এপিডিআরের মিছিলে তৃণমূলের হামলা, পেটাল পুলিস

মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর-এর মিছিলে হামলা চালাল তৃণমূল। নোনাডাঙায় বস্তি উচ্ছেদ-সহ রাজ্য সরকারের সাম্প্রতিক বিভিন্ন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কলকাতার হাজরা মোড় থেকে মিছিলের আয়োজন করেছিল এপিডিআর। অভিযোগ, মিছিল শুরুর আগেই তৃণমূল কর্মীরা হামলা চালায়।

Updated By: Apr 12, 2012, 01:49 PM IST

মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর-এর মিছিলে হামলা চালাল তৃণমূল। নোনাডাঙায় বস্তি উচ্ছেদ-সহ রাজ্য সরকারের সাম্প্রতিক বিভিন্ন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কলকাতার হাজরা মোড় থেকে মিছিলের আয়োজন করেছিল এপিডিআর। অভিযোগ, মিছিল শুরুর আগেই তৃণমূল কর্মীরা হামলা চালায়। পুলিসের উপস্থিতিতেই চলে হামলা। এর পর পুলিস হামলাকারীদের না-ধরে, এপিডিআর কর্মীদের মারধর করে প্রিজন ভ্যানে তোলা হয় বলে অভিযোগ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হাজরা চত্বর।
হাজরায় এপিডিআর কর্মীদের ওপর আক্রমণের সমালোচনা করে বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, "প্রতিশ্রুতির বিনিময়ে যাদের সমর্থনে এই সরকার ক্ষমতায় এসেছে, তাদেরই এখন মারছে। এই সরকার কোন দিকে যাচ্ছে মানুষ বুঝতে পারছে।"
তবে যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে পরিবহণ মন্ত্রী ও তৃণমূল নেতা মদন মিত্র অবশ্য বলেন, "তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ সত্য নয়। তৃণমূল ১৮৫টি আসন নিয়ে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতায় ক্ষমতায় আছি। আগামী ৪ বছরে আমাদের ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ারও কোনও কারণ দেখি না। তাই আমাদের ছেলেরা মারধর করতে যাবে কেন?"
যদিও ছবি বলছে অন্য কথা। ক্যামেরা যে কয়েকজন মারমুখি যুবকের ছবি ধরা পড়েছে তাদের কয়েকজনকে ইতিমধ্যেই সনাক্ত করা গিয়েছে। তাদের মধ্যে একজন (যার নাম ময়না বলে জানা গিয়েছে) তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী হিসাবে এলাকায় পরিচিত। এছাড় শম্ভু ও সন্তু নামে আরও দুই তৃণমূলকর্মী ঘটনায় যুক্ত বলে অভিযোগ। পুলিসের সামনেই এপিডিআর কর্মীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তারা। অথচ তৃণমূলের দাবি, এলাকায় ছিলেনই না কোনও তৃণমূলকর্মী।
মদনবাবুর পাল্টা অভিযোগ, "এদিনের মিছিলকারীরা নকশালপন্থী। তারা মাওবাদী ঘনিষ্ঠ।"
পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ নয় দাবি জানিয়ে তৃণমূলী হামলার তীব্র প্রতিবাদ করেছেন কবি শঙ্খ ঘোষ, মানবাধিকারকর্মী সুজাত ভদ্র, সাহিত্যিক নবারুণ ভট্টাচার্য সহ সমাজের বিভিন্ন বিশিষ্টজনেরা। ঘটনার নিন্দা করেছেন শিল্পী-সাহিত্যিকরাও।
হাজরার ঘটনার প্রতিবাদে আকাদেমির সামনে এক সভার আয়োজন করেন বুদ্ধিজীবী মহল। সভায় উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল সাংসদ এবং গায়ক কবীর সুমন, শিক্ষাবিদ সুনন্দ সান্যাল, নকশাল নেতা অসীম চট্টোপাধ্যায়, নাট্যব্যক্তিত্ব কৌশিক সেন, সুমন মুখোপাধ্যায় প্রমুখ।
একই কারণে এদিন দিল্লিতে বঙ্গভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছে ২২টি গণসংগঠন। বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে বারোটা নাগাদ দিল্লির বঙ্গভবনের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান বাইশটি গণসংগঠনের প্রতিনিধিরা। পাশাপাশি, নোনাডাঙার ঘটনায় পুলিসের ভূমিকা নিয়ে সরব হন তাঁরা। যেভাবে উচ্ছেদ বিরোধী আন্দোলনের কর্মীদের পুলিস আটক বা গ্রেফতার করে, তার প্রতিবাদ জানান গণসংগঠনের প্রতিনিধিরা। এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে স্লোগানও দেওয়া হয়। পুনর্বাসন ছাড়া কেন উচ্ছেদ করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিক্ষোভকারীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিস। বেলা দেড়টা পর্যন্ত চলে বিক্ষোভ। মহাকরণে মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য জানিয়েছেন, তিনি হাজরার ঘটনা সম্পর্কে কিছুই জানেন না।

.