বলরামের পাকস্থলীতে মিলল বিষ, যুগলের রহস্যমৃত্যুর পিছনে তৃতীয় কারও হাত?

বলরামের মতই অর্চনারও আগে থেকে আশিসের সঙ্গে পরিচিতি ছিল। তদন্তের একেবারে শেষ পর্যায়ে পৌছতে গোয়েন্দারা খুঁজছেন অ্যাপ ক্যাবের চালককেও।

Updated By: Oct 8, 2018, 09:37 AM IST
বলরামের পাকস্থলীতে মিলল বিষ, যুগলের রহস্যমৃত্যুর পিছনে তৃতীয় কারও হাত?

নিজস্ব প্রতিবেদন : আনন্দপুর হত্যাকাণ্ডের তদন্তে আরও অগ্রগতি হল। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে নোনাডাঙা থেকে উদ্ধার হওয়া বস্তাবন্দি দেহে মিলল বিষের প্রমাণ। একইসঙ্গে নোনাডাঙা থেকে উদ্ধার হওয়া দেহ বলরামেরই বলে শনাক্ত করেছে তাঁর পরিবার। কিন্তু তারপরেও মাথাচাড়া দিচ্ছে একটি প্রশ্ন। গৃহবধূ অর্চনা পালংদারের খুন ও বলরামের 'আত্মহত্যা'র পিছনে তৃতীয় কোনও ব্যক্তির হাত নেই তো?

বলরামের কললিস্টের সূত্রে ধরে ঝাড়খণ্ড থেকে ধর্মতলার হোটেলকর্মী আশিস যাদবকে গ্রেফতার করে পুলিস। জেরায় অর্চনা পালংদারকে খুনের কথা জানায় আশিসষ। পুলিসকে আশিস জানায়, মৃত্যুর আগে প্রেমিক বলরামের সঙ্গে তাঁদের হোটেলে উঠেছিল অর্চনা। যুগলের মধ্যে বচসা হয়। তারপরই প্রেমিকা অর্চনাকে খুন করে বলরাম। আর অর্চনাকে খুনের পর বিষ খেয়ে আত্মহত্যা করে প্রেমিক বলরাম। হোটেল কর্তৃপক্ষ একথা জানতে পারার পরই জোড়া দেহ লোপাটের সিদ্ধান্ত নেয়। সেইসমতো দেহ সরিয়ে ফেলে সে।

আরও পড়ুন, সোনারপুরে বেআইনি বাজি কারখানায় বিধ্বংসী আগুন, মৃত্যু শ্রমিকের

আশিসের কাছ থেকে একথা জানার পরই বলরামের দেহের উদ্দেশে তল্লাশি শুরু করে পুলিস। শনিবার বিকেলে আনন্দপুর পাম্পিং স্টেশনের অদূরে নোনাডাঙা থেকে উদ্ধার হয় আরও একটি বস্তাবন্দি পচাগলা দেহ। একই প্রিন্টের কম্বল ও নাইলন দড়ি দিয়ে একইরকমভাবে একই কায়দায় বাঁধা ছিল বস্তাটি। ধৃত আশিস যাদব সত্যি কথা বলছে কি না তা জানতে প্রয়োজন ছিল বলরামের দেহের শনাক্তকরণ ও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট। উদ্ধার হওয়া দেহটি বলরামের কিনা, তা জানতে ডেকে পাঠানো হয় বলরামের পরিবারকে। রবিবার বলরামের পরিবার এসে দেহ শনাক্ত করে। বালা ও আঙটি দেখে বলরামের দেহ শনাক্ত করে পরিবার।

শনাক্তকরণের পাশাপাশি ময়নাতদন্তের রিপোর্টও পুলিসের হাতে এসেছে। সেই ময়নাতদন্তের রিপোর্টেই বলরামের পাকস্থলীতে বিষ মিলেছে। প্রাথমিকভাবে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের সঙ্গে মিলে গেছে ধৃত আশিসের বয়ান। তবে এই খুনের ঘটনায় আরও নিশ্চিত হতে চায় পুলিস। ধৃত হোটেলকর্মী আশিস যাদব ছাড়াও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে হোটেল মালিক শাম্মি কাপুরকে। তদন্তে নেমে পুলিস জানতে পেরেছে জোড়া দেহ লোপাট করতে আশিসকে সাহায্য করেন আরও দুই কর্মী হরিহর মাহাতো ও যদু প্রসাদ। দেহ লোপাট করতে ডাকা হয় অ্যাপ ক্যাবও। তদন্তের একেবারে শেষ পর্যায়ে পৌছতে গোয়েন্দারা এবার খুঁজছেন সেই অ্যাপ ক্যাবকে।

আরও পড়ুন, "পিঠের চামড়া গুটিয়ে নুন মাখিয়ে দেব", হুমকি দিলীপের

কারণ আশিস যাদব সত্যি বলছে, এখনই তা মেনে নিতে চাইছেন না তদন্তকারীরা। পুলিস খতিয়ে দেখছে,  দুই রহস্যমৃত্যুর পিছনে তৃতীয় কেউ নেই তো? কারণ, বলরামের মতই অর্চনারও আগে থেকে আশিসের সঙ্গে পরিচিতি ছিল। সেক্ষেত্রে তৃতীয় কোনও পক্ষের এই ঘটনায় যোগ না থাকার সম্ভাবনা এখনই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

.