আগ বাড়িয়ে আক্রমণে যেতে নারাজ কিমের কোরিয়া
ওয়েব ডেস্ক: এক পা পিছিয়ে গেল কিমের কোরিয়া। মার্কিন সামরিক দ্বীপ গুয়াম আক্রমণের সিদ্ধান্ত ঠান্ডা ঘরে না পাঠালেও আপাতত তা পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল কিম জং উন। সেদেশের সরকারি সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে আমেরিকা ঠিক কী সামরিক পদক্ষেপ নিচ্ছে তা দেখে নিয়ে তবেই উত্তর কোরিয়া তাদের পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। কিন্তু, রাষ্ট্রসংঘ-সহ কোনও পক্ষকেই তোয়াক্কা না করা কমিউনিস্ট দেশটির হঠাত্ এমন 'বোধোদয়' দেখে অবাক দুনিয়া।
আমেরিকা-উত্তর কোরিয়ার হুমকি-পাল্টা হুমকির আবহে বিগত কয়েক দিন ধরেই উত্তপ্ত আন্তর্জাতিক মহল। উত্তর কোরিয়ার গুয়াম গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুমকির পরই টুইট্যারে মার্কিন সেনাবাহিনীর 'সম্পূর্ণ প্রস্তুত' থাকার বার্তা বুক ঠুকে জানান স্বয়ং ট্রাম্প। তারপরও পরিস্থিতি বদলাচ্ছিল না। তাহলে কোন ঘটনা এমন বদল এনে দিল? অনেকেই মনে করছেন কিমের পিছু হঠার সিদ্ধান্তের পিছনে রয়েছে মূলত দুটি কারণ।
প্রথমত, ডোনাল্ড ট্রাম্প যতই 'আস্ফালন' করুন, সেটাকে খুব একটা গুরুত্ব দেয়নি কিমের দেশ। এক্ষেত্রে অনেকেই মনে করছেন, ট্রাম্প যেভাবে বিবিধ বিষয়ে 'বেলাগাম মন্তব্য' করে থাকেন তাতে হয়ত তাঁর এমনই ভাবমূর্তি তৈরি হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু সম্প্রতি মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব জেমস ম্যাটিস যেভাবে কঠোর পেশাদার ভাষায় উত্তর কোরিয়াকে বার্তা দিয়েছেন, 'কাজ হয়েছে' তাতেই। ম্যাটিস বলেছেন, যদি কিমের দেশ গুয়াম আক্রমণ করে তাহলে বুঝতে হবে তারা যুদ্ধের 'খেলা শুরু' করে দিল। ফলে আমেরিকাকেও তখন খেলায় অংশ নিতে হবে, একথা ছিল অনুচ্চারিত। আন্তর্জাতিক মহলের একাংশের মতে, এই পেশাদারি শব্দ প্রয়োগই থমকে দিয়েছে কিমের কোরিয়াকে।
ম্যাটিস বার্তার পাশাপাশি চিনের 'অবস্থান'কেও গুরুত্ব দিচ্ছে বিশ্ব কূটনীতিকরা। উত্তর কোরিয়ার বরাবরের প্রশ্রয়দাতা চিন, কোরিয়া-আমেরিকা উত্তাপের আবহে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে, যদি আমেরিকা আগে কোরিয়া আক্রমণ করে তাহলে চিন 'বন্ধু রাষ্ট্র' উত্তর কোরিয়ার পাশে দাঁড়াবে। কিন্তু যদি কিমের কোরিয়া আগে আক্রমণ করে, তাহলে চিন 'নিরপেক্ষ অবস্থান' গ্রহণ করবে। চিন তার অবস্থান খোলাখুলি স্পষ্ট করে দেওয়ায় বেশ খানিকটা চাপে পড়ে গেছে উত্তর কোরিয়া। কারণ, অন্যতম স্বীকৃত বিশ্বশক্তি চিন পাশে থাকা কিমের কাছে বড় ভরসার। আর তাই হয়ত চিনের 'পক্ষপাত' লাভের আশায় আগ বাড়িয়ে আক্রমণের পথে যাচ্ছে না কিমের কোরিয়া।