ওয়েব ডেস্ক: আত্মসমর্পণ করলেন মাও নেতা রঞ্জিত পাল। বিহার-ঝাড়খণ্ড-ওড়িশা বর্ডার রিজিওনাল কমিটির নেতা রঞ্জিত, ডিজি-নগরপালের উপস্থিতিতে আত্মসমর্পণ করেন। তাঁর সঙ্গেই আত্মসমর্পণ করেন তাঁর স্ত্রী ও মাও নেতা ঝর্ণা গিরিও। কিষেণজির মৃত্যুর পর রঞ্জিতের আত্মসমপর্ণ বড় সাফল্য দাবি রাজ্য পুলিসের ডিজির।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING


রঞ্জিত পাল ওরফে তড়িৎ, বয়স ৪৫। CPI (মাওবাদী) দলের পূর্বাঞ্চল ব্যুরো সদস্য। বাংলা-ঝাড়খণ্ড-ওড়িশা সীমানা আঞ্চলিক কমিটির নেতা। কয়েক লাইনে এটাই রঞ্জিত পাল। ধারেভারে এরাজ্যের অন্যতম হেভিওয়েট মাও নেতা। ১৭ বছরের লড়াইয়ে দাঁড়ি পড়ল মঙ্গলবার। আত্মসমপর্ণ করলেন রঞ্জিত। রঞ্জিতের আত্মসমর্পণ বড় সাফল্য মানছে প্রশাসনও। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে পশ্চিমবঙ্গ-ঝাড়খণ্ড সীমানায় সক্রিয় রঞ্জিত। মূলত অযোধ্যা পাহাড় লাগোয়া এলাকাতেই ঘাঁটি গেড়েই চলত  সংগঠনের কাজকর্ম। 


 



কিষেণজির মৃত্যুর পর নেতৃত্বের অভাবে ধুঁকতে থাকা মাওবাদীদের সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয় রঞ্জিতকে। অ্যাকশনের নিঁখুত পরিকল্পনার পাশাপাশি জনসংযোগেও অসাধারণ দক্ষ রঞ্জিত। সেই জনসংযোগকেই হাতিয়ার করেই লালগড় পরবর্তী সময়ে ঝাড়খণ্ড-বাংলা সীমানার বিভিন্ন গ্রামে অবাধ যাতায়াতের নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে রঞ্জিত। দুই রাজ্যের পুলিসের চোখে অনাসায়ে বেশ কয়েকবার ধুলো দিয়ে পালায় বছর ৪৫-এর মাও নেতা। পুলিসের খাতায় রঞ্জিতের বিরুদ্ধে একাধিক নাশকতার অভিযোগ রয়েছে। ঝাড়খণ্ডের সাংসদ সুনীল মাহাত খুনে অন্যতম অভিযুক্ত। বাংলা ও ঝাড়খণ্ডে ৫০ টির বেশি দেশদ্রোহিতা ও নাশকতার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত। পুরুলিয়ায় শিক্ষক সৌমজিত্‍ বসু ও পুলিসকর্মী পার্থ বিশ্বাস অপহরণের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত। পশ্চিমবঙ্গ ও সীমান্ত লাগোয়া ঝাড়খণ্ডে সংগঠন টিকিয়ে রাখার মূল কৃত্বিত্বই ছিল রঞ্জিতের কাঁধে। রঞ্জিতের সঙ্গেই এদিন আত্মসমর্পণ করলেন তাঁর স্ত্রী ঝর্না গিরি। নন্দীগ্রামে জমি আন্দোলনের সময় ভূমিকন্যা ঝর্নার সঙ্গে পরিচয় রঞ্জিতের।  



নন্দীগ্রামে জমি আন্দোলনের সময় সোনাচূড়া-গড়চক্রবেড়িয়ায় স্কোয়াড তৈরি করে রঞ্জিত। সেই স্কোয়াডের সদস্য ঝর্ণা ও তাঁর বোন কবিতা। মাওবাদীরা নন্দীগ্রাম ছাড়ায় সময়ই ঝর্ণা ও কবিতা রঞ্জিতের সঙ্গে ঘর ছাড়ে। রঞ্জিতের নেতৃত্বে দলমা-অযোধ্যা আঞ্চলিক কমিটিতে কাজ শুরু করে দুই বোন। 


 


পরবর্তীকালে ঝর্ণাকে বিয়ে করে রঞ্জিত। দলে ঝর্না অনিতা নামে পরিচিত হয়। অযোধ্যা এরিয়া কমিটির দায়িত্ব ছিল ঝর্ণার কাঁধে।  রঞ্জিত-ঝর্ণা যে আত্মসমর্পণ করতে পারে তার ইঙ্গিত ছিল না শীর্ষ মাও নেতাদের কাছেও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রঞ্জিতের গ্রেফতার এরাজ্যে মাও সংগঠনের কফিনে শেষ পেরেক।