ভঁবরি দেবী হত্যা মামলার বিচার শুরু

মঙ্গলবার ভঁবরি দেবী হত্যা মামলার বিচারপর্ব শুরু হল যোধপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতে। ৩৫ বছরের এই নার্স'কে অপহরণ ও হত্যার চাঞ্চল্যকর মামলার ১৩ জন অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছেন, রাজস্থানের প্রাক্তন জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী মহীপাল মদেরনা,  রাজ্যের প্রভাবশালী কংগ্রেস বিধায়ক মালখান সিং বিশনই ও তাঁর ভাই পরশরাম বিশনই।

Updated By: Apr 2, 2012, 11:56 AM IST

মঙ্গলবার ভঁবরি দেবী হত্যা মামলার বিচারপর্ব শুরু হল যোধপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতে। ৩৫ বছরের এই নার্স'কে অপহরণ ও হত্যার চাঞ্চল্যকর মামলার ১৩ জন অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছেন, রাজস্থানের প্রাক্তন জলসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী মহীপাল মদেরনা,  রাজ্যের প্রভাবশালী কংগ্রেস বিধায়ক মালখান সিং বিশনই ও তাঁর ভাই পরশরাম বিশনই।
অন্যান্য অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছে, সোহনলাল, শাহাবুদ্দিন এবং বলদেভ নামে তিন মহীপাল-অনুগামী এবং ভঁবরী দেবির স্বামী অমরচাঁদের নামও। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি সিবিআই-এর তরফে আদালতে পেশ করা সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট ও ৩১৩ পাতা আনুষঙ্গিক নথিপত্র পেশ করা হয় আদালতে। মোট ৩০০ জন সাক্ষীর বয়ান লিপিবদ্ধ করা হয়েছে এই চার্জশিটে। সিবিআই-সূত্রে খবর, তথ্যপ্রমাণ হাতে এলে মালখানের বোন ও বোন ইন্দিরা দেবীর নামও পরবর্তীকালে চার্জশিটে অন্তর্ভূক্ত করা হতে পারে।
গত ১ সেপ্টেম্বর রহস্যজনক ভাবে উধাও হয়ে যান রাজস্থানের জালিওয়ারা গ্রামের উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের নার্স ভঁবরি দেবী। খবরে প্রকাশ পায়, মহীপালের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল পঁয়িত্রশ  বছরের এই নার্সের। ভঁবরি দেবীর স্বামী অমরচাঁদ নাথ অভিযোগ করেন, মন্ত্রীর অনেক কুকীর্তি জেনে ফেলায় তাঁর স্ত্রীকে খুন করে লাশ গায়েব করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে পুলিস নিশ্চেষ্ট থাকলেও শেষ পর্যন্ত আদালতের নির্দেশে যোধপুরের কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। মহীপালের বাবা পরশরাম মদেরনা রাজস্থানের অন্যতম প্রভাবশালী জাঠ নেতা। ফলে পুরো ঘটনায় যথেষ্ট চাপে পড়ে কংগ্রেস নেতৃত্ব। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিরোধী শিবিরের নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি মেনে মামলার ভার সিবিআইকে দেন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট। এর পরই কংগ্রেস নেতৃত্বের তরফে মহীপালকে পদত্যাগের জন্য চাপ দেওয়া হয়। কিন্তু কোনও অবস্থাতেই তিনি ইস্তফায় রাজি না হওয়ায় চরম পদক্ষেপ করতে বাধ্য হন মুখ্যমন্ত্রী গেহলট। গত ১৬ অক্টোবর মন্ত্রিত্ব থেকে বরখাস্ত করা হয় মহীপালকে। 

তদন্ত নেমেই বালিয়ারা-পিপারা এলাকার চুনের কারখানার তল্লাসি চালিয়ে ভঁবরি দেবী হত্যা সংক্রান্ত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদ্ধার করে সিবিআই। অনতিদূরের ইন্দিরা গান্ধী ক্যানাল থেকে মেলে পাওয়া যায় ভঁবরি দেবীর দগ্ধ দেহাবশেষ। শাহাবুদ্দিনের গাড়ি থেকে মেলে ভঁবরি দেবীর রক্তমাখা জামাকাপড়, মাথার চুল ও লকেট। এর পর ২ ডিসেম্বর মহীপালকে গ্রেফতার করে সিবিআই।
মহীপাল মদেরনার পাশাপাশি ভঁবরী দেবি মামলার গোড়াতেই আলোচনার শিরোনামে চলে আসে কংগ্রেস বিধায়ক মালখান সিং বিশনই এবং তাঁর বোন ইন্দিরা বিশনইয়ের নাম। তাঁদের জেরা করে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পায় সিবিআই। উদ্ধার হয়, ইন্দিরা বিশনই এবং ভঁবরি দেবীর টেলিফোন কথোপকথনের কয়েকটি টেপ। মহীপালের সঙ্গে ভঁবরিদেবীর অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ভিডিও টেপও প্রকাশ্যে আসে। সিবিআই-এর অভিযোগ, মহীপালে ও মালখানের সঙ্গে অন্তরঙ্গ সম্পর্কের একটা পরিণতি চেয়েছিলেন ভঁবরিদেবী। প্রথমে জেলা পরিষদ সভাধিপতি হতে ও পরে বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের টিকিট চেয়ে বিফল মনোরথ হওয়ার পর মহীপাল মদেরনা এবং মালখানকে কে ব্ল্যাকমেল করার চেষ্টা করেন ভঁবরি। আর এর ফলেই তাঁর জীবনের অন্তিম মুহূর্ত ঘনিয়ে আসে।

.