিরুপায় নয়াদিল্লি। ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ মূলত ৪টি অভিযোগ ভারতের।


১.নৌ বাহিনী থেকে অবসরের পর ইরানে ব্যক্তিগত কাজে যান কুলভূষণ, সেখান থেকে তাঁকে অপহরণ করা হয়। 


২.ভিয়েনা চুক্তি লঙ্ঘন করে জেলবন্দি কুলভূষণকে  ভারতীয় দূতাবাসের কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি ইসলামাবাদ। 


৩.ভিয়েনা চুক্তির ৩৬ নম্বর ধারা অনুযায়ী,কুলভূষণকে গ্রেফতারের পরই দেরি না করে ভারতীয় দূতাবাসকে জানানোর কথা, কিন্তু  তা করা হয়নি। 


৪.সাধারণ নাগরিক যাদবের শুনানি সেনা আদালতে করে নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক চুক্তি বা ICCPR লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান। 


শুনানি শুরুর দিনই আন্তর্জাতিক আদালত জানিয়ে দেয় মামলার রায় না দেওয়া পর্যন্ত কুলভূষণকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যাবেনা। আদালতের নির্দেশকে  চ্যালেঞ্জ করে ইসলামাবাদ। তবে, তা খারিজ হয়ে যায়। সেই মামলাতেই বুধবার চূড়ান্ত রায় দিল অন্তর্জাতিক ন্যায় আদালত। পাকিস্তানের সব যুক্তিই খারিজ করে দিয়েছে দ্য হেগের আন্তর্জাতিক আদালত। ১৬ জন সদস্যের মধ্যে ১৫ জনের ভোটই পড়েছে ভারতের পক্ষে। আদালতের প্রেসিডেন্ট বিচারপতি আবদুলকাবি আহমেদ ইউসুফের পর্যবেক্ষণ, ভিয়েনা চুক্তি লঙ্ঘন করেছে পাকিস্তান। গ্রেফতারির পর ভারতীয় দূতাবাসের আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগের অধিকার পাওয়া উচিত ছিল কুলভূষণের। একইসঙ্গে ভারতকে সঙ্গে সঙ্গে অবহিত করা উচিত ছিল। কিন্তু সেটা তারা করেনি। তিন সপ্তাহ পরে জানানো হয়েছিল নয়াদিল্লিকে। কুলভূষণের সঙ্গে ভারতীয় দূতাবাসের কর্তাদের যোগাযোগের জন্য পাকিস্তানকে আবেদন করেছিল ভারত। কিন্তু ভিয়েনা চুক্তি ভেঙে তাতে সাড়া দেয়নি পাকিস্তান।      



কুলভূষণের মৃত্যুদণ্ড রদ করে পুনর্বিচার করার নির্দেশও দিয়েছে আদালত। রায় পুনর্বিবেচনা না করা পর্যন্ত কুলভূষণ যাদবকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া যাবে না। একইসঙ্গে সামরিক আদালতের বদলে ফৌজদারি আদালতে নতুন করে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে কুলভূষণ যাদবের। 


আন্তর্জাতিক মঞ্চে এই মুহূর্তে অনেকটাই কোণঠাসা ইসলামাবাদ। মাথায় ঝুলছে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার খাঁড়া। দরবার করতে আগামী সপ্তাহেই মার্কিন সফরে যাচ্ছেন ইমরান খান। তার আগে কুলভূষণ মামলায় যেভাবে মুখ পুড়ল, তাতে ইমরানের অস্বস্তি যে অনেকটাই বেড়ে গেল তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সাউথ ব্লক মনে করছে, আন্তর্জাতিক আদালতে ভারতের এহেন জয় দেশের কূটনৈতিক সাফল্য। 


২০১৬ সালে বালুচিস্তান প্রদেশে ভারতীয় নাগরিক কুলভূষণ যাদবকে গ্রেফতার করা হয় বলে দাবি করে পাক সেনা। তাঁর বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তি ও সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগ করে পাকিস্তান। ২০১৭ সালের এপ্রিলে কুলভূষণ যাদবকে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেয় পাক সেনা আদালত। ভারত প্রথম থেকে জানিয়ে আসছে, নৌসেনার প্রাক্তন অফিসার ব্যবসায়িক কাজে গিয়েছিলেন ইরানে। সেখানে তাঁকে অপহরণ করা হয়।


আরও পড়ুন- দেশবাসীর পাশে সরকার, কুলভূষণ-মামলায় রায়ের পর মনে করালেন মোদী