Kamaleshwar Mukherjee: অষ্টমীর সন্ধ্যায় আটক পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, প্রতিবাদে টলিউড

Kamaleshwar Mukherjee: উৎসবের জোয়ারে ভাসমান শহর কলকাতা। এরই মাঝে অষ্টমীর রাতে  সিপিএমের বই বিপণি ঘিরে ধুন্ধুমার। সিপিএমের অভিযোগের তির শাসকদলের দিকে। এই গন্ডগোলের জেরেই এদিন আটক করা হয় পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়। তাঁকে আটকের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে সোশ্যাল মিডিয়া। 

Updated By: Oct 5, 2022, 03:02 PM IST
Kamaleshwar Mukherjee: অষ্টমীর সন্ধ্যায় আটক পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, প্রতিবাদে টলিউড

জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: শহর জুড়ে উৎসবের মরসুম, কিন্তু এর মাঝেই বই বিপণিকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার তিলোত্তমা। সপ্তমীর রাতে রাসবিহারী চত্বরে প্রতাপাদিত্য রোডে সিপিএমের বই বিপণিতে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়, এমনটাই অভিযোগ করা হয়। তাঁদের দাবি যে তৃণমূলের ‘আশ্রিত দুষ্কৃতী’রা এই হামলা চালিয়েছে। ওই বইয়ের বিপণিতে ‘চোর ধরো, জেল ভরো’র পোস্টার দেখেই চটেছে শাসক দলের সদস্যরা, টালিগঞ্জ থানায় দায়ের হয় অভিযোগ। অষ্টমীর বিকেলে সেখানেই একটি প্রতিবাদ সভার ডাক দিয়েছিল সিপিএম। সোমবার সেই প্রতিবাদ সভা ঘিরে ফের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সেই সময়ই আটক করা হয় পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য সহ আরও কয়েকজনকে।

পড়ুন, বাঙালির প্রাণের উৎসবে আমার 'e' উৎসব। Zee ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল শারদসংখ্যা

সোমবার সকালে সোশ্যাল মিডিয়ায় পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় লেখেন, ‘জানি আজ অষ্টমী -আনন্দের দিন। তবু, এই আবেদন জানাতে বাধ্য হচ্ছি। সহমত হলে এই বক্তব্য ছড়িয়ে দিতে বিশেষ অনুরোধ করছি। শুভদীপ গাঙ্গুলী রাসবিহারী অঞ্চলে বসবাসকারী জনৈক বামপন্থী মানুষ - অঞ্চলের সমাজকর্মী এবং নিজস্ব পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকা একজন নির্বিরোধী লোক। শুভদীপ মূলত বাংলা ও বিশ্ব সাহিত্যের একনিষ্ট পাঠক। লেখালিখির কাজ করে শুভদীপ। কাল সন্ধ্যেয় শুভদীপ আক্রান্ত হলেন। সপ্তমীর দিন সন্ধ্যেয় (গতকাল) রাসবিহারীতে ভারতের মার্ক্সবাদী কমিউনিস্ট পার্টি আয়োজিত বইয়ের স্টলে শুভদীপ ও তাঁর অগ্রজসম রানাদা বসেছিলেন। সেই সময় অঞ্চলের শাসক দল আশ্রিত দুই দুষ্কৃতী (সান্টু ও গদাইয়ের নেতৃত্বে কয়েকজন সমাজবিরোধী এসে রাসবিহারীর সেই বইয়ের স্টল আক্রমণ করে, বইয়ের স্টল ভেঙে দেয় ও শুভদীপ ও রানাদাকে মারধর করে। গোটা ঘটনাটাই কর্মরত পুলিশের চোখের সামনেই ঘটে এবং পুলিশ নির্বিকার মুখে দাঁড়িয়ে ঘটনাটা দেখে। সংলগ্ন কালীঘাট অঞ্চলের কমরেডরা এসে শুভদীপ ও রানাদাকে বাঁচান এবং পরিস্থিতি সামাল দেন - যদিও তাঁরা যথেষ্ট আহত। নিয়মানুগভাবে, ঘটনার পরে, এই আক্রমণের কথা বিবৃত করে টালিগঞ্জে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।’

