পাড়ুই : প্রথমে সিপিএম, তারপর তৃণমূল, তারপর বিজেপি, তারপর আবার তৃণমূল। কেউ কেউ আবার ফিরেছেন সিপিএমে। বারবার দলবদল। পাড়ুইয়ের সাম্প্রতিক  ইতিহাসটাই বদলের আর বদলার ইতিহাস। বোলপুর, লাভপুর, নানুর, সাঁইথিয়া চার-চারটি বিধানসভা কেন্দ্রের অংশ পাড়ুই থানা এলাকা। আর প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রের সংঘর্ষের মূল এপিসেন্টারটাই পাড়ুই। তবে পাড়ুইয়ের অধিকাংশটাই বোলপুর বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে। আর তারমধ্যে সাত্তোর, চৌমণ্ডলপুর, বিলাতি, মাখড়াতো রাজ্য-রাজনীতির সংঘর্ষের ইতিহাসে এক-একটি অধ্যায়।


COMMERCIAL BREAK
SCROLL TO CONTINUE READING

২০০৯-এর শেষ থেকেই বদল শুরু পাড়ুইয়ে। লালদুর্গ পাড়ুইয়ে এখানে সেখানে উঁকি দিতে শুরু করে তৃণমূল। তবে জোড়া ফুলের চাষ করতে কম মেহনত করতে হয়নি অনুব্রতদের। টোটাল কন্ট্রোলে আনতে হয়েছে ইলামবাজারকে। পাড়ুইয়ের ভাতঘর ইলামবাজারের বালি আর গরুর হাট ২০১১-তেই পুরোপুরি তৃণমূলী। চার বারের বাম বিধায়ক তপন হোড়ের বিশ্বস্ত পাড়ুই বিশাল লিডে জয় দেয় চন্দ্রনাথ সিংকে।


কিন্তু ২০১৩-র শুরু থেকেই অর্থ-অনর্থের দ্বন্দ্বে পাড়ুই-এ বিজেপির ঘুসপেট। তৃণমূলের সঙ্গে চলা বামেরা এবং অসন্তুষ্ট তৃণমূল সদস্যরা যোগ দেয় বিজেপিতে। শুরু হল নতুন করে সংঘর্ষ, জমি দখলের লড়াই, উঠে আসে সদাই শেখ, নিমাই দাস, শেখ সামাদরা। রাহুল সিনহার মত বিজেপি নেতা ২০১৪-র শুরুতে, পাড়ুইয়ে ঘোষণা করেন সিঙ্গুরে যেমন তৃণমূলের উত্থান হয়েছিল, ঠিক তেমনি পাড়ুই থেকে শুরু হবে বিজেপির জয়যাত্রা। তারপর লড়াই আর লড়াই। কিন্তু ২০১৫-র শেষ আর ১৬-র শুরুতে অধিকাংশ স্থানীয় বিজেপি নেতা পুনরায় ফিরে যান তৃণমূলে। অভিযোগ ছিল মাঠে-ময়দানে লড়াই করা  বিজেপি কর্মীদের পাশে দাড়ায়নি রাজ্য নেতৃত্ব। নেতারা ফিরে গেলে কী হবে মাঠে-ময়দানের কর্মীদের? পাশে দাঁড়ায়নি কেউ।


জোটের উত্থানে পুনরায় লড়াইয়ের মাঠ খুঁজে পায় তাঁরা। তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলও সামাল দিতে পারেনি নেতৃত্ব। ফের লড়াই, সেই লড়াই শেষ হয় না ভোটের পরেও। কারণ লড়াইটা শুধুমাত্র ভোটের জন্য নয়, ভাতের জন্য, গ্রাম্য স্বাভিমানের জন্য। তাই ভোটের পর আবুবাক্কার মণ্ডলকে সিপিএম কর্মীদের মারধর। পাল্টা বোমাবাজি, মারধর তৃণমূলের। আর এতেই নতুন করে অশান্ত পাড়ুই।