ব্যুরো: বামিয়ানের পর ইরাক। এবার কালাপাহাড়ি কাণ্ড আইসিস জঙ্গিদের। সুপ্রাচীন অ্যাসিরিয় সভ্যতার রাজধানী নিমরুদের অমূল্য সব স্থাপত্য, মূর্তি, লিপি, ভেঙে-গুঁড়িয়ে মাটিতে মিশিয়ে দিল আইসিস জঙ্গিরা। মুছে গেল মানুষের সভ্যতার এক সুপ্রাচীন অধ্যায়।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

বামিয়ান বুদ্ধমূর্তি ধ্বংসের কথা মনে আছে? আফগানিস্তানে পাহাড়ের গায়ে খোদাই করা সুবিশাল সেই বুদ্ধমূর্তি ওয়ার্লড হেরিটেজ সাইট হিসেবে ঘোষণা করেছিল ইউনেস্কো। ধর্মীয় জিগির তুলে  সভ্যতার ইতিহাসের অন্যতম সেই প্রতীক ধ্বংস করেছিল তালিবানরা। এবার ইরাকে কালাপাহাড়ের ভূমিকায় আইসিস। ধ্বংস করে ফেলা হল খ্রীষ্টের জন্মের তেরোশ বছর আগেকার অ্যাসিরিয় সভ্যতার নিদর্শন।


মানুষের সভ্যতার উষাকাল ধরা আছে অ্যাসিরিয়ার ইতিহাসে। অ্যাসিরিয়ার রাজধানী নিমরুদের ধ্বংসস্তূপ থেকে বহু যুগের চেষ্টায় প্রত্নতাত্ত্বিকেরা উদ্ধার করেছিলেন সেই সময়কার বহু মূর্তি , ভাস্কর্য ও কিউনিফর্ম লিপি। সেগুলি থেকে ধাপে ধাপে পুনর্নির্মাণ করা হয়েছিল মানুষের সুপ্রাচীন সভ্যতার ইতিহাস। মসুলের কাছে এক মিউজিয়মে রাখা ছিল সেই সব অমূল্য উদাহরণ। ইতিহাসের সেই সব নিদর্শন একে একে গুঁড়িয়ে মাটিতে মিশিয়ে দিল আইসিস জঙ্গিরা। বড় ব়ড হাতুড়ি, ইলেকট্রিক ড্রিল নিয়ে এসে ভেঙে ফেলা হল রাজা আসুরবানিপালের মূর্তি। কত সব মূর্তি, ভাস্কর্য, মুখের আদল গুঁড়িয়ে ফেলা হল কয়েক ঘণ্টায়, যেগুলি তৈরি করার মত দক্ষতায় পৌছতে মানুষকে চেষ্টা করতে হয়েছে কয়েক শতাব্দী ধরে। নিমরুদ থেকে পাওয়া গিয়েছিল দু ডানাওয়ালা সিংহের মূর্তি। ইতিহাসের ধূলো ঘেঁটে জানা গিয়েছিল সেই মূর্তি গড়া হয়েছিল খ্রীষ্টপূর্ব নবম শতকে। সম্ভবত গুঁড়িয়ে ফেলা হয়েছে সেই মূর্তিও। দুনিয়াজুড়ে মৌলবাদের উত্থান, রাজনৈতিক সমীকরণ, আগ্রাসন, যুদ্ধ, সব মিলিয়ে তৈরি হয়েছে এমনই এক  ফাঁস, যা চেপে বসছে সভ্যতার ইতিহাসের ওপর। চিরদিনের জন্য হারিয়ে যাচ্ছে মানুষের সুপ্রাচীন ইতিহাসের একেকটা অধ্যায়। এই কালাপাহাড়ি কাণ্ড ঘনিয়ে আনছ  সভ্যতার সঙ্কট।  কবে ঘুম ভাঙবে সচেতন মানুষের? কবে ঐতিহ্য আর ইতিহাস সংরক্ষণে এগিয়ে আসবেন মানুষ?