দিনভর যাদবপুর: Timeline
যাদবপুরের ঘটনায় উপাচার্যের ভূমিকার তীব্র নিন্দা করলেন শিক্ষাবিদ অমল মুখোপাধ্যায়। ক্যাম্পাসে পুলিস ডেকে অনৈতিক কাজ করেছেন উপাচার্য বলে মন্তব্য তাঁর। পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকারও নিন্দা করেছেন অমল মুখোপাধ্যায়।
কলকাতা: নজিরবিহীন ঘটনার স্বাক্ষী রইল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। ঘেরাওমুক্ত হতে ক্যাম্পাসে পুলিস ডাকলেন উপাচার্য। ঘেরাও তুলতে গেলে পুলিসের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে আহত হন ৩৩ জন ছাত্র। পুলিস লাঠি ও টিয়ার গ্যাস নিয়ে ক্যাম্পাসে ঢোকে এবং ঘেরাও তুলতে তাঁদের ওপর লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ ছাত্রছাত্রীদের।
TIMELINE পড়ুন:
৬টা ২০: নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী রইল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। আলো নিভিয়ে ছাত্রছাত্রীদের ওপর নির্বিচারে লাঠি চালাল পুলিস। ছাত্রীদের অভিযোগ, তাদের মাড়িয়ে দিয়ে চলে যান পুলিসকর্মীরা। পুলিসের বুটের আঘাতে আহত ছাত্রীদের নিয়ে যেতে হয় হাসপাতালে। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে মারমুখী বহু বহিরাগতকেও দেখা গেছে পুলিসের সঙ্গে। ছাত্রছাত্রীদের প্রশ্ন , যারা পুলিসের সঙ্গে ঢুকেছিলেন তারা যাদবপুরে পড়েন না, পড়ানও না অথবা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীও না। তাহলে তাঁরা কারা? তাঁদের অভিযোগ, এরা তৃণমূলের লোক। তবে সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন টিএমসিপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা। গোটা রাত ধরে কার্যত পুলিসি তাণ্ডব চলে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে। দিনের বেলা রাস্তা অবরোধ শুরু করেন ছাত্রছাত্রীরা। এরপর তাঁরা ক্লাস বয়কটের পথে যাবেন। পাঁচদিনের পূর্ণ বিশ্রামে গেছেন উপাচার্য।সব মিলিয়ে এই মুহুর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ে চরম অচলাবস্থা জারি। এতকিছুর মূলে রয়েছে ছাত্রছাত্রীদের একটি দাবি। তাদের দাবি ছিল, সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ছাত্রী নিগ্রহের ঘটনা ঘটেছিল, তাতে বাইরের নিরপেক্ষ কাউকে দিয়ে তদন্ত করাতে হবে।
বিকেল ৫টা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গভীর রাতে পুলিসের লাঠিচার্জ ও বহিরাগতদের হামলার প্রতিবাদে মিছিলে সামিল হলেন ছাত্রছাত্রীরা। সামিল হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক-অধ্যাপিকারা। মিছিলে যোগ দিয়েছেন শিক্ষাবিদদের একাংশ এবং সমাজের বিশিষ্টজনেরাও। যাদবপুর বিশববিদ্যালয় চত্বর থেকে শুরু হয়ে মিছিল যায় গোলপার্ক পর্যন্ত। এরপর গোলপার্ক থেকে মিছিল ফিরে আসে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। মিছিলে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে সোচ্চার হন ছাত্রছাত্রীরা। পুলিসের লাঠিচার্জের প্রতিবাদে আগামিকাল ছাত্র ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে এসএফআইসহ চার বাম ছাত্র সংগঠন।
বিকেল ৪টা ৪৫: যে ভাবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালেয় ঢুকে পুলিস নির্যাতন চালিয়েছে তা নিন্দনীয়। এই উপাচার্য তাঁর পদে থেকে গেলে সরকারের ভাবমূর্তির আরও ক্ষতি হবে। ছাত্রছাত্রীদের প্রতিবাদ মিছিলে পা মিলিয়ে বললেন নাট্যব্যক্তিত্ব কৌশিক সেন।
