দেশের কোনও কোনও অংশে করোনার গোষ্ঠী সংক্রমণ কি শুরু হয়েছে! কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

মহামারী বিশেষজ্ঞ ডা জয়প্রকাশ মুলিইলির দাবি, দেশের বেশকিছু অংশে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়েছে। এখন সরকার ঠিক করবে তা ঘোষণা করবে কিনা

Updated By: Jun 14, 2020, 07:16 PM IST
দেশের কোনও কোনও অংশে করোনার গোষ্ঠী সংক্রমণ কি শুরু হয়েছে! কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

নিজস্ব প্রতিবেদন: দেশে কী করোনাভাইরাসের গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়েছে?  এমন প্রশ্ন মাঝেমধ্যেই ওঠে। তবে আইসিএমআর-এর দাবি অনুযায়ী, ওই স্টেজে আমরা এখনও পৌঁছাইনি।

এদিকে, বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারনা, ভারতে যেভাবে সংক্রমণ বাড়ছে তাতে আমরা ওই দশায় ঢুকে পড়েছি। একাধিক বিশেষজ্ঞের মতামত নিয়ে এমনটাই দাবি করা হয়েছে এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে।

আরও পড়ুন-দিল্লির করোনা মোকাবিলায় আসরে অমিত শাহ, ৭ বড় পদক্ষেপ নিল কেন্দ্র

ওই সংবাদমাধ্যমের এ নিবন্ধে দাবি করা হয়েছে, এইমসের প্রাক্তন ডিরেক্টর ডা এম সি মিশ্র, ভাইরোলজিস্ট শাহিদ জামিল, লাং সার্জেন ডা অরবিন্দ কুমার ও মহামারী বিশেষজ্ঞ ডা জয়প্রকাশ মুলিইলি আইসিএমআর এর দাবি নাকচ করে দিয়েছেন।

সম্প্রতি, আইসিএমআর ডিরেক্টর বলরাম ভার্গব জানিয়েছিলেন, ছোট জেলায় সংক্রমণের হার ১ শতাংশের কম, শহুরে এলাকায় একটু বেশি, কনটেনমেন্ট জোনে আরও একটু বেশি। কিন্তু ভারত এখনও কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের স্টেজে পৌঁছায়নি।

অন্যদিক, বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাস এখন বিভিন্ন এলাকায় গোষ্ঠীর মধ্যে ছড়াচ্ছে। সেখানে আক্রান্তদের বিদেশ ভ্রমণের ইতিহাস নেই। উদাহরণ হিসেবে চেন্নাইয়ের প্রায় প্রতিটি বস্তিতে করোনা ছড়িয়েছে। শহরে প্রতিদিনই ১০০০ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে।

চেন্নাই-সহ তামিলনাড়ুতে যেভাবে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে তাতে গোষ্ঠী সংক্রমণের বিষয়টি ভাবাচ্ছে রাজ্য সরকারকে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে ওই সংবাদমাধ্যমের দাবি, আইসিএমআর এর গাইডলাইন ছাড়া রাজ্যে কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের ঘোষণা করা যাবে না।

প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব কে সুজাতা রাও ওই সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের উচিত আইসিএমআর-এর দাবি নাকচ করে দিল্লি, মুম্বই ও তামিলনাড়ুতে গোষ্ঠী সংক্রমণের কথা স্বীকার করে নেওয়া। পাশাপাশি সরকারের করোনা নিয়ন্ত্রণ নীতিরও বদল করা।

মহামারী বিশেষজ্ঞ ডা জয়প্রকাশ মুলিইলির দাবি, দেশের বেশকিছু অংশে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়েছে। এখন সরকার ঠিক করবে তা ঘোষণা করবে কিনা। চেন্নাইয়ের কিছু বস্তির কথা যদি ধরা যায় তাহলে দেখা যাবে যারা বাইরে যায়নি বা ট্রাভেল হিস্ট্রি নেই তারাও সংক্রমিত। অর্থাত্ গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়েছে।

অন্যদিকে, এইমসের প্রাক্তন ডিরেক্টর ডা এম সি মিশ্র সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছেন, আনলক হওয়ার পর যেভাবে মানুষ যাতায়াত শুরু করেছে তাতে যে এলাকায় করোনা ছিল না সেখানেও করোনা ছড়াবে। তাই সরকারের উচিত এ ব্যাপারে সাধারণ মানুষকে সতর্ক করে দেওয়া।

আরও পড়ুন-ব্যোমকেশ, তোমার মৃত্যুর রহস্য জট কে খুলবে?

মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রমণ রোগ বিভাগের প্রধান ডা ফাহিম ইউনুসের বক্তব্য খুবই সোজাসাপটা। তাঁর দাবি, বিদেশ যাতায়াতের ইতিহাস নেই অথচ কোনও এলাকায় কোনও রোগ একজনের থেকে কোনও গোষ্ঠীতে ছড়াচ্ছে, এরকম অবস্থা হলে তাকে গোষ্ঠী সংক্রমণই বলা হয়।

ভাইরোলজিস্ট শাহিদ জামিলের বক্তব্য, সরকারের নিজের পরিসংখ্যান অনুয়ায়ী দেশে যাদের করোনা ধরা পড়েছে তাদের ৪০ শতাংশের সিভিয়ার রেসপিরেটরি ইলনেস রয়েছে। এদের বিদেশযাত্রার কোনও ইতিহাস নেই। এটা যদি গোষ্ঠী সংক্রমণ না হয় তাহলে গোষ্ঠী সংক্রমণ আর কাকে বলব।

.