নিজস্ব প্রতিবেদন: পরিবারের ড্রয়ারে প্রায় ৫৫ বছর ধরে পড়েই ছিল এই ঘুঁটিটি। দাবার ঘুঁটি। একটি প্রহরীর ছোট্ট মূর্তির মতো ঘুঁটি, যার মাথায় হেলমেট, হাতে তলোয়ার রয়েছে। উচ্চতা ৮.৮ সেন্টিমিটার। কিন্তু এই একটা দাবার ঘুঁটির দাম যে এত হতে পারে তা কোনও দিন কল্পনাও করেননি এই পরিবারের কেউ। জুলাই মাসে একটি নিলামে উঠছে এই দাবার ঘুঁটিটি। নিলামে এই ঘুঁটির দর প্রায় ১ মিলিয়ন পাউন্ড পর্যন্ত হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। অর্থাত্, ভারতীয় মূদ্রায় যা প্রায় ৭ কোটি টাকার সমান!


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

জানা গিয়েছে, ১৯৬৪ সালে স্কটল্যান্ডের এক অ্যান্টিক জিনিসপত্রের বিক্রেতা আর এক অ্যান্টিক জিনিসপত্র বিক্রেতার কাছ থেকে সে সময় ৫ পাউন্ডের বিনিময়ে কিনেছিলেন এই দাবার ঘুঁটিটি। ওই বিক্রেতার মৃত্যুর পর থেকে তাঁর মেয়ে এটি যত্ন করে রেখে দিয়েছিলেন পরিবারের একটি আসবাবের ড্রয়ারে। এটির ‘অলৌকিক ক্ষমতা’ সম্পর্কে একটা বিশ্বাস ছিল পরিবারে। এখনও এই পরিবারের সংগ্রহে থাকা অসংখ্য অ্যান্টিক দেখতে ভিড় জমান বহু মানুষ। এ ভাবেই একদিন অ্যান্টিক সংগ্রহ দেখতে এখানে এসে এই দাবার ঘুঁটির দিকে নজর পড়ে প্রত্নতত্ত্ববিদ, বিশেষজ্ঞ আলেকজান্ডার ক্যাডারের। তার পর এই ঘুঁটি নিয়ে টানা ৬ মাস ধরে গবেষণা চালিয়ে তিনি এটির ঐতিহাসিক গুরুত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হন।


এই দাবার ঘুঁটির সম্পর্কে আলেকজান্ডার জানান, ১৮৩১ সালে স্কটল্যান্ডের লুইস আইলের এক বালির স্তূপ থেকে উদ্ধার করা হয় ‘ওয়ালরাস টাস্ক ওয়ারিয়র চেসম্যান’-এর দাবার সেট। বিশেষজ্ঞদের মতে, ত্রয়োদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে সিন্ধুঘটকের দাঁত দিয়ে এটি নরওয়েতে তৈরি হয়েছিল সেখানকার যোদ্ধাদের অনুকরণে।



এই দাবার সেটের সঙ্গে মোট ৯৩টি ঘুঁটি উদ্ধার হয় যার ৮২টি ঘুঁটি ব্রিটিশ মিউজিয়ামে আর বাকি ১১টি স্কটল্যান্ডের ন্যাশনাল মিউজিয়ামে সংরক্ষিত রয়েছে। ব্রিটিশ প্রত্নতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা জানান, এই দাবার সেটের বিশেষত্ব হল এটির মোট ঘুঁটির সংখ্যা ৯৮টি। এর মধ্যে ৯৩টি ঘুঁটি উদ্ধার হয়েছে এবং ১টি যোদ্ধা ও ৪টি প্রহরীর খোঁজ মেলেনি। আলেকজান্ডারের দীর্ঘ গবেষণায় জানা গিয়েছে, স্কটল্যান্ডের ওই পরিবারে ৫৫ বছর ধরে সংরক্ষিত দাবার ঘুঁটিটি আসলে ‘ওয়ালরাস টাস্ক ওয়ারিয়র চেসম্যান’-এর দাবার সেটের ওই যোদ্ধার যেটি বিগত প্রায় ২০০ বছর ধরে ‘নিখোঁজ’ ছিল।


আরও পড়ুন: কোটি টাকার দুষ্প্রাপ্য মূলের মূল্য না বুঝে দুই কৃষক বেচলেন জলের দরে!


২ জুলাই লন্ডনের সদবির ‘ওল্ড মাস্টার স্কালপচার অ্যান্ড ওয়ার্ক অব আর্ট’-এ নিলামে উঠবে এই দুষ্প্রাপ্য দাবার ঘুঁটিটি। তার আগে সেখানে সর্বসাধারণের দেখার জন্য একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে।