Inequality in Judgment: প্রতি পদে ঘোর অসাম্যের শিকার মেয়েরা; বিচারের তির্যকতায় সদাবিদ্ধ

এ বোধ করি, সভ্যতার সুগভীর দ্বিচারিতা; সমাজের মুখ ও মুখোশের নিগূঢ় অন্তর্দ্বন্দ্ব।

Updated By: Aug 26, 2021, 11:09 PM IST
Inequality in Judgment: প্রতি পদে ঘোর অসাম্যের শিকার মেয়েরা; বিচারের তির্যকতায় সদাবিদ্ধ

সৌমিত্র সেন

কাকতালীয়? তা  বোধ হয় একেই বলে। আজ, ২৬ অগাস্ট  Women’s Equality Day, আর এদিকে সদ্য মা হওয়া সাংসদ-অভিনেত্রী নুসরত জাহানকে তাঁর মাতৃত্ব এবং সন্তানজন্ম নিয়ে হাজারো বাঁকা কথা শুনতে হল এই আবহেই।

শুনতে হচ্ছে, এমন অশালীন কথাও যে, নুসরতের সন্তানের প্রকৃত বাবা কে? যে-বিষয়টি একজন মাতৃত্বকামী এবং মাতৃত্ব অর্জনকারী নারীর একেবারে অতি ব্যক্তিগত অতি নিজস্ব এক সিদ্ধান্ত, খামোখা সেই সিদ্ধান্ত বিষয়েই নগ্ন তির্যকতার লক্ষ্য হতে হচ্ছে এই তাঁকে!

অর্থাত্‍, সেই নারীর অধিকার লঙ্ঘন। এমন একটা দিনে যেদিনটি আবার নারী অধিকার সুরক্ষার দিন বিশেষ! যেদিনটিতে এই তথাকথিত সভ্য ও আধুনিক সমাজের পুরুষেরা নারী-অধিকার নিয়ে সভা-সমিতিতে বলতে গিয়ে টেবিল ভেঙে ফেলে! না, একে সম্ভবত আর নিছক কাকতালীয় বলা চলে না! এ বোধ করি, সভ্যতার সুগভীর দ্বিচারিতা; সমাজের মুখ ও মুখোশের নিগূঢ় অন্তর্দ্বন্দ্ব ও বৈপরীত্যের অলজ্জ প্রদর্শনী।

নুসরতের প্রসঙ্গ আরও উঠছে অন্য আর এক কারণে। আজই একটি পুরনো বিতর্কের ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। স্মোকিং কন্ট্রোভার্সি। যার সঙ্গে জড়িত রণবীর কাপূর এবং মাহিরা খান।     

রণবীর কাপূর এবং মাহিরা খানের 'সম্পর্ক' একটা সময়ে গোটা দেশের চর্চার বিষয় হয়ে পড়েছিল এই ছবির দৌলতে। সদ্য শাহরুখ-মাহিরা অভিনীত 'রইস' মুক্তি পেয়েছে। তার ঠিক পর-পরই New York City-তে তোলা একটি ফোটোগ্রাফে রণবীর ও মাহিরাকে ধূমপান করতে দেখা গিয়েছিল। ব্যস‌! দুনিয়া রসাতলে গেল। এক মহিলা হয়ে ধূমপান এবং শুধু তাই-ই নয়, সেটা প্রকাশ্যে! 

আরও পড়ুন: Nusrat Jahan: তারকা সাংসদ নুসরতকে অভিনন্দন মুখ্যমন্ত্রী Mamata Banerjee-র

দেশ জুড়ে মাহিরার বিপুল সমালোচনা শুরু হয়েছিল। নানা বিচিত্র প্রশ্ন ও নীতিপুলিসগিরির মুখোমুখি হতে হয়েছিল মাহিরাকে। তখন রণবীর ভয়াবহ ট্রোলিংয়ের শিকার মাহিরার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। পরিষ্কার করে বলেছিলেন, শুধু একজন মহিলা বলেই মাহিরার এই সমালোচনার স্বীকার হওয়াটা লজ্জার, অনুচিতও। 

বলেছিলেন। একশোবার ভাল কাজ করেছিলেন রণবীর। তবে সেটা ব্যতিক্রমীই। কেননা, রণবীরের সেই বাচনে আদতে এ সমাজের চোখ খোলেনি। খোলেনি যে, তা মা হয়ে আবার প্রমাণ করে দিলেন নুসরত। 

নুসরতের জন্যও কণ্ঠ আছে। নুসরত মা হতে চেয়েছেন, হয়েছেন, কার ঔরসজাত সন্তান তা নিয়ে মাথা ঘামানোর কোনও প্রয়োজন নেই-- এই মর্মে আমাদের সদা-উত্‍কর্ণ সদানীতিনিষ্ঠতার আড়ালমগ্ন সমাজকে বিঁধেছেন তসলিমা নাসরিন। 

বিঁধলেন তো! কাজ হবে? চেতনা ফিরবে সেই একাংশের যাঁরা আজও কিছুতেই একক নারীর নিজস্বতা সৃজনশীলতা, স্বাধীনতা, 'চয়েস'কে কোনও মতেই গুরুত্ব দিতে নারাজ! না হলে সেই সুদূর ১৯৭৩ সালে তো মার্কিন প্রেসিডেন্ট Richard Nixon-এর আমলে ২৬ অগাস্ট  দিনটি Women's Equality Day হিসেবে ঘোষিত হয়েছে। তারপর গঙ্গা-মিসিসিপি দিয়ে কম জল তো বয়ে যায়নি! তা হলে তার পরেও মাহিরা-কাণ্ড, নুসরত-কাণ্ড  ঘটে কেন?   

(Zee 24 Ghanta App : দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App)

আরও পড়ুন: কার ঔরসজাত সন্তান সেটা বড় কথা নয়, Nusrat মা হতে চেয়েছেন এটাই বড় কথা: Taslima Nasrin

.