কনে সেজে তৈরি, ৫ বছর প্রেমের পরও ছাদনাতলায় এলেন না পাত্র !

অপেক্ষা শেষ হল না তরুণীর। লগ্ন পেরিয়ে যাওয়ার পরও এলেন না পাত্র অর্ঘ্য। কিন্তু কেন? কেউ ঠাহর করতে পারছেন না। ফোন করা হয় পাত্রকে, তাও নট রিচেবল। সকালেও তো গায়ে হলুদের তত্ত্ব পাঠানো হয়েছিল, তখনও তো সব ঠিকই ছিল। 

Updated By: Jan 24, 2018, 02:29 PM IST
কনে সেজে তৈরি, ৫ বছর প্রেমের পরও ছাদনাতলায় এলেন না পাত্র !

নিজস্ব প্রতিবেদন:  আলোর মালায় সেজেছে বাড়ি। সঙ্গে কান ঝালাপালা করা সানাইয়ের সুর। মণ্ডপ সেজেছে লাল-হলুদ ফুলে।  আয়োজনের কোনও খামতিই নেই। বাড়ির একমাত্র মেয়ের বিয়ে বলে কথা! মোটা টাকার প্যাকেজে ভাড়া করা ফটোগ্রাফাররাও এসে পড়েছেন ততক্ষণে। সিঁদুর, লাল শাড়ি আর চন্দনে কনেকে সাজাতে রওনা দিয়েছেন মেকআপ আর্টিস্টও। কিন্তু যাঁর আসার কথা, এলেন না শুধু তিনিই। বিয়ের করার প্রতিশ্রুতি দিয়েই মণ্ডপে এলেন না পাত্র। অতঃপর প্রতারণার অভিযোগে তাঁকে যেতে হল শ্রীঘরে। 

আরও পড়ুন: 'জয় মা' বলে তলোয়ার হাতে তাণ্ডব, রক্তাক্ত দক্ষিণেশ্বর
খড়দার যুবক অর্ঘ্য বসুকে নিয়ে অনেক স্বপ্নই দেখেছিলেন খড়দার বছর চব্বিশের তরুণী। আর পাঁচ জনের মতো, মনের মতো কেনাকাটাও করেছিলেন। বুধবার ছিল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। বিয়ের সন্ধ্যায় কনে সাজে হাতে সিঁদুর কৌটো নিয়ে অপেক্ষায় তরুণী। গুটি গুটি পায়ে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন আমন্ত্রিতরাও। বরের বসার জায়গাও তখন ঝলমল করছে। কনে তখন প্রহর গুনছেন, কখন আসবে 'সে'। কনেপক্ষের লোকেদেরও চরম ব্যস্ততা। পাত্রী তখনও  টের পাননি, কী ঘটতে চলেছে!  
অপেক্ষা শেষ হল না তরুণীর। লগ্ন পেরিয়ে যাওয়ার পরও এলেন না পাত্র অর্ঘ্য। কিন্তু কেন? কেউ ঠাহর করতে পারছেন না। ফোন করা হয় পাত্রকে, তাও নট রিচেবল। সকালেও তো গায়ে হলুদের তত্ত্ব পাঠানো হয়েছিল, তখনও তো সব ঠিকই ছিল। 

আরও পড়ুন: জাতীয় সড়কে চাঁদার জুলুমবাজির প্রতিবাদে রুদ্রমূর্তি রূপার, দেখুন
মাথায় হাত পড়ে যায় পাত্রীর বাবার।  এরপর পাত্রের বাড়িতে সটান হাঁটা দেন পাত্রীর বাবাই। সেখানে গিয়ে দেখেন বিয়ের কোনও তোড়জোড়ই নেই সেখানে। উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। নিজেকে আইটি প্রফেশনাল বলে পরিচয় দেওয়া অর্ঘ্য আদপে বেকার। কোনও রোজগারই করেন না তিনি। পাত্রীর বাবাকে অর্ঘ্য স্পষ্ট জানান, তিনি বিয়ে করতে পারবেন না। 
বাবার মুখে সব শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন পাত্রী। গত পাঁচ বছরে তাঁকে আইটি কোম্পানিতে চাকরি করেন বলে অর্ঘ্য জানিয়ে এসেছিলেন। বলেছিলেন ৩৫ হাজার টাকা মাইনে পান তিনি। সম্প্রতি তিনি নাকি বেঙ্গালুরুতে চাকরি পেয়েছেন বলেও দাবি করেন। কীভাবে দিনের পর দিন এইভাবে মিথ্যা বলে গিয়েছেন অর্ঘ্য, তা ভেবেও কূল পাচ্ছে না পাত্রীর পরিবার। অবশেষে পাত্রীর বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে অর্ঘ্যকে গ্রেফতার করে খড়দা থানার পুলিস। অর্ঘ্যের বিরুদ্ধে তরুণীর পরিবারের আরও অভিযোগ, বিয়ের আগের দিনও ৩৫ হাজার টাকা নিয়েছিলেন তিনি।

আরও পড়ুন: দিলীপ ঘোষের মেরুদণ্ডের অস্ত্রোপচার
বরণ ডালার প্রদীপ তখনও জ্বলছে, তবে জামাই-বরণ আর হল না। তরুণীর পরিবারের কেনা ধুতি পাঞ্জাবিতে রুপোলি গদির ওপর বসা হল না অর্ঘ্যরও। থানায় যাওয়ার আগে সজল চোখে অর্ঘ্যের স্বীকারোক্তি, ‘আমি মিথ্যা বলেছি, কিন্তু এত দূর জল গড়াবে বুঝিনি।‘
 

.