ভারতের শেষ গ্রামে চায়ে চুমুক

বদ্রীর উষ্ণ চৌবাচ্চায় মাখামাখি হয়ে যায় ভারতের সবকটা রঙ। বদ্রীনাথের দর্শন সেরে মাত্র ৩ কিলোমিটার ওপরে ওঠা।

Updated By: Sep 27, 2012, 11:44 PM IST

বদ্রীর উষ্ণ চৌবাচ্চায় মাখামাখি হয়ে যায় ভারতের সবকটা রঙ। বদ্রীনাথের দর্শন সেরে মাত্র ৩ কিলোমিটার ওপরে ওঠা। পৌঁছে যাবেন ভারত-তীব্বত সীমান্তের শেষ গ্রাম `মানা`য়। মনে হবে, কেউ যেন পরম যত্নে ঝুলন সাজিয়েছে অলাকানন্দার তীরে। সরু পথ ধরে এগিয়ে যেতেই মেঘের মধ্যে থেকে ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠবে পাথর কাটা জনপদ, বাড়ির উঠোনে তুলো ছাড়ানোয় ব্যস্ত অশীতিপর বৃদ্ধা, স্নানের আগে ছেড়ে যাওয়া বাড়ির কচি সদস্যের চটিটা। এক কথায় মানা-স্বপ্ন সুন্দর।
রাজধানী দিল্লি থেকে মানার দূরত্ব ৫২৫ কিলমিটার। পৃথিবীর ইতিহাসে প্রাচীন ধর্মস্থানও বটে। পাহাড় অধ্যুষিত মানা পেরিয়ে ৪৮ কিলোমিটার দীর্ঘ `মানা পাস`। এই পথ ধরেই একসময় তিব্বতের সঙ্গে বাণিজ্য চলত ভারতের। কিন্তু ১৯৬২ সালের পর থেকে ওই রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। বর্ডার রোড অর্গানাইজেশনের তত্ত্বাবধানে রয়েছে এখন এই পথ।
উত্তরাখন্ডের চামেলি জেলার প্রান্তিক গ্রামটিতে সর্বসাকুল্যে ২৫০টি পরিবারের বাস। মে থেকে সেপ্টেম্বরের দিনগুলোতে গেলে গাঁয়ের লোকেদের সঙ্গে ইয়াক চড়াতে যেতে পারেন পাহাড়ের ঢালে। ছোট্ট গ্রামটিকে ঘিরে ছড়িয়ে রয়েছে পবিত্রতার ছোঁয়া। কিন্তু কী কী দেখবেন ভারতের শেষ গ্রামটিতে? তিব্বত সীমান্তের এই অঞ্চলটা নন্দাদেবী বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভের অন্তর্ভুক্ত। ফলে এখানে গেলে প্রকৃতির অনেক কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়া যায়। গ্রামের ভেতরেই রয়েছে হেমকুণ্ড, গণেশ মন্দির, পাহাড়ি ঝরনা-এগুলো একদম মিস করবেন না। হেমকুণ্ডের পাশেই রয়েছে একখানা চায়ের গুমটি। ভারতের শেষ চায়ের দোকান। ইয়াকের দুধে তৈরি চায়ে চুমুক দিতেই গ্রাম ছাড়া ওই পাথরের রাস্তা ধরে আরোও কিছুটা এগিয়ে যাওয়ার মেজাজ পাবেন। সঙ্গে চনমনে হয়ে উঠবে প্রাণ।
যাওয়ার পথ
- বদ্রীনাথ থেকে গাড়ি নিয়ে মানা চলে যেতে পারেন। তবে গাড়ি গ্রামের মধ্যে ঢুকবে না। পায়ে হেঁটেই দেখতে হবে গোটাটা।
থাকার হদিশ- যেহেতু মানা দেখার জন্য একবেলাই যথেষ্ট, তাই বদ্রীনাথে ফিরে এসে থাকাটাই ভালো। ৫০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে ঘর ভাড়া পেয়ে যাবেন। পিপুলকুঠিতেও থাকতে পারেন। সস্তায় থাকার বেশ কিছু আশ্রম রয়েছে সেখানে। আর মন যদি মানতেই না চায়, মানাতেই রাত কাটাতে পারেন। গামবাসীদের সঙ্গে ভাব করে মাথা গোঁজার ঘর জুটিয়ে নিতে পারলেতো আর কথাই নেই। তীব্বত-ভুটানের স্বাদ মিশে একাকার হয়ে যাওয়া রসনা, সঙ্গে ঠাণ্ডা কাটাতে দেশী পানীয় জমে যাবে আপনার উত্তরাখণ্ড ভ্রমণ।

.