নিজের কালীপুজোয় বসে সোমেন মিত্র বললেন, তৃণমূল ছাড়া স্রেফ সময়ের অপেক্ষা

আমহার্স্ট স্ট্রিটে নিজের পাড়ার কালীপুজোয় একদম আড্ডার মুডে। তারমধ্যেই উঠল রাজনীতির কথা। সোজা-সাপটা বলে দিলেন, তৃণমূল ছাড়া এখন স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। তিনি, ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ সোমেন মিত্র।

Updated By: Nov 2, 2013, 07:48 PM IST

আমহার্স্ট স্ট্রিটে নিজের পাড়ার কালীপুজোয় একদম আড্ডার মুডে। তারমধ্যেই উঠল রাজনীতির কথা। সোজা-সাপটা বলে দিলেন, তৃণমূল ছাড়া এখন স্রেফ সময়ের অপেক্ষা। তিনি, ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ সোমেন মিত্র।
সোমেন মিত্র বললেন, মমতা ব্যানার্জির প্রতি কোনও রাগ নেই। তবে দলের কর্মপদ্ধতি নেই খুশি নই। তাই দল ছাড়ছি। কবে দল ছাড়বেন! উত্তরে সোমেন মিত্র বললেন, ডিসেম্বরের শেষে বা জানুয়ারিতে।
এর আগে সোমেন কংগ্রেস ফিরে আসার স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়ে ছিলেন। সঙ্গে বলেছিলেন, যারা পিছন থেকে কাজ করে তাদের মেরুদণ্ড নেই।
সোমেন মিত্রকে নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরমহলে কি অস্বস্তি বাড়তে চলেছে? দলের কর্মসূচিতে ধারাবাহিক ভাবে অনুপস্থিত থাকছেন সোমেনবাবু। কিন্তু কংগ্রেসের পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন তিনি। তাঁদের পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দিচ্ছেন। এই নিয়েই শুরু হয়েছে জল্পনা। প্রশ্ন উঠেছে, সোমেনবাবু কি তাহলে অন্য রাজনৈতিক সমীকরণের সন্ধানে রয়েছেন?
কবীর সুমন, রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য,শিউলি সাহা, শিখা মিত্র শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, দলের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন এঁরা। তাতে অস্বস্তি বেড়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরমহলে। সোমেন মিত্র কিন্তু দল নিয়ে প্রকাশ্যে সরব হননি। স্ত্রী শিখা মিত্রের সাসপেন্ড হওয়ার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু কড়া প্রতিক্রিয়ার রাস্তায় হাঁটেননি। কিন্তু তৃণমূলের অন্দরমহলে সোমেন মিত্রকে ঘিরে ফের জল্পনা তৈরি হয়েছে। জল্পনার সূত্রপাত, পয়লা জুলাই বিধানচন্দ্র রায়ের জন্মদিনে, প্রদেশ কংগ্রেস দফতরের এক অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন সোমেন মিত্র। পাশে ছিলেন প্রদীপ ভট্টাচার্য। এরপর আব্দুল মান্নানের পারিবারিক অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি। সম্প্রতি হাজির হয়েছিলেন মান্নান হোসেনের বাড়ির একটি অনুষ্ঠানে।
আর এতেই ভুরু কুঁচকেছে তৃণমূল শিবিরের। সাম্প্রতিককালে তৃণমূলের কোনও বড় জনসমাবেশে সোমেন মিত্রকে দেখা যায়নি।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা নেতৃত্বকে নিয়ে সম্প্রতি কালীঘাটের বাড়িতে বৈঠক করেন মু্খ্যমন্ত্রী। সোমেন মিত্র ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন না। ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনী। সেখানেও দেখা যায়নি সোমেনবাবুকে।
তবে কংগ্রেস নেতৃত্বের পারিবারিক অনুষ্ঠানে কিন্তু সোমেন মিত্রকে দেখা যাচ্ছে। কারণ কী? সোমেন শিবিরের যুক্তি, পারিবারিক অনুষ্ঠানের সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই।
তৃণমূলের একাংশের বক্তব্য, চার বছর হল তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন সোমেন মিত্র। এতদিন তাঁকে কংগ্রেসের পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে দেখা যায়নি। ছমাস ধরে হঠাত্ করে কেন তাঁকে কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে এত বেশি দেখা যাচ্ছে?
প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি নতুন করে কোনও রাজনৈতিক সমীকরণের ভাবনায় রয়েছেন সোমেন মিত্র? তিনি কি একা? নাকি তাঁর সঙ্গে রয়েছেন তৃণমূল শিবিরের আরও কয়েকজন সাংসদ, বিধায়ক? রাজ্য রাজনীতিতে এই সব প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে।

.