সাক্ষাত্ মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা! রায়গড়ে একমাত্র জীবিতের মুখে হাড়হিম করা অভিজ্ঞতা

শেষ মুহূর্তে পিকনিকে না যাওয়ায় প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন আরও একজন।

Updated By: Jul 29, 2018, 09:29 AM IST
সাক্ষাত্ মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসা! রায়গড়ে একমাত্র জীবিতের মুখে হাড়হিম করা অভিজ্ঞতা

নিজস্ব প্রতিবেদন : মহারাষ্ট্রের রায়গড়ে বাস দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ২৫টি দেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। জাতীয় বিপর্যত মোকাবিলা দলের তরফে এমনটাই জানানো হয়েছে। বাস দুর্ঘটনার জেরে কমপক্ষে ৩৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা। নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে ফেরেন মাত্র একজন।

মহারাষ্ট্রের রায়গড় জেলার আমবেনালিঘাট পর্বতে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বাসটি। জানা গেছে, মহাবলেশ্বরে পিকনিকে যাচ্ছিলেন দাপোলি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৪ জন পড়ুয়া ও শিক্ষাকর্মী। সেইসময়ই দুর্ঘটনাটি ঘটে। মহাবালেশ্বরের কাছে রায়গড়ের আমবেনালি ঘাটে রাস্তা থেকে পিছলে গভীর খাদে পড়ে যায় বাসটি। শুনশান জায়গায় প্রায় ২৫০-৩০০ ফিট গড়িয়ে যায় বাসটি। দুর্ঘটনাটি যখন ঘটে, তখন কেউ-ই সেখানে উপস্থিত ছিল না।

দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসটি থেকে সৌভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে যান একজন। অভিশপ্ত ওই বাসটি থেকে তিনি কীভাবে বেঁচে ফেরেন, তা নিজে মুখেই জানিয়েছেন প্রকাশ সাওয়ান্ত। প্রকাশ জানান, বৃষ্টির জন্য রাস্তায় কাদা ছিল। বাসটি কাদা রাস্তায় পিছলে যায়। প্রথমে বাঁদিকে হেলে পড়ে বাসটি। তারপরই খাদে গড়িয়ে যায়। বাসটি যখন খাদে গড়িয়ে পড়ছে, সেইসময়ই একটা জায়গায় গাছে আটকে যায় বাসটি। তখনই তিনি বাসের জানলা দিয়ে ঝাঁপ মারেন। এরপরই একটি গাছের ডাল ধরে নেন তিনি। তারপরই গাছের ডাল ধরে ধরে কোনওভাবে ৫০০ ফিট খাড়াই বেয়ে উপরে রাস্তায় উঠে আসেন তিনি।

আরও পড়ুন, বিয়ের আগে মর্মান্তিক পরিণতি, ময়দানে বর্জ্রপাতে কেড়ে নিল প্রেমিকের জীবন, আহত প্রেমিকা

প্রকাশ জানিয়েছেন, রাস্তায় উঠে তিনি দেখেন কয়েকন জটলা পাকিয়ে রয়েছে। খাদের ধারে উঁকি মেরে কী ঘটেছে, তা বোঝার চেষ্টা করছে। তাঁদেরই একজন তাঁকে নিজের ফোনটি দেন। সেই ফোন থেকেই পুলিসকে ফোন করে দুর্ঘটনার খবর দেন। খবর পেয়েই উদ্ধারকাজে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রশাসন। যুদ্ধকালীন তত্পরতায় শুরু হয় উদ্ধারকাজ।

অন্যদিকে, শেষ মুহূর্তে পিকনিকে না যাওয়ায় প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন আরও একজন। প্রবীণ রাণদিভে নামে ওই শিক্ষাকর্মীরও পিকনিক দলটির সঙ্গে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতার জন্য শেষ মুহূর্তে যাওয়া বাতিল করেন তিনি। প্রবীণ জানিয়েছেন, তাঁদের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছিল। সাড়ে ৬টার সময় পিকনিকের জন্য বাসটি ছাড়ে। সকাল সাড়ে ৯টার সময় ব্রেকফাস্টের জন্য যখন পিকনিকের দলটি থামে, তখনই সেই গ্রুপে শেষ মেসেজ পোস্ট করা হয়। তারপর আর কোনও মেসেজ ছিল না। কিছুপর তিনি ওই গ্রুপে নিজে মেসেজ করেছিলেন। কিন্তু কোনও উত্তর পাননি। এরপরই সাড়ে ১২টার সময় দুর্ঘটনার খবর পান তিনি।

আরও পড়ুন, রাস্তায় হম্বিতম্বি মদ্যপ যুবকের, পুলিস দেখে চম্পট প্রেমিকা

দুর্ঘটনায় গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ। দুর্ঘটনায় নিহতদের প্রত্যেকের পরিবার পিছু ৪ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন তিনি। দুর্ঘটনায় গভীর দুঃখপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীও।

.