ব্ল্যাকহোল গিলে খাচ্ছে তারা, ছড়াচ্ছে আলো
বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখেছেন, কৃষ্ণগহ্বরের পেটে ঢুকে পড়া তারাটির পদার্থের পরিমাণ সূর্যের সমান! আর ব্ল্যাকহোলটির পদার্থের পরিমাণ সূর্যের প্রায় দশ লক্ষ গুণ!
নিজস্ব প্রতিবেদন: ব্ল্যাকহোল গিলে নিচ্ছে একটি তারাকে। তারাটি ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে যাচ্ছে। আর সেখান থেকে বেরিয়ে আসছে আলো। এই ঘটনাকে বলে 'টাইডাল ডিসরাপশন ইভেন্ট'।
সোমবার 'ইউরোপিয়ান সাউদার্ন অবজারভেটরি' (ইএসও) থেকে এই মহাজাগতিক বিস্ময় ধরা পড়েছে। সাড়ে ২১ কোটি আলোকবর্ষ দূরের ঘটনা এটি!
আমাদের হিসেবে দূরে, বহুদূরে। কিন্তু মহাকাশের হিসেবে এ কিছুই নয়। উল্টে, এ নেহাতই কাছে। বলা হচ্ছে, পৃথিবীর এত কাছে এই ধরনের ঘটনা টেলিস্কোপে ধরা পড়ার ঘটনা এই প্রথম।
মহাকাশের খুব স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু ব্ল্যাকহোল বা ব্ল্যাকহোলের তারা গিলে খাওয়ার মতো ঘটনাগুলি এমনিতে যথেষ্ট বিস্ময় উৎপাদনকারী। বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের 'রয়্যাল অ্যাস্ট্রনমিক্যাল সোসাইটি'র রিসার্চ ফেলো ম্যাট নিকলের গলাতেও শোনা গেল সেই বিস্ময়ের সুর-- হাতের কাছের তারাটিকে গিলে খাচ্ছে কোনও এক ব্ল্যাকহোল, এই ব্যাপারটাই যেন কেমন কল্পবিজ্ঞানের মতো শোনায়! অথচ, 'টাইডাল ডিসরাপশন ইভেন্টে' ঠিক এটাই ঘটে।
কোনও হতভাগ্য তারা যদি ঘুরতে-ঘুরতে কোনও ভয়ঙ্কর বড় ব্ল্যাকহোলের কাছাকাছি চলে যায় তবে সেটির মহাকর্ষের টানে তারাটি খণ্ডে খণ্ডে ভেঙে গিয়ে ব্ল্যাকহোলের পেটে ঢুকে পড়ে। এটা যখন হয় তখন চারিদিকে একটা তড়িচ্চুম্বকীয় ক্ষেত্রে তৈরি হয়। যা কয়েকমাস ধরে থাকে।
পর্যবেক্ষক বিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা-- এই ধরনের ঘটনা সাধারণত দেখা যায় না। কেননা পুরো বিষয়টি খুব দ্রুত ঘটে। তারা কোনও কৃষ্ণগহ্বরের কাছে এসে পড়লে সেটি দ্রুত ভেঙে গিয়ে ধুলোকণার মতো অংশে পরিণত হয়ে যায়। এ বারে বিজ্ঞানীরা ভাগ্যবান যে, তাঁরা এই বিশেষ মুহূর্তটির সাক্ষী থাকতে পেরেছেন।
কোন ধরনের তারা এ বারের ঘটনাটিতে কৃষ্ণগহ্বরের পেটে ঢুকে গেল? বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখেছেন তারাটির পদার্থের পরিমাণ প্রায় আমাদের সূর্যের সমান! আর ব্ল্যাকহোলটির পদার্থের পরিমাণ? শুনলে আঁতকে উঠবেন। ওটি আমাদের সূর্যের প্রায় দশ লক্ষ গুণ ভারী!
আরও পড়ুন: আপনি করোনা ছড়াচ্ছেন! প্লিজ, একটু কম গান করুন!