আরও পড়ুন: Durga Puja 2022 : সঙ্গে বাবা-মা এবং স্বামী, ট্রাডিশনাল সাজে মল্লিক বাড়ির পুজোয় কোয়েল

তিনি জানান যে, অষ্টমীর বিকেল ৫টায় ওই জায়গায় একটি প্রতিবাদ সভা সংগঠিত হতে চলেছে। সেই প্রতিবাদ সভায় কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী তথা সাংসদ বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য, রবীন দেব, সিপিএমের কলকাতা জেলা সম্পাদক কল্লোল মজুমদার সহ আরও অনেকে। প্রতিবাদ-সভা এবং বই বিপণি ফের চালু করার সময়ে ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। সিপিএমের অভিযোগ, তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা হামলা চালালেও আটক করা হয়েছে প্রতিবাদীদের।

এদিন পরিচালকের আটক নিয়ে ট্যুইটারে নিন্দায় সরব হয় টলিউড। সৃজিত মুখোপাধ্যায় লেখেন, ‘বইয়ে ভীত? কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করার নিন্দার ভাষা নেই। মূল্য যাই হোক, তোমার সঙ্গে আছি কমলদা।’ আবীর চট্টোপাধ্যায় লেখেন, ‘আমরা তোমায় ভালোবাসি কমলদা। তোমাকে নিয়ে গর্বিত।’ কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় লেখেন, ‘ডাক্তারবাবু ক্ষতিটা কিন্তু তোমার হচ্ছে না।’ অভিনেতা অনিন্দ্য চট্টোপাধ্যায় টুইট করেন, ‘এক কথায় অপ্রীতিকর, একরাশ ধিক্কার।’ পরিচালক অনিরুদ্ধ রায় লেখেন, ‘কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের গ্রেফতারি লজ্জাজনক। এবং কারণ কী? একটা বই স্টলের জন্য, সঙ্গে আছি কমল।’

সোমবার কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, ‘বামপন্থীরা বহু বছর ধরেই(ক্ষমতায় থাকা বা না থাকাকালীন) পুজোর সময় বিভিন্ন অঞ্চলে বইয়ের স্টল দিয়ে থাকেন। অনেকেই স্বেচ্ছায় বই কেনেন (যেমন মানুষ বই কেনেন বই মেলায়) । সেই সব স্টলে মার্ক্সীয় দর্শন বা প্রয়োগের ওপর লেখা বই ছাড়াও অনেক প্রথিতযশা সাহিত্যিকের সাহিত্যকর্ম থাকে। প্রশ্ন হলো, বই বিক্রি করে জনসাধারণের চেতনার উন্মেষ ঘটানোর প্রক্রিয়া কি গণতান্ত্রিক নয়? বইয়ের স্টল থেকে তো কাউকে জোর করে বই কিনতে বলা হয় না এবং তা পুজোর আনন্দে কখনো ব্যাঘাত ঘটায় না। সেক্ষেত্রে বামেদের দেওয়া বইয়ের স্টল ভেঙে দেওয়া বা স্টলে বসা মধ্যবয়স্ক ও প্রৌঢ় মানুষকে মারধর করার কোন রাজনৈতিক যুক্তি আছে কী ? এ ঘটনা গণতান্ত্রিক মানুষকে ভাবাবে না ? যাঁরা বই লেখেন, পড়েন বা পাবলিস করেন তাঁদের এই প্রতিবাদে অংশ নেওয়া উচিৎ নয় কী ? যাঁরা বামপন্থায় বিশ্বাস রাখেন বা বাম ঐক্যের কথা বলেন তাঁদের এই প্রতিবাদ সভায় অংশ নেওয়া প্রয়োজন নয় কী ? সংশ্লিষ্ট জনমাধ্যমের কর্মীদেরও কী আমরা পাশে পাবো না ? নতুবা এই শাসক দল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ও নিষ্ক্রিয় পুলিশ প্রশাসন একদিন আপনার হাতের বইটাও কেড়ে নেবে।’

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App) 

.