ওয়েব ডেস্ক: আমার টুসু রাগ করেছে। বরকে দিয়েছে আড়ি। বাপের ঘরে রইবেক টুসু। যাবে না শ্বশুরবাড়ি। রাঢ় বাংলার লোকশিল্পের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে  টুসু পরব। এই পরবের অন্যতম বৈশিষ্ট্য টুসুর বিদায় বা টুসুর ভাসান। মকরসংক্রান্তিতে টুসু ভাসানে মাতাল হল লালমাটি।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

বড় মিঠে এ গান। বড় মিঠে এ সুর। লালমাটির নুড়ি-পাথুরে সন্ধ্যায় এ গান শরীরে ঝিম ধরায়। রাত গভীর। মহুয়ার নেশা আরও ঘন হয় আদিবাসী নাচের তালে। বাজতে থাকে ধামসা, মাদল। দিনভর পাথর ভাঙা ক্লান্তি দূরে সরিয়ে টুসু পরবের আনন্দে মেতে ওঠে রুখা শুখা দেহাতি মানুষগুলো।


আরও পড়ুন- শ্রীনু নায়ডু হত্যায় গ্রেফতার হল আরও এক জন


টুসুর ইতিহাস-
লোক-কাহিনী অনুযায়ী টুসু শস্য দেবী। কেউ কেউ এরমধ্যে লক্ষীব্রতের ছায়া দেখতে পান। অনেকে মনে করেন ফসল ঘরে তোলার উত্‍সব টুসু। টুসুর মৃত্যু বা ভাসানের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে স্থানীয় নদী। তাই টুসু পরবের অন্যতম অনুসঙ্গ টুসুর বিদায় বা ভাসান।


মকরসংক্রান্তির দিনেই শুরু হয় টুসু উত্‍সব। শুক্রবার রাতভর টুসু উত্‍সবের পর বাঁকুড়ার যমুনাবাঁধ, পোকাবাঁধ, কংসাবতী নদীর তিরে রানীবাঁধ ব্লকের পরেশনাথ এলাকায় টুসু গান গেয়ে চৌদল নিয়ে হেঁটেছেন টুসু শিল্পীরা।


কংসাবতী নদীর তিরে পড়কুল ও পরেশনাথে বসেছে টুসুর মেলা। তবে আধুনিক সময়ের ছোঁয়ায় রাঢ় বাংলার এই শিল্প আজ অনেকটাই বিপন্ন। সময়ের সাথে সাথে জৌলুস হারাচ্ছে মকর পরব। ভাটা পড়েছে পৌষপার্বনের পিঠে উত্‍সবেও।


আরও পড়ুন- বিজেপি নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার গ্রেফতার


গ্রাম-বাংলার প্রাণের উত্‍সব টুসু। গানের মধ্যে দিয়ে বেঁচে থাকে আদিবাসী জীবনের সুখ, দুঃখ, ভালোবাসা, স্বপ্ন। টুসু পরব তাই প্রেমের নকশি কাঁথা বোনে। ধামসা মাদল আর  টুসুর সুরে উঠে পৌষালি ধানের সুবাস।