Paschim Medinipur: একের পর এক নাটক মঞ্চস্থ স্কুল পড়ুয়াদের, মোবাইল আসক্তি কাটাতে উদ্যোগ শিক্ষকের

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুরে গেলে দেখা মিলবে স্কুলে স্কুলে খুদে অভিনেতা অভিনেত্রীর ছড়াছড়ি। এলাকা ও এলাকার বাইরে গ্রামের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তাদের রীতিমতো ডাক পড়ছে। হাজার হাজার দর্শকের মাঝে মঞ্চে তাক লাগানো অভিনয় করতে দেখে অবাক বাবা মাও।

Updated By: Feb 13, 2024, 10:44 AM IST
Paschim Medinipur: একের পর এক নাটক মঞ্চস্থ স্কুল পড়ুয়াদের, মোবাইল আসক্তি কাটাতে উদ্যোগ শিক্ষকের
নিজস্ব ছবি

চম্পক দত্ত:  স্কুল শিক্ষকতার পাশাপাশি ছুটির পর বা ছুটির দিনে বিনা পারিশ্রমিকে একাধিক স্কুলের পড়ুয়াদের নাটকের পাঠ দিচ্ছেন স্কুল শিক্ষক পুলক আদক। ডিজিটাল যুগে পড়ুয়াদের মোবাইল আসক্তি কাটাতে এবং বাংলার নাট্য সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনার লক্ষ্য স্কুল শিক্ষক পুলক আদকের এহেন উদ্যোগের প্রশংসায় পঞ্চমুখ স্কুল কর্তৃপক্ষ থেকে অভিভাবকরা। নাটক বা থিয়েটারে অভিনয়ের মাধ্যমে নিজের চরিত্রের বাইরে গিয়ে অন্যের চরিত্রকে নিজের মধ্যে এনে তা দর্শকদের কাছে পরিবেশন। কাজটা নেহাত কম শিক্ষনীয় বিষয় নয়। আর সেই কাজটাই করে দেখাচ্ছে স্কুলের কচিকাঁচারা।

আরও পড়ুন, Sandeshkhali: সন্দেশখালিকাণ্ডে জামিন পাওয়ার পর ফের গ্রেফতার বিকাশ-উত্তম!

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার দাসপুরে গেলে দেখা মিলবে স্কুলে স্কুলে খুদে অভিনেতা অভিনেত্রীর ছড়াছড়ি। এলাকা ও এলাকার বাইরে গ্রামের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তাদের রীতিমতো ডাক পড়ছে। বিভিন্ন উৎসব অনুষ্ঠানে এই খুদেদের অভিনীত একের পর এক নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে,হাজার হাজার দর্শক তা দেখছে। নিজের ছেলে মেয়েকে হাজার হাজার দর্শকের মাঝে মঞ্চে তাক লাগানো অভিনয় করতে দেখে অবাক বাবা মাও। সারা বাংলায় যখন কচিকাঁচা থেকে যুবক যুবতীদের বিরুদ্ধে একেবারে অপসংস্কৃতিতে মেতে থাকা এবং ডিজিটাল যুগে মোবাইলে আসক্তির বাড়বাড়ন্ত।

সেই সময় দাসপুর জুড়ে নতুন প্রজন্মের এই নাট্য চর্চা কিন্তু বেশ সাড়া ফেলেছে। আর এসবের পিছনে মুল কারিগর দাসপুরেরই এক বাসিন্দা। তিনি পেশায় শিক্ষক নাম পুলক আদক। পুলক বাবুর বাড়ি দাসপুরের যদুপুরে, তিনি বর্তমানে ঘাটাল এলাকার প্রসাদচক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। পুলকবাবু দীর্ঘ প্রায় ৫ বৎসর ধরে নিজের স্কুল ছুটির পর বা ছুটির দিনগুলিতে দাসপুরের বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে নাটকের পাঠ দিয়ে চলেছেন। দাসপুরের সামাট,রামগড়,ধান্যখাল,রাজনগর,গোকুলনগর এর মতো গ্রামে গ্রামে প্রাথমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা এমন নাটকের পাঠ নিয়ে উচ্ছ্বসিতও।

স্কুলের বার্ষিক অনুষ্ঠান হোক বা বিভিন্ন পুজো পার্বণে অনুষ্ঠান মঞ্চে এই পুলকবাবুর নির্দেশনায় নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে আর অভিনয়ে বিদ্যালয়ের কচিকাঁচারা। সব চাইতে বড় কথা দাসপুরের এই শিক্ষক সমস্তটাই করছেন বিনা পারিশ্রমিকে ভালোবেসে,এলাকার কচিকাঁচাদের ছোটো থেকে বাংলার ঐতিহ্য সংস্কৃতির সঙ্গে জড়িয়ে দেবার জন্য। অন্যদিকে স্কুলে স্কুলে এর জেরে স্কুল ছুট পড়ুয়ার সংখ্যাও কমছে,এক ঘেঁয়েমি পাঠ্য বই এর বাইরে এসে এমন নাট্য চর্চায় শিক্ষার্থীরা যেন রিচার্জ হয়ে আরও জোর কদমে পড়াশোনার মধ্যে ডুবতে পারছে।

স্কুল কর্তৃপক্ষ থেকে অভিভাবকরাও খুশি স্কুলে পড়াশোনার বাইরেও পড়ুয়াদের নাট্য সংস্কৃতি মনোভাবাপন্ন করে তুলে অপসংস্কৃতি এবং মোবাইল আসক্তি থেকে দুরে রাখার এহেন প্রচেষ্টায়। দাসপুরের বাসিন্দা পাশাপাশি ঘাটালের কিসমত দেওয়ানচক ভবানন্দ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিশ্বজিৎ জানা বলেন, পুলক আমার ভাইয়েত মতো সত্যিই পুলক বাংলার নাটককে ধরে রাখতে একটা আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। আমি নিজেও দেখেছি নাটকের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পাঠের এক ঘেয়েমি দূর হয়।

হারিয়ে যেতে বসা নাট্য সংস্কৃতিকে পড়ুয়া পঠনপাঠনের সঙ্গেই তাদের এ বিষয়ে উৎসাহিত করে সামিল করিয়ে স্কুলমুখী করার একজন স্কুল শিক্ষকের এমন উদ্যোগে খুশি সকলেই। বলা চলে দাসপুরে স্কুল শিক্ষকের হাত ধরে নাট্য বিপ্লব স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যে,সময়ের বাইরে গিয়ে একজন শিক্ষকের এই নাট্যচর্চা সাড়া ফেলেছে দাসপুর জুড়ে।

আরও পড়ুন, Bengal News LIVE Update: চোপড়াকাণ্ডে ১২জনের প্রতিনিধি দল গঠন তৃণমূলের

(দেশ, দুনিয়া, রাজ্য, কলকাতা, বিনোদন, খেলা, লাইফস্টাইল স্বাস্থ্য, প্রযুক্তির টাটকা খবর, আপডেট এবং ভিডিয়ো পেতে ডাউনলোড-লাইক-ফলো-সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের AppFacebookWhatsapp ChannelX (Twitter)YoutubeInstagram পেজ-চ্যানেল)

.