করোনার ভয়াবহতা সম্পর্কে সবার প্রথমে জানানো তিন ব্যক্তি দুমাস ধরে নিখোঁজ
নিখোঁজ তিনজনের মধ্যে রয়েছেন সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট।
নিজস্ব প্রতিবেদন— চেন কিউশি, ফ্যাং বিন এবং লি জেহুয়া। এই তিনজনই সবার প্রথমে উহান শহরের ভয়াবহতা সম্পর্কে জানিয়েছিলেন। করোনাভাইরাসের উত্পত্তিস্থল চিনের উহান। ডিসেম্বর মাসে সেখান থেকে ছড়াতে শুরু করে এই প্রাণঘাতী ভাইরাস। ধীরে ধীরে সারা বিশ্বের ২০০টিরও বেশি শহরে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা। তবে আমেরিকার অভিযোগ, শুরু থেকে চিন এই ভাইরাসের সম্পর্কে জানালে এতটা ভয়ঙ্কর অবস্থা হয়তো হত না। কিন্তু চিন যে প্রথমদিকে এই ভাইরাসের ভয়াবহতা গোপন করেছিল তার একাধিক প্রমাণ আগেও মিলেছে। উহান প্রদেশের ভয়ঙ্কর অবস্থা এই তিনজন সবার প্রথমে বিশ্বের সামনে তুলে ধরেছিলেন। গত দুমাস ধরে এই তিনজন নিখোঁজ।
শুরুর দিকে করোনার ভয়াবহতা নিয়ে যাঁরাই মুখ খুলেছেন তাঁরাই চিন সরকারের রোষের মুখে পড়েছেন। নিখোঁজ তিনজনের মধ্যে রয়েছেন সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট। উহানের ভয়াবহ অবস্থা সারা বিশ্বকে শুরু থেকেই দেখাতে চেয়েছিলেন এই তিনজন। এই তিনজন উহান শহরের ভিতরের অবস্থা ছবি ও ভিডিয়োর মাধ্যমে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিয়েছিলেন। তার পর থেকেই তিনজন নিখোঁজ। ফেব্রুয়ারি মাস থেকে তাঁদের কোনও হদিশ পাচ্ছেন না পরিবারের লোকজন। চিন সরকার তাঁদের সম্পর্কে কোনও বক্তব্য রাখতে নারাজ। অনেকেই দাবি করেছিলেন, চিনা সরকার রাতের অন্ধকারে প্রচুর করোনা আক্রান্তের মৃতদেহ নিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। মৃতের আসল সংখ্যা গোপন করছে চিন সরকার। এমন অভিযোগও করেছিলেন অনেকে।
আরও পড়ুন— চিন থেকেই কি মিলবে করোনার প্রতিষেধক! জল্পনা উসকে শুরু ট্রায়াল
উহানের একটি হাসপাতালের বাইরে মিনিবাসে লাশের স্তুপের ভিডিয়ো করে প্রকাশ করেছিলেন ফ্যাং। অনেক রোগী হাসপাতালের বাইরে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন এবং ডাক্তাররা এত রোগী দেখতে হিমশিম খাচ্ছেন, ভিডিয়োতে এমন অনেক দৃশ্যও ছিল। ৩৪ বছর বয়সী অ্যাক্টিভিস্ট চেন একটি ভিডিয়ো প্রকাশ করেছিলেন সেখানে দেখা গিয়েছিল, উহানের এক হাসপাতালে একজন মহিলা হুইলচেয়ারে মৃত আত্মীয়ের লাশ নিয়ে বসে রয়েছেন। কাউকে ফোন করার চেষ্টা করছিলেন তিনি। কিন্তু এরপরই তিনিও হুইল চেয়ারেই মারা যান। ২৫ বছর বয়সী সাংবাদিক লি জেহুয়া চিনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিসিটিভিতে কাজ করতেন। উহানের ল্যাব থেকে করোনা ছড়িয়েছে, এমন দাবি করে রিপোর্ট করেছিলেন তিনি। তার পর থেকে আর তাঁকেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।