শ্যাম রাখি না কূল! মরুরাজ্য 'হাতে' পেয়েও মুখ্যমন্ত্রী নিয়ে ধন্দে কংগ্রেস

মুখ্যমন্ত্রী দৌড়ে গেহলত না পাইলট এ নিয়ে আড়াআড়ি বিভক্ত কংগ্রেস সমর্থকের মধ্যেও। জয়পুরের কংগ্রেস কার্যালয়ে সে দৃশ্য স্পষ্টত। 

Updated By: Dec 11, 2018, 04:29 PM IST
শ্যাম রাখি না কূল! মরুরাজ্য 'হাতে' পেয়েও মুখ্যমন্ত্রী নিয়ে ধন্দে কংগ্রেস
নিজস্ব চিত্র

জ্যোতির্ময় কর্মকার: মরুরাজ্যে এখনও পর্যন্ত ফলাফলটা এই রকম-  কংগ্রেস -১০২, বিজেপি- ৭২, বসপা- ৫ এবং অন্যান্য- ২০। অর্থাত্ প্রবণতা যে দিকে যাচ্ছে ম্যাজিক ফিগার ছুঁয়ে কার্যত সরকার গড়ার পথে রাহুল গান্ধী। দিনের শেষে যদি এই ফলাফল অটুট থাকে, তা হলে প্রশ্ন, রাজস্থানে মুখ্যমন্ত্রী কে হচ্ছেন? বছর একচল্লিশের সচিন পাইলট নাকি ৬৭ বছরের অশোক গেহলত!  ইতিমধ্যে জোর জল্পনা তৈরি হয়েছে কংগ্রেসের অন্দরে।

আরও পড়ুন- মিজোরামে দলের ভরাডুবির মধ্যেই দুটি আসনেই হার কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রীর

জয়পুরের কংগ্রেস কার্যালয়ের বদ্ধ কাচের ঘরে রুদ্ধশ্বাস বৈঠক চলছে শীর্ষ কংগ্রেস নেতৃত্বের। বাইরে সমর্থকের বাঁধনছাড়া উচ্ছ্বাস কিন্তু ওয়াররুমে থমথমে মুখ কংগ্রেস নেতৃত্বের। এমন বৈপরীত্য কেন? কংগ্রেসের অন্দর সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন করাই এখন সবচেয়ে কঠিন কাজ হয়ে পড়েছে। প্রবীণ কংগ্রেস নেতৃত্ব যেমন ভরসা রাখছেন দু’বারের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলতের উপর তেমনই যুব নেতারা বেশি ঝুঁকছেন রাজস্থান প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি সচিন পাইলটের দিকে। দু’পক্ষের যুক্তিই কাঁটায় কাঁটায় বলে মনে করছে কংগ্রেসের শিবির। সর্দারপুর কেন্দ্র থেকে বরাবর জিতে আসা অশোক গেহলতের ঝুলতে দশ বছরের রাজ্য চালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে। গেহলত সমর্থনকারী নেতাদের মতে, রাজস্থানের যে ইস্যুগুলো সামনে রেখে এ বারের নির্বাচন লড়া হয়েছে, তা সমাধানে দক্ষ এবং অভিজ্ঞ নেতৃত্বের প্রয়োজন। সে দিক থেকে পাল্লা ভারী ইন্দিরা গান্ধীর ঘনিষ্ঠ অশোক গেহলতের।

তবে, অন্য পক্ষের যুক্তি সংগঠনে তৈরিতে কংগ্রেসের এই মুহূর্তে জুড়ি মেলা ভার সচিন পাইলটের। ২০১৩ সালে অজমের বিধানসভার ৮টি আসনে হার হয়েছিল কংগ্রেসের। সংগঠনের ক্ষমতা পেয়ে সচিন অজমেরের রাজনৈতিক চরিত্র পাল্টে দিয়েছেন বলে মনে করছেন অনেকে। সচিনের নেতৃত্বে লোকসভা উপনির্বাচনে ৮টি আসনেই দখল নেয় কংগ্রেস। সূত্রে খবর, সচিনের উপরই বেশি আস্থা রাখছেন রাহুল গান্ধীও।

মুখ্যমন্ত্রী দৌড়ে গেহলত না পাইলট এ নিয়ে আড়াআড়ি বিভক্ত কংগ্রেস সমর্থকের মধ্যেও। জয়পুরের কংগ্রেস কার্যালয়ে সে দৃশ্য স্পষ্টত। কংগ্রেসের ঝুলিতে আসন ঢুকতেই  টিভির পর্দায় চোখ জ্বলজ্বল করা সমর্থকদের মধ্যে কখনও গেহলতকে জয়ধ্বনি দিচ্ছেন সমর্থকরা আবার একাংশ তাদের পাশে বসেই জয়ধ্বনি দিচ্ছেন সচিনের নামে।   কংগ্রেসের অন্দরেই চাপা ক্ষোভ এমন সংঘাতের বীজ বুনছেন খোদ রাহুল গান্ধীই। মরুরাজ্যে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকা গেহলত এবং পাইলট কাউকেই নির্বাচনের আগে মুখ্যমন্ত্রী মুখ করেননি রাহুল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কংগ্রেসের ভিতর অন্তর্দ্বন্দ্ব চাপা দিতেই দু’জনকে টিকিট দিয়েও কৌশলে কারওর নাম আগের থেকে ঠিক করেননি তিনি। উল্টোদিকে মধ্যপ্রদেশে কমলনাথকে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি এবং ৪৭ বছর বয়সী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়াকে নির্বাচন কমিটির নেতৃত্বে রেখেছেন রাহুল। কিন্তু কাউকে টিকিট না দিয়ে এখানেও ভারসাম্য রক্ষার চেষ্টা কংগ্রেস সভাপতির। তাই রাজস্থানে জয়ের পথে থেকেও কংগ্রেসের অন্দরে পৃথক স্বর শোনা যাচ্ছে....

আরও পড়ুন- ক্রেতার অর্ডার করা খাবার নিজে খেয়ে ডেলিভারি করছে জোমেটো বয়! ভিডিয়ো ভাইরাল

এক পক্ষ বলছে- ‘হামারা সিএম ক্যায়সা হ্যায়..অশোক গেহলত য্যায়সা হ্যায়...’ স্লোগানের রেশ শেষ হতে না হতেই চেয়ার উপর দাঁড়িয়ে উচ্চগ্রামে এক কংগ্রেস কর্মীর স্লোগান ... ‘হামারা সিএম ক্যায়সা হ্যায়...সচিন পাইলট য্যায়সা হ্যায়...’

.