নির্ণয় ভট্টাচার্য্য


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

"ভীষণ অসম্ভবে তোমাকে চাই"...রাষ্ট্রপতির মসনদে তোমাকে চাই। ঐতিহাসিক "লিবার্টি, ইক্যুয়ালিটি, ফ্রেটারনিটি"র স্লোগান তোলা দেশে এই মুহূর্তে নতুন 'ফরাসি বিপ্লবে'র স্লোগান এটিই! এই 'তুমি' হলেন বারাক ওবামা। ওবামাকে এবার তাঁদের প্রেসিডেন্ট করতে চাইছেন ফরাসি ভোটারদের একটা অংশ। ফ্রান্সের জনতার একটা অংশের দাবি, প্যারিসে বসে ল্যান্ড অফ রোমান্সের ব্যাটন হাতে তুলে নিক প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তাই নিজেদের দাবির স্বপক্ষে গণস্বাক্ষর সংগ্রহের মাধ্যমে জনমত গড়ে তুলতে তারা গড়ে ফেলেছেন আস্ত একটা ওয়েবসাইট। বর্তমানের এই ট্রেন্ডি 'ফরাসি বিপ্লবের' নাম-"ওবামা১৭"। কিন্তু হঠাত্‍ কেন অন্য দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্র প্রধানকে নিজেদের প্রেসিডেন্ট হিসাবে পেতে চাইছেন ফরাসিরা? তাছাড়া সাংবিধানিকভাবে কোনও বিদেশী কীকরে ফ্রান্স প্রশাসনের শীর্ষপদে বসতে পারেন?


ওয়েবসাইটের সহ প্রতিষ্ঠাতা ও "ওবামা১৭" প্রচারের অন্যতম মুখ জানিয়ে দিচ্ছেন যে, এই 'বৈপ্লবিক' দাবি আসলে 'মজা' এবং প্রতীকী। আন্দোলনকারীরা আসলে ফ্রান্সের সাধারণ ভোটারদের মধ্যে সচেতনতা প্রসারের মাধ্যমে তাঁদের জাগ্রত করতে চাইছেন। "ওবামা১৭"পন্থীদের দাবি, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে ৮ বছরের মেয়াদ কাটানো ওবামা, ফ্রান্সের ব্যাটন হাতে তুলে নেওয়ার জন্য সবচেয়ে যোগ্য- আর এটা বলার মাধ্যমে তাঁরা কেবল বোঝাতে চাইছে যে, "যখন ফ্রান্স তীব্র দক্ষিণপন্থীদের ব্যাপকভাবে নির্বাচিত করতে চলেছে, তথন এক ভিন দেশী রাষ্ট্রনেতাকে ফরাসি প্রেসিডেন্ট করতে চেয়ে ওবামা১৭ গোষ্ঠী দুনিয়াকে গণতন্ত্রের পাঠ দিতে চায়"।


উল্লেখ্য, আগামী ২৪শে এপ্রিল ফ্রান্সে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম পর্ব অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। এই পর্বে যদি কোনও প্রার্থীই ৫০ শতাংশ ভোট না পান তাহলে সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া দুই প্রার্থী আগামী ৭ই মে পরবর্তী পর্বের নির্বাচনে লড়বেন। সেখানে যে জিতবে, তিনিই ফরাসি রাষ্ট্রপতির কুর্সিতে বসবেন।



অনেকেই মনে করছেন জাতীয়তাবাদী নেত্রী মেরিন লে পেন সেদেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রথম পর্বে জিতে যাবেন। কিন্তু দ্বিতীয় পর্বে মূলস্রোতের রাজনৈতিক দলগুলি তাঁকে কিছুতেই জিততে দেবে না। এই আবহে সব মিলিয়ে ফরাসি নির্বাচন ব্যবস্থা এবং সেদেশের রাজনৈতিক বাস্তবের বিষয়ে প্রতিবাদী ও সচেতনতা প্রসারকারীর ভূমিকা নিয়েছে "ওবামা১৭" আন্দোলন। দেশীয় রাজনীতির হতশ্রী ছবিতে তীর্যক দৃষ্টি ফেলে মজার ছলে তাঁরা বলতে চাইছে বর্তমান ফ্রান্সের রাজনৈতিক পরিবেশের যা অবস্থা তাতে ভিনদেশী ওবামাও শ্রেয়, অন্তত প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতীষ্ঠা করতে চাইলে। বাস্তিল দুর্গকে গুঁড়িয়ে দেওয়া দেশে সত্যিই বিক্ষোভ বিপ্লব আজও বেঁচে আছে! (আরও পড়ুন- অস্কারের মঞ্চে বিতর্ক, সেরা ছবি ঘোষণায় বড় ভুল)