আরও ৪ রাজ্যে এবার `মোমোজ অন হুইলস`, বাঙালি তরুণ দম্পতির স্টার্টআপে নয়া সাফল্য
`মোমোজ অন হুইলস`-এর সাফল্যের মুকুটে এবার আরও একটা নতুন পালক। রাজ্যের গণ্ডি ছাড়িয়ে এবার ভিনরাজ্যেও `মোমোজ অন হুইলস`। মোমো বেচে বিলেত জয়ের স্বপ্ন দেখা তরুণ বাঙালি দম্পতির স্বপ্নপূরণের পথে বড়সড় সাফল্য। আরও একধাপ এগিয়ে যাওয়া।
সুদেষ্ণা পাল : 'মোমোজ অন হুইলস'-এর সাফল্যের মুকুটে এবার আরও একটা নতুন পালক। রাজ্যের গণ্ডি ছাড়িয়ে এবার ভিনরাজ্যেও 'মোমোজ অন হুইলস'। মোমো বেচে বিলেত জয়ের স্বপ্ন দেখা তরুণ বাঙালি দম্পতির স্বপ্নপূরণের পথে বড়সড় সাফল্য। আরও একধাপ এগিয়ে যাওয়া।
পূর্ব ভারতের ঘরে ঘরে মোমোর মত স্বাস্থ্যসম্মত এবং টেস্টি ফুড পৌঁছে দেওয়ার ভাবনা। আর সেই ভাবনাকে সফল করতেই নয়া উদ্যোগ শ্যামভালা ফুড প্রোডাক্টস প্রাইভেট লিমিটেডের। মঙ্গলবার শ্যামভালা ফুড প্রোডাক্টস ও ফ্রেঞ্চ মোটেলস অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট প্রাইভেট লিমিটেডের মধ্যে স্বাক্ষরিত হল মউ চুক্তি। যার প্রধান উদ্দেশ্যই হল পূর্ব ভারতের অলিতে-গলিতে 'মোমজ অন হুইলস'-কে ছড়িয়ে দেওয়া।
এখন থেকে শুধু আর শিলিগুড়ি নয়, 'মোমোজ অন হুইলস' দৌড়বে ওড়িশা, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ছত্তিসগড়ের রাস্তাতেও। ফ্রেঞ্চ মোটেলস অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট প্রাইভেট লিমিটেডের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে, এপ্রিলের শুরু থেকেই এই চার রাজ্যে ১০০টি করে মোট ৪০০টি গাড়ি রাস্তায় নামাতে চলেছে 'মোমোজ অন হুইলস'। সঙ্গে থাকছে প্যাকেট মোমোও।
শিলিগুড়ির বাসিন্দা দেবায়ন বিশ্বাস ও তাঁর স্ত্রী তাসি ডোমা ভুটিয়া। তরুণ দম্পতির নিজস্ব কিছু করার তাগিদ আর সেইসঙ্গে সমাজের দুঃস্থ ও বেকার যুবক-যুবতীদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা। সেই তাগিদ আর চেষ্টাই একদিন রূপ পায় 'মোমোজ অন হুইলস'-এ। জনা দশেক স্থানীয় যুবক-যুবতীকে নিয়ে শুরু হয় ঠেলগাড়িতে করে মোমো বিক্রি। কঠোর পরিশ্রম আর লাগাতার চেষ্টায় পরিসরে বাড়তে থাকে স্টার্ট-আপ। গাড়িতে করে মোমো বিক্রির পাশাপাশি আসে ফ্রোজেন মোমো তৈরির ভাবনা। শুরু হয় প্যাকেটে করে মোমো বিক্রি। ২০১৫ সালে প্রথমবার রাজ্য সরকারের তরফে সফলতার স্বীকৃতি মেলে। এবার ২০১৭ বেঙ্গল বিজনেস সামিটে, রাজ্য সরকারের তরফে তরুণ উদ্যোগপতি হিসেবে সংবর্ধনা জানানো হয় দেবায়ন ও তাসিকে। এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গে 'মোমোজ অন হুইলস'-এর গাড়ি রয়েছে ৫৫টি।
এখন আরও বড় পরিকল্পনার রূপায়নে 'মোমোজ অন হুইলস'। পুরোদমে কাজ চলছে প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট ও ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্টের উপর। আরও বড়ভাবে রাস্তায় নামার আগে প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে। তবে শুধু ব্যবসা বাড়ানোর তাগিদই কি সাফল্যের কারণ? উত্তর দিলেন তাসি। বললেন, "নিঃসন্দেহে এটা আমাদের কাছে একটা বড় পদক্ষেপ। কিন্তু ব্যবসা করে শুধু লাভ করাই আমাদের লক্ষ্য নয়। রাস্তার জাঙ্ক ফুড খেয়ে অসুস্থ হন বহু মানুষ। আমরা চাই মানুষ আরও বেশি করে স্বাস্থ্য সচেতন হোক। মোমো একদিকে যেমন টেস্টি, তেমনই স্বাস্থ্যসম্মতও। আর হাইজিন বিষয়টা মোমোজ অন হুইলসে ভীষণভাবে নজরে রাখা হয়। এই মুহূর্তে এখন যেমন চলছে ফুড অ্যান্ড হাইজিন ট্রেনিং।"
শুধু কি তাই? কর্মসংস্থান তৈরিতেও নজির রেখেছে 'মোমোজ অন হুইলস'। সমাজের নিপীড়িত, নির্যাতিত, দুঃস্থ, অনাথ, বেকার, অপরাধ জগত থেকে সমাজের মূলস্রোতে ফিরতে চাওয়া যুবক-যুবতীদের পাশে দাঁড়িয়েছে মোমোজ অন হুইলস। 'মোমোজ অন হুইলস'-এর সাফল্যের নেপথ্যে কারিগর এরাও। এবার সেই কর্মসংস্থানের সুযোগই আরও বাড়তে চলেছে। আশাপ্রকাশ করেন শ্যামভালা ফুড প্রোডাক্টসের জেনারেল ম্যানেজার অনির্বাণ ঘোষ।
ফ্রেঞ্চ মোটেলস অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট প্রাইভেট লিমিটেডের ডিরেক্টর মণীশ দিলীপ থক্কর বললেন, "কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। মোমোজ অন হুইলসের এই উদ্যোগকে সফল করতে আমরা বদ্ধপরিকর। আরও সফলতা অপেক্ষা করে আছে মোমোজ অন হুইলসের জন্য।"
আরও পড়ুন, আঙুলের একছাপেই এবার বিল মিটিয়ে ফেলুন