ভরাডুবির আগাম হদিশ পেয়ে ক্ষমতা দান নেগেলকে, এক্সক্লুসিভ ২৪ ঘণ্টা

বিপুল সাম্রাজ্য যে ডুবন্ত তরী, গত বছরের মাঝামাঝিই তা বুঝতে পেরেছিলেন চিট ফান্ড কেলেঙ্কারির নায়ক সুদীপ্ত সেন। বাঁচার শেষ চেষ্টায় সেপ্টেম্বরে দুর্গাপুরে জরুরি বৈঠক হয়েছিল। সর্বময় ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল সারদার জেনারেল ম্যানেজার মনোজ নেগালকে। কী কী সিদ্ধান্ত হয়েছিল দুর্গাপুরের সেই বৈঠকে? চব্বিশ ঘণ্টার এক্সক্লুসিভ রিপোর্ট। 

Updated By: Apr 30, 2013, 10:44 PM IST

বিপুল সাম্রাজ্য যে ডুবন্ত তরী, গত বছরের মাঝামাঝিই তা বুঝতে পেরেছিলেন চিট ফান্ড কেলেঙ্কারির নায়ক সুদীপ্ত সেন। বাঁচার শেষ চেষ্টায় সেপ্টেম্বরে দুর্গাপুরে জরুরি বৈঠক হয়েছিল। সর্বময় ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল সারদার জেনারেল ম্যানেজার মনোজ নেগালকে। কী কী সিদ্ধান্ত হয়েছিল দুর্গাপুরের সেই বৈঠকে? চব্বিশ ঘণ্টার এক্সক্লুসিভ রিপোর্ট। 
রাজ্যের বৃহত্তম আর্থিক কেলেঙ্কারির জেরে তোলপাড় গোটা রাজ্য। কেলেঙ্কারির মূল পাণ্ডা সুদীপ্ত সেন জেরায় ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন তাঁর রাজনৈতিক যোগাযোগের বিভিন্ন তথ্য। বিরাট সাম্রাজ্যের পতনের আশঙ্কা যে তিনি করছিলেন, তা-ও জেরায় জানিয়েছেন সুদীপ্ত সেন। বিপর্যয় কাটানোর মরিয়া চেষ্টাও যে চালানো হয়েছিল, তা-ও কবুল করেছেন সুদীপ্ত।
অবশ্যম্ভাবী পতন ঠেকাতে দুহাজার বারোর আঠারোই সেপ্টেম্বর দুর্গাপুরে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসেছিলেন সারদার কর্তারা। সেই বৈঠকের মিনিটস চব্বিশ ঘণ্টার হাতে।
ব্যবসার হাল ফেরাতে দুর্গাপুজো থেকে দিওয়ালির মধ্যে এজেন্টদের নতুন প্রলোভন দেখানোর ছক তৈরি হয়েছিল ওই বৈঠকে। ওই নতুন অফার অসম, ঝাড়খণ্ড, বিহার ও ওডিশার এজেন্টদের জন্য নয়, শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গের এজেন্টদের জন্যই, মিনিটসে স্পষ্ট সে কথা লেখা আছে। অর্থাত্ স্পষ্ট শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গেই ব্যবসা মুখ থুবড়ে পড়ার আশঙ্কা করছিলেন সুদীপ্ত সেন। পতন ঠেকানোর নয়া কৌশল ঠিক করার সর্বময় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল সারদার জেনারেল ম্যানেজার মনোজ নেগালকে।
বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, দুহাজার বারোর ডিসেম্বর থেকে সারদার প্রতিটি শাখাকে অন্তত এক কোটি টাকার আমানত তুলতে হবে। 
এ জন্য যে এজেন্টদের খুশি করা দরকার, তা বিলক্ষণ জানতেন সুদীপ্ত সেন। তাই সিদ্ধান্ত হয়েছিল, এজেন্টদের নতুন লোভের টোপ দেওয়া হবে।
বৈঠকের মিনিটসের ন নম্বর পয়েন্টে লেখা হয়েছে, ব্যবসা বাড়াতে দুর্গাপুজো থেকে কালীপুজোর মধ্যে সংস্থার সদস্যদের জন্য নতুন কিছু অফার দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হবে।  
২৪ জন পুরুষকর্মীকে নিয়ে দুটি দল গড়ে সেকেন্ড লাইন অফ অ্যাকশন তৈরির নির্দেশও দেওয়া হয় মনোজ নেগালকে। তারা সংস্থার বিভিন্ন শাখায় ঘুরে নতুন আমানত সংগ্রহের পরিকল্পনা তদারক করবেন।  ওই বৈঠকে, মনোজ নাগেলকে সর্বময় ক্ষমতা দেওয়া হয়। তাঁকে মোট ব্যবসার এক থেকে দেড় শতাংশ পর্যন্ত কমিশন দেওয়ার সিদ্ধান্তও হয়।  নাগেলকে সংস্থার জেনারেল ম্যানেজার এবং সারদা গোষ্ঠীর রাবার স্ট্যাম্প তৈরি করিয়ে নেওয়ার অধিকারও দেওয়া হয়।
বিপর্যয় ঠেকাতে সর্বময় ক্ষমতা পাওয়া মনোজ নাগেল গ্রেফতার হওয়ার পরে, পুরো দায়টাই ঠেলে দিয়েছেন সুদীপ্ত সেন আর দেবযানী মুখোপাধ্যায়ের ঘাড়ে। 

.