হিম্মত থাকলে শেষ অবধি দেখুন

হেডিংটা হেলাফেলার নয়, বিশেষ তাত্পর্যপূর্ণ। অন্তত আমার তো বার পাঁচেক মনে হয়েছিল নমস্কার ঠুকে উঠে পড়ি। নেহাত রিভিউ করতে এসে মাঝপথে উঠে পড়াটা বেআইনি বলে পারিনি। কাজেই যাঁরা ইতিমধ্যে ছবিটা দেখতে যাব-যাব করছেন, তাঁদের জন্য কয়েকটা স্ট্যাচুটরি ওয়ার্নিং দিয়ে রাখলাম। তার আগে দুচার কথা বলা অবশ্যকর্তব্য।

Updated By: Apr 7, 2013, 01:55 PM IST

শর্মিলা মাইতি
ছবির নাম- হিম্মতওয়ালা
রেটিং- শূন্য
হেডিংটা হেলাফেলার নয়, বিশেষ তাত্পর্যপূর্ণ। অন্তত আমার তো বার পাঁচেক মনে হয়েছিল নমস্কার ঠুকে উঠে পড়ি। নেহাত রিভিউ করতে এসে মাঝপথে উঠে পড়াটা বেআইনি বলে পারিনি। কাজেই যাঁরা ইতিমধ্যে ছবিটা দেখতে যাব-যাব করছেন, তাঁদের জন্য কয়েকটা স্ট্যাচুটরি ওয়ার্নিং দিয়ে রাখলাম। তার আগে দুচার কথা বলা অবশ্যকর্তব্য। ফি-বছর এই যে রিমেকের হিড়িক, হিম্মতওয়ালা নিঃসন্দেহে এ বছরের স্বঘোযিত razzy award পাচ্ছে। যদিও এ ধরনের কোনও ভারতীয় ভার্সান নেই, কিন্তু এ ছবি দেখে মনে হল অবিলম্বে এরকম একটা কিছু চালু হওয়া উচিত।

সবার আগে সেলাম সাজিদ খান। তাঁর গবেষণা টিমকেও। ১৯৮৩ সালের একটি আপাদমস্তক খারাপ ছবিকে, কবর খুঁড়ে তুলে আনার জন্য। পয়েন্ট টু বি নোটেড, জিতেন্দ্রর অ্যাক্রোব্যাটিকস আর শ্রীদেবীর থান্ডার থাই, এই দুটো কয়েনেজ অবশ্য বেশ সফলভাবে করতে পেরেছিল এই ছবি। বাদবাকি, না পরিচালক, না অভিনেতা-অভিনেত্রী, কারওর সিভিতেই এ ছবি উঁচুর দিকে জায়গা পায়নি। রিমেক বানানোর বেশ কিছু সুবিধে আছে। কাঠামো পেলে যেমন জলদি প্রতিমা বানানো হয়ে যায়, তেমনি একটা গল্প ঠিক থাকলে ছবির শুটিং-এর কাজটা তরতর করে এগোয়, এডিটিংও হয়ে যায় দ্রত। সবচেয়ে বড় কথা, নবীন পরিচালকেরা এই যে বিখ্যাত ছবির পার্ট টু, `রিটার্নস`, কিংবা `ফির`-এর চক্করে পড়লেও, কিছুটা নিজের কেরামতি দেখানোর চেষ্টা করে। এই যেমন চরিত্রেরা কালো-কালো ল্যান্ডফোনের বদলে চকচকে মোবাইল ব্যবহার করে, অ্যাম্বাসাডরের বদলে অডি চালায়, একটু নতুন নতুন ড্রেস আপ করে, ইত্যাদি। এখানে সাজিদ খান সততার পুরস্কার পাবেন। কিংবা ব্রেভারি অ্যাওয়ার্ডও পেতে পারেন। টপ টু বটম চিত্রনাট্য ফলো করেছেন। অবশ্য স্ট্রিটফাইটিং সিকোয়েন্স বাদে। শুধু জিতেন্দ্রর জায়গায় অজয় দেবগণ, শ্রীদেবীর জায়গায় তমান্না।

এ ছবি নিয়ে বিশেষ কিছু বলার নেই। ছেলে-বুড়ো সকলে সপরিবারে দেখার মতো নাচে-গানে-অ্যাকশনে ভরপুর জমজমাট রঙিন হিন্দি ছবি। বুড়ো বললাম তাদেরই যাঁরা ১৯৮৩ সালে জোয়ান ছিলেন, এবং যাঁরা এখন রিটায়ার করেছেন বলে বউ বেশিক্ষণ বাড়িতে থাকতে দিতে চায় না। সপরিবারে বললাম, কারণ আপনার বাড়িতে যদি বেয়াড়া দুষ্টু বাচ্চা থাকে, তাকে এ ছবি দেখাতে নিয়ে গেলে সিটে বসা দর্শকরা খানিক এন্টারটেনড হবেন ওর চিলচিত্কারে। বাকিটা রিকশা করে শিঙে ফুঁকতে ফুঁকতে বিজ্ঞাপনে যে ভাষা প্রয়োগ করা হত, সেই ভাষাতেই বিজ্ঞাপনী ঠাটে লিখেছি। যা বোঝার আপনারা বুঝে নিন। তবে আর একটা খুব ভাল ব্যাপার আছে অবশ্যই। নায়িকা তমান্না। নিন্দুকের মুখে ছাই দিয়ে বড়ই ভাল অভিনয় করেছেন গোলাপ-বরণ, আয়তনয়ন এই নায়িকা। ফ্রেশ ফেস ফিরে দেখার জন্য ইউটিউব আছে। এ ছবি ফিরে দেখার বিশেষ প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না।
হিম্মত থাকলে শেয অবধি অবশ্যই দেখবেন। কিন্তু পকেটে সরবিট্রেট জাতীয় কিছু রাখবেন। যদিও আমি ডাক্তার নই, তবু এগুলো ওভার দ্য কাউন্টার পাওয়া যায় বলে শলা দিলাম। না হলে মাথার খুলি ফেটে ঘিলু বেরিয়ে আসতে পারে। শেষ দিকে কানে ইয়ার-প্লাগ গুঁজে নেবেন। নচেত্ কানের ফুটো দিয়েও ব্যাপারটা হয়ে যেতে পারে, বলা যায় না!

.