শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশে নজিরবিহীন ঘটনা ঘটাল সংসদ

শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর নির্দেশে নজিরবিহীন ঘটনা ঘটাল উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। সন্তোষপুরের ঋষি অরবিন্দ স্কুলের বিক্ষোভ তুলতে খাতা স্ক্রুটিনির সিদ্ধান্ত নিলেন সংসদের দুই প্রতিনিধি। সংসদের এই সিদ্ধান্ত ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। প্রশ্ন উঠছে যেখানে স্কুলগুলিই মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষা নেয় এবং খাতা দেখে, সেখানে কীভাবে এই নির্দেশ দিল শিক্ষা সংসদ? এই সিদ্ধান্ত চরম অবমাননাকর বলে মনে করছেন শিক্ষক শিক্ষিকারাও। মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষা। পরীক্ষা নেওয়া এবং খাতা দেখা সংশ্লিষ্ট স্কুলের দায়িত্ব।

Updated By: Dec 18, 2012, 06:37 PM IST

শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর নির্দেশে নজিরবিহীন ঘটনা ঘটাল উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। সন্তোষপুরের ঋষি অরবিন্দ স্কুলের বিক্ষোভ তুলতে খাতা স্ক্রুটিনির সিদ্ধান্ত নিলেন সংসদের দুই প্রতিনিধি। সংসদের এই সিদ্ধান্ত ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। প্রশ্ন উঠছে যেখানে স্কুলগুলিই মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষা নেয় এবং খাতা দেখে, সেখানে কীভাবে এই নির্দেশ দিল শিক্ষা সংসদ? এই সিদ্ধান্ত চরম অবমাননাকর বলে মনে করছেন শিক্ষক শিক্ষিকারাও। মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষা। পরীক্ষা নেওয়া এবং খাতা দেখা সংশ্লিষ্ট স্কুলের দায়িত্ব।
এবছর উচ্চমাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষায় সন্তোষপুরের ঋষি অরবিন্দ স্কুলের ২৯জন ছাত্রী অকৃতকার্য হয়। পাস করানোর দাবিতে সোমবার রাত থেকে বিক্ষোভ শুরু করে তাঁরা। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন অভিভাবকরাও। দীর্ঘক্ষণ চলতে থাকে ঘেরাও। আর সেই ঘেরাও তুলতে এক নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত নিলেন শিক্ষামন্ত্রী। উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের দুই প্রতিনিধিকে ওই স্কুলে পাঠালেন তিনি। মন্ত্রীর নির্দেশমতো মঙ্গলবার সকালে স্কুলে পৌঁছন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সচিব অচিন্ত্য কুমার পাল ও পরীক্ষা নিয়ামক মলয় রায়। শিক্ষিকা, ছাত্রী এবং তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে নতুন করে খাতা দেখার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। সেইমতো ক্লাসের সব ছাত্রীর খাতা সিল করে দেওয়া হয়। সংসদের এই নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত ঘিরে তোলপাড় শিক্ষামহল। তাঁদের প্রশ্ন, এভাবে কি নতুন কোনও ট্রেন্ড তৈরি করল রাজ্যের শিক্ষা দফতর। এবার থেকে রাজ্যের যেকোনও স্কুলে এধরনের ঘটনা ঘটলেই কি হস্তক্ষেপ করবে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ? সক্রিয় ভূমিকা নেবেন স্বয়ং শিক্ষামন্ত্রী? প্রশ্ন উঠছে এই সিদ্ধান্ত কি শিক্ষকশিক্ষিকাদের সততা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল না? খাতা ঠিকমতো দেখা হয়নি, ছাত্রীদের এই দাবিকে কি আরও জোরালো করল না সংসদের সিদ্ধান্ত?
সংসদের এই পদক্ষেপ কি আদতে শিক্ষকশিক্ষিকাদের প্রতি অনাস্থা দেখানোর সামিল নয়? একইসঙ্গে নজিরবিহীন এই সিদ্ধান্ত ছাত্রছাত্রীদের হাতে অন্য এক অস্ত্র তুলে দিল বলেও মনে করছে শিক্ষকসমাজ। শিক্ষাবিদদের মতে এর জেরে, ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিশ্বাস জন্মাবে পড়াশোনা না করে পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েও, আন্দোলন-বিক্ষোভের মাধ্যমে সহজেই পার পাওয়া যাবে, মিলে যাবে পরবর্তী পরীক্ষায় বসার ছাড়পত্র। যার পরিণতি ভয়ঙ্কর হবে বলে মনে করছেন শিক্ষাবিদরা। সংসদের সিদ্ধান্তে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে শিক্ষকশিক্ষিকাদের মধ্যেও।
পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়ে পাশ করানোর অন্যায্য দাবিতে ছাত্রছাত্রীদের বিক্ষোভের ঘটনা দিনদিন বাড়ছে। শিক্ষাবিদদের বক্তব্য, এই প্রবণতা রুখতে পারত রাজ্যের শিক্ষা দফতরের দৃষ্টান্তমূলক কোনও পদক্ষেপ। পরিবর্তে খাতা স্ক্রুটিনির নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত নিয়ে আদতে শিক্ষা দফতর ছাত্রছাত্রীদের পাশেই দাঁড়াল বলে মনে করছেন তাঁরা। আর এর মাধ্যমে রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থায় বিপজ্জনক এক প্রবণতার জন্ম হল বলেও শিক্ষকসমাজের আশঙ্কা।

.