ও চাঁদ, বরফজলের নামবে জোয়ার! আশ্বাস বিজ্ঞানীদের
চাঁদের পিঠের `ঠান্ডা ফাঁদে` জলের ছায়া!
নিজস্ব প্রতিবেদন: রবীন্দ্রনাথ চাঁদকে উদ্দেশ্য করে লিখেছিলেন-- ও চাঁদ, চোখের জলের নামল জোয়ার! এখন দেখা যাচ্ছে, চোখের জল নয়, পুরোদস্তুর পানীয় জলের জোয়ারই নামতে শুরু করতে চলেছে চাঁদে!
চাঁদে কি জল আছে? এই প্রশ্নে উত্তাল সারা দুনিয়ার মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। এক দশক আগেও মনে করা হত, জল নেই। কিন্তু নিরন্তর চলা পরীক্ষা-নিরীক্ষা ক্রমে প্রমাণ করছে, চাঁদে জল থাকতেও পারে। অবশষে এমন দুটি রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে, যার জেরে জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে, চন্দ্রপৃষ্ঠে জল রয়েছে।
যতটা মনে করা যাচ্ছিল তার চেয়েও বেশি জল আছে বলে মনে করা হচ্ছে চাঁদে। বলা হচ্ছে, ভবিষ্যতের চন্দ্র অভিযাত্রীরা তা থেকে চাঁদে জ্বালানিও পাবেন। নতুন এক গবেষণায় প্রকাশ, চাঁদের মেরু অঞ্চলে প্রচুর বরফ জমে আছে। এগুলিকে বলা হচ্ছে 'কোল্ড ট্র্যাপ' বা ঠান্ডা ফাঁদ। চাঁদের যে-অঞ্চলে সূর্যের আলো পড়ে সেখানেও অণু আকারে জল আছে। 'স্ট্র্যাটোস্ফেরিক অবজারভেটরি ফর ইনফ্রারেড অ্যাস্ট্রোনমি' (এসওএফআইএ)-র এক গবেষণা মারফত এ তথ্য জানা গিয়েছে। এই জলকণা সাধারণ কাচের কণাকে অবলম্বন করে রয়েছে। চাঁদে জলের উপস্থিতি নিশ্চিত করা গেলে আগামী দিনে এ সংক্রান্ত গবেষণার ক্ষেত্রে অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তৃত হবে বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা। এই জলকণা থেকে পানীয় জল, শ্বাসযোগ্য অক্সিজেন এবং জ্বালানিও মিলবে বলে তাঁদের মত। শুধু তাই নয়, এই জলের উৎস যথাযথ জানা গেলে পৃথিবীতে কী ভাবে জলের উৎপত্তি হয়েছে, জানা যাবে তা-ও। সৌরবায়ুর গতি সম্বন্ধেও জানা যাবে নতুন কথা।
চাঁদের কক্ষপথে নাসা ভবিষ্যতে একটি স্পেস স্টেশন তৈরি করতে চায়। তারা মনে করছে, চাঁদের দক্ষিণমেরু থেকে বরফ খুঁড়ে বের করে আগামী দিনে পানীয় জলও সরবরাহ করা সম্ভব হবে সেখানে।
আর এক বাঙালি কবি লিখেছিলেন, 'কেন মেঘের ছায়া আজি চাঁদের চোখে?' এই কবি-পঙক্তি অনুসরণ করে বলতেই হয়, মেঘের ছায়া নয়, চাঁদের চোখে এ হল জলের ছায়া।
আরও পড়ুন: ২০ কোটি মাইল দূরের গ্রহাণুতে পৌঁছল মহাকাশযান