শাসকের চাপে মুষিকের শার্দুল হওয়ার বাসনার অকালমৃত্যু!

কেউ বলছেন, মুষিক আবার আগের চেহারাতেই ফিরে এল। কারও আবার অভিযোগ, পুরোটাই গট আপ। শনিবার থেকেই একের পর এক খেল দেখিয়ে চলেছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সুশান্তরঞ্জন উপাধ্যায়। বিরোধীদের অভিযোগ, সুশান্তবাবু নিজের পদ এবং নির্বাচন কমিশন নামক সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা - দুটোকেই ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছেন। 

Updated By: Oct 6, 2015, 04:30 PM IST
শাসকের চাপে মুষিকের শার্দুল হওয়ার বাসনার অকালমৃত্যু!

ব্যুরো: কেউ বলছেন, মুষিক আবার আগের চেহারাতেই ফিরে এল। কারও আবার অভিযোগ, পুরোটাই গট আপ। শনিবার থেকেই একের পর এক খেল দেখিয়ে চলেছেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সুশান্তরঞ্জন উপাধ্যায়। বিরোধীদের অভিযোগ, সুশান্তবাবু নিজের পদ এবং নির্বাচন কমিশন নামক সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা - দুটোকেই ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছেন। 

অশান্তির পুরভোট। গণতন্ত্রের প্রহসন। ভোটে অশান্তির ছবি

সল্টলেক শাসন করছে বহিরাগতরা। মার খাচ্ছেন ভোটাররা। বাদ যাচ্ছেন না সাংবাদিকরাও। আসানসোল-বালিতেও কমবেশি গণতন্ত্রের
অন্তর্জলি যাত্রা!

সুশান্তবাবু কিন্তু বেশ শান্ত। হেলদোলহীন। নির্বিকার। দিনভর বিরোধীদের অভিযোগ। কমিশন অফিসে একের পর এক ফোন। কমিশনারের কানে তুলো, পিঠে কুলো। রাজ্যে যে নির্বাচন কমিশন বলে একটা বস্তু আছে, সেটাই বোঝা দায়!

ভোটের দিন বিকেল থেকেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনের অফিসে একজোটে ধর্নায় বসেন বিরোধীরা। দাবি একটাই। তিন পুরসভায় ভোট বাতিল। 

রবিবার সন্ধেয় সুশান্তবাবু বিরোধীদের জানালেন, ভোটে অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তাঁর কিছুটা সময় লাগবে। ততদিন ভোট গোনা বন্ধ। শুনে মনে হল, শান্তশিষ্ট সুশান্তবাবুর বুকের ছাতি একদিনেই ছাপ্পান্ন ইঞ্চি!

রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘাতে যাওয়ার 'বদনাম' সুশান্তবাবুর কোনওদিনই নেই। সেই তিনিই কিনা ভোট গোনা থামিয়ে দিচ্ছেন! শাসকদল বোধহয় গোড়াতে নিজেদের কানকেও বিশ্বাস করতে 
পারেনি। বিশ্বাস যখন হল তখনই সুব্রত বক্সি, পার্থ চট্টোপাধ্যায়রা কমিশন অফিসে পাল্টা ধর্নায় বসে গেলেন। 

চাপের মুখে মুষিকের শার্দুল হওয়ার বাসনায় ইতি। সুশান্তরঞ্জনবাবু আবার আগের চেহারায়। জানিয়ে দিলেন, আগামী শুক্রবার তিন পুরসভায় ভোট গোনা হবে। ভোট বাতিলের প্রশ্নই নেই। কয়েকটা মাত্র বুথে বৃহস্পতিবার ফের ভোট হবে।

সোমবার মাত্র দু-ঘণ্টার মধ্যেই একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে গেলেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার।

সন্ধে সাতটা। সুশান্তরঞ্জনবাবু সাংবাদিকদের বোঝাচ্ছিলেন, কেন তিনি ভোট গোনা বন্ধ রেখেছেন। বলছিলেন, সব অভিযোগ খতিয়ে দেখতে তাঁর সময় দরকার। 

দু-ঘণ্টার মধ্যেই ডিগবাজি! রাত ন-টা নাগাদ সুশান্তরঞ্জনবাবু জানিয়ে দিলেন শুক্রবার তিন পুরসভায় ভোট গোনা হবে। দু-ঘণ্টার মধ্যেই
কী ভাবে কমিশন একশো ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখল তা কারোরই মাথায় ঢুকছে না। 

সব দেখে শুনে বিরোধীদের কেউ বলছেন, শাসকদলের চাপের কাছেই শেষপর্যন্ত মাথা নোয়াতে বাধ্য হলেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার। কেউ বা আবার অভিযোগ করছেন, পুরোটাই আসলে গড়াপেটার খেলা। 

আইনের বই যাই বলুক না কেন, কোনও প্রতিষ্ঠান মর্যাদা অর্জন করে, সেই প্রতিষ্ঠান যিনি চালাচ্ছেন তাঁর গুনে। সরকারের অনুগত সুশান্তরঞ্জনবাবুর নেতৃত্বে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ভোটারদের আস্থা অর্জনে এগোতে পারছে কি?

.