"এক মহিলার পাল্লায় পড়ে সব শেষ, আমি আজও ওনাকে ভালোবাসি"
"যে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে দেখে আমি বিয়ে করেছিলাম, তার সঙ্গে আজকের শোভন চট্টোপাধ্যায়কে আমি মেলাতে পারি না। "
নিজস্ব প্রতিবেদন : "এভাবে শোভন চ্যাটার্জির সবকিছু শেষ হয়ে যাবে, সেটা দুর্ভাগ্যজনক। আমার থেকে বেশি যন্ত্রণা আজ কলকাতা শহরে আর কেউ পাবে না।" মন্ত্রিত্ব থেকে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ইস্তফা প্রসঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে জি ২৪ ঘণ্টাকে বললেন মেয়রপত্নী রত্না চট্টোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর 'ধমক খেয়ে' এদিন বিকালে দমকল ও আবাসন মন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন শোভন চট্টোপাধ্য়ায়। মেয়র পদও তাঁকে ছাড়তে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে রত্না চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সামগ্রিক ঘটনার জন্য কাঠগড়ায় তোলেন বান্ধবী বৈশাখী চট্টোপাধ্যায়কে। স্পষ্ট বলেন, "এক মহিলার পাল্লায় পড়ে সব শেষ।" ফোনে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে কার্যত ভেঙে পড়েন মেয়রপত্নী। বলেন, "যে শোভন চট্টোপাধ্যায়কে দেখে আমি বিয়ে করেছিলাম, তার সঙ্গে আজকের শোভন চট্টোপাধ্যায়কে আমি মেলাতে পারি না। যে মানুষটার কাছে রাজনীতি ছিল প্রাণ, রাজনীতি ছিল সবার আগে, সেই মানুষটার এমন পরিণতি চোখে দেখা যায় না।"
রত্না চট্টোপাধ্য়ায় জানান, ২২ বছর আগে তাঁদের যখন বিয়ে হয় তখন শোভন চট্টোপাধ্যায় কাউন্সিলর ছিলেন। পারিবারিক জীবনে তাঁরা সব সময়ই জানতেন যে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কাছে রাজনীতি আগে, পরিবার পরে। পরিবারও সেইমতো সবসময় তাঁর সমস্ত রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের পাশে থেকেছে। 'দিদি' মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'স্নেহের হাত' ছিল তাঁর উপর। তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ারে প্রভূত উত্থান হয়। এবারও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনেকবার অনেকভাবে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন। বার বার বলেছিলেন, "ফিরে আয়, কাজে মন দে।" কিন্তু কারোও কোনও কথা-ই শোভন চট্টোপাধ্যায় কানে তোলেননি বলে অনুযোগ করেন মেয়রপত্নী।
ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, "এক মহিলার পাল্লায় পড়ে সব শেষ। এভাবে শোভন চ্যাটার্জির সবকিছু শেষ হয়ে যাবে, সেটা দুর্ভাগ্য়জনক।" তবে এতকিছুর পরেও তিনি আজও তাঁর 'স্বামী' শোভন চট্টোপাধ্যায়কে একইরকমভাবে ভালোবাসেন বলে জি ২৪ ঘণ্টাকে জানিয়েছেন মেয়রপত্নী রত্না চট্টোপাধ্যায়। মেয়রপত্নী বলেন, গত বছর ৭ নভেম্বর লন্ডন থেকে ফেরেন তিনি। তাঁর দুদিন আগে ৫ নভেম্বর ঘর ছাড়েন শোভন চট্টোপাধ্যায়। তারপর এই একটা বছর বার বার শোভন চট্টোপাধ্যায়কে ফিরে আসার সুযোগ দেওয়া হলেও, তিনি তা কাজে লাগাননি।
আরও পড়ুন, মুখ্যমন্ত্রীর 'ধমক খেয়ে' মন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা শোভন চট্টোপাধ্যায়ের
এখনও হয়তো নেত্রীর কাছে গিয়ে ক্ষমা চাইলে তিনি তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ারে ফিরে আসতে পারেন বলে আশাপ্রকাশ করেছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী। কিন্তু দলনেত্রীর কাছে গিয়ে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের হয়ে তাঁর আর আবেদন করার কোনও মুখ নেই বলে জানান রত্না চ্যাটার্জি।