৪টে ৪০: উপাচার্যের পদে থাকার কোনও অধিকার নেই। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা প্রসঙ্গে এমনই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। তাঁর অভিযোগ, সরকার, শাসকদল, পুলিস এবং উপাচার্য , সকলে মিলে পরিকল্পনা করেই ছাত্রছাত্রীদের ওপর সংগঠিতভাবে হামলা চালানো হয়েছে। কেন রাতের অন্ধকারে পুলিস ডেকে ছাত্র পেটাতে হল উপাচার্যকে, এই প্রশ্নও তুলেছেন বিরোধী দলনেতা।
৪টে ৩৫: যাদবপুরে ছাত্রদের উপর পুলিসের হামলার কড়া নিন্দা করলেন কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য। তাঁর দাবি, ছাত্রদের উপর এমন নির্মম হামলা পশ্চিমবঙ্গে আগে কোনদিন হয়নি।
৪টে ১৫: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় আদালতের অধীনে তদন্তের দাবি করলেন বিজেপি নেতা সিদ্ধার্থ নাথ সিং। তাঁর বক্তব্য, আলোচনার রাস্তাতেই সমস্যার সমাধান করতে হবে যাদবপুরে।
৩টে ১৫:"" আর একটু ধৈর্য ধরা উচিৎ ছিল পুলিসের।'' যাদবপুরের ঘটনায় মন্তব্য ফিরহাদ হাকিমের।
দুপুর ৩টে: যাদবপুর ৮ বি বাসস্যান্ডের সামনে পথ অবরোধ এস এফ আইয়ের। গতরাতে যযাদপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে লাঠিচার্জের ঘঠনার নিন্দা এস এফ আইয়ের।" ঠ্যাঙাড়ে বাহিনীর হামলা', বললেন সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়।
২টো ২১: যাদবপুরের ঘটনায় উপাচার্যের ভূমিকার তীব্র নিন্দা করলেন শিক্ষাবিদ অমল মুখোপাধ্যায়। ক্যাম্পাসে পুলিস ডেকে অনৈতিক কাজ করেছেন উপাচার্য বলে মন্তব্য তাঁর। পাশাপাশি ছাত্রছাত্রীদের ভূমিকারও নিন্দা করেছেন অমল মুখোপাধ্যায়।
২টো ১২: গলায় ঝুলছে প্ল্যাকার্ড। তাতে লেখা ছাত্রছাত্রীদের ওপর পুলিসি অত্যাচারের বিরুদ্ধে স্লোগান। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনার প্রতিবাদে আজ এভাবেই পথে নেমেছিলেন বর্ধমানের কেতুগ্রামের কেউগুড়ি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুবীর কুমার মণ্ডল। সকালে টেলিভিশনে যাদবপুরকাণ্ডের খবর দেখার পরই ক্ষুব্ধ সুবীরবাবু প্রতিবাদের সিদ্ধান্ত নেন। সকাল থেকে কাটোয়া শহরের রাস্তায় রাস্তায় গলায় প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে ঘোরেন তিনি।
২টো ০৫: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভে সামিল ছাত্রদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিসের লাঠিচার্জের আগে হঠাতই নিভে গিয়েছিল আলো। ছাত্রদের অভিযোগ, গতকাল রাতে সুপরিকল্পিত ভাবে আলো নিভিয়ে দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই।
দুপুর ১টা: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ভিতর ঢুকে পুলিসের নির্মম অত্যাচার। অবাধে চলল লাঠি। সাদা পোশাকের পুলিস ব্যাপক মারধর করল ছাত্রছাত্রীদের। দেখুন এক্সক্লুসিভ ছবি চব্বিশ ঘণ্টার ক্যামেরায়।
১২টা ৪০: ছাত্রছাত্রীদেরই কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অভিজিত্ চক্রবর্তী। বহিরাগতদের নিয়ে ছাত্রছাত্রীরা গতকাল তাঁকে ঘেরাও করে রাখে বলে তাঁর অভিযোগ। পুলিস এসে তাঁকে উদ্ধার না করলে তিনি খুন হয়ে যেতেন বলে মন্তব্য করেছেন উপাচার্য।
বেলা ১২টা: লাগাতার ছাত্র ঘেরাওয়ের জেরে অসুস্থ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিত্সা হয় উপাচার্য অভিজিত্ চক্রবর্তীর। শুধু তিনিই নন। অসুস্থ হয়ে পড়েছেন আরও কয়েকজন অধ্যাপক। জানিয়েছেন উপাচার্য অভিজিত্ চক্রবর্তী। তদন্তে চলাকালীন ছাত্রছাত্রীদের এই বিক্ষোভ-ঘেরাও অপ্রত্যাশিত বলেই দাবি উপাচার্যের। ঘেরাওয়ের সময়ে অনেকেই বহিরাগত ছিলেন বলেও অভিযোগ তাঁর। বিষয়টি ইতিমধ্যেই শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন উপাচার্য।