রাজ্যে প্রধান বিরোধী BJP-ই তো? চারে তিন কেন্দ্রে জব্দ জামানত, ময়নাতদন্ত Zee ২৪ ঘণ্টার

বাংলায় বিজেপির ভবিষ্যৎ কী?

Updated By: Nov 2, 2021, 07:33 PM IST
রাজ্যে প্রধান বিরোধী BJP-ই তো? চারে তিন কেন্দ্রে জব্দ জামানত, ময়নাতদন্ত Zee ২৪ ঘণ্টার

শুভঙ্কর মিত্র: রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল। মাস কয়েক আগেও বাংলায় দুশো আসন জয়ের লক্ষ্যে নেমেছিল। উপনির্বাচনে সেই বিজেপি জামানত বাঁচানোর লড়াইয়ে পর্যুদস্ত! তিন কেন্দ্রেই জামানত জব্দ হয়েছে মোদী-শাহের দলের। এর মধ্যে একটি আসন দিনহাটায় আগেরবার জিতেছিল তারা।

গত বিধানসভা ভোটে দিনহাটায় নীতীশ প্রামাণিক পেয়েছিলেন ১ লক্ষ ১৬ হাজার ৩৫ ভোট। মাত্র ৫৭ ভোটের ব্যবধানে উদয়ন গুহকে হারিয়েছিলেন বিজেপি প্রার্থী। ওই কেন্দ্রেই উপনির্বাচনে বিপর্যস্ত গেরুয়া শিবির। লাখের ভোট নেমে এল ২৫ হাজার ৪৮৬-তে। উত্তরবঙ্গের গেরুয়া দুর্গে জেতা আসনেই জামানত বাজেয়াপ্ত হলে দক্ষিণবঙ্গে কী হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। হয়েছেও তাই! গোসাবায় বিজেপি প্রার্থী ভোট পেয়েছেন ১৮ হাজার ৪২৩। খড়দহে ২০,২৫৪ ভোট গিয়েছে বিজেপির ঝুলিতে।   

কেন জামানত জব্দ? 

গত বিধানসভা ভোটেও বিজেপির প্রচারের ঢক্কানিনাদে মনে হচ্ছিল এই বুঝি রাজ্যের পালাবদল ঘটতে চলেছে। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই সেই দলের এহেন পরিণতি! উপনির্বাচনে সাধারণভাবে শাসক দলের দিকেই হাওয়া থাকে। তা বলে চারের মধ্যে তিন আসনে জামানত জব্দ! এটা তো স্বাভাবিক প্রবণতা নয়। জনতা-জনার্দন কেন অখুশি হলেন? পেট্রোল, ডিজেল ও রান্নার গ্যাসের ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধিতে হাঁসফাঁস সাধারণের হেঁশেল। তাই মানুষের ক্ষোভের মুখে পড়েছে কেন্দ্রের শাসক দল। গত বিধানসভা ভোটে দিনহাটা ও শান্তিপুরে জিতেছিল বিজেপি। কিন্তু সাংসদ থাকতে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন নীতীশ প্রামাণিক ও জগন্নাথ সরকার। এটা যে মানুষ ভালোভাবে নেননি তা ফলাফলে স্পষ্ট।                    

রাজ্যে বিজেপির ভরাডুবির পর রাজ্য সভাপতি ছাড়া কোনও সাংগঠনিক বদল হয়নি। কৈলাস বিজয়বর্গীয়, অরবিন্দ মেননরা স্ব-পদে বহাল রয়েছেন। ভোটের পর যাঁদের দলে নিয়েছিল বিজেপি, তাঁরা সকলেই নিজের ঘরে ফিরে গিয়েছেন। প্রশ্ন উঠছে, জেলা ও রাজ্য নেতাদের ঠুঁটো জগন্নাথ করে যাঁরা সিদ্ধান্ত নিলেন তাঁরা হারের দায় নিয়ে সরবেন না? সবমিলিয়ে বিজেপির অন্দরেই দেখা দিয়েছে উদ্যমের ঘাটতি।   
 
বিজেপির সংগঠনে যখন গয়ংগচ্ছ ভাব তখন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো তরুণকে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক করে তৃণমূল ঝাঁপিয়ে পড়েছে গোয়া-ত্রিপুরায়। পাশাপাশি আগামী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তৃণমূল নেত্রীকেই বিকল্প হিসেবে তুলে ধরছে ঘাসফুল শিবির। এতে উজ্জীবিত হয়েছেন তৃণমূল কর্মীরা। তার জের পড়েছে ইভিএমে-র ফলে। 
     
ভোটের পর থেকে হিংসার অভিযোগ করে আসছেন বিজেপি নেতারা। অথচ হিংসাগ্রস্ত এলাকায় যাওয়া বা কর্মীদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টায় খামতি থেকে গিয়েছে। দিল্লির 'ডেইলি প্যাসেঞ্জার' নেতারাও আর বাংলা নিয়ে ভাবেননি। ২০০৪ সালে মমতার এক সাংসদের দল হওয়ার নজির টেনে অনুপ্রেরণা খুঁজছেন বিজেপি নেতারা। কিন্তু তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতাকে কি সত্যিই অনুসরণ করতে পেরেছেন? তখন কোনও ঘটনা ঘটলেই সশরীরে হাজির হতেন মমতা। তা নন্দীগ্রামই হোক বা সিঙ্গুর- নির্যাতিত কর্মীদের পাশে তিনি নির্ডর সুমন্ত্র সারথী। 
    
বাংলায় বিজেপির ভবিষ্যৎ কী? বিধানসভা নির্বাচন, উপনির্বাচনের সঙ্গে বিরাট ফারাক রয়েছে লোকসভা ভোটের। লোকসভা ভোটে নরেন্দ্র মোদী হবেন বিজেপির মুখ। কিন্তু ভারী ভারী নাম দিয়ে যে ভোটে জেতা যায় না! নইলে ২০০১ সালেই ক্ষমতায় আসতে পারত তৃণমূল। রাজনীতির কারবারিরা তাই বলছেন, পোক্ত সংগঠন ছাড়া বাংলায় যে পদ্ম ফুটবে না সেটা এবার বুঝতে হবে বিজেপিকে।

আরও পড়ুন- WB By-poll Results: ভোট সন্ত্রাসে ভরাডুবি, তিন আসনে জামানত জব্দের ব্যাখ্যায় Dilip-Samik

(Zee 24 Ghanta App দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির লেটেস্ট খবর পড়তে ডাউনলোড করুন Zee 24 Ghanta App) 

.