অপহরণকারীদের ফাঁদে ফেলে পুরোদস্তুর ফিল্মি কায়দায় গাড়ি ব্যবসায়ীকে উদ্ধার পুলিসের
৭০ হাজার টাকা নিয়ে আসার জন্য লক্ষ্মীকান্ত মিশ্র তাঁর নিজের মোবাইল ফোন থেকে মামাতো ভাইকে ফোন করেন। টাকা নিয়ে ভাইকে একা আসতে বলেন।
নিজস্ব প্রতিবেদন : রীতিমতো ফিল্মি কায়দায় ৪ অপহরণকারীকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায়।
বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টেয় গাড়ি ব্যবসায়ী লক্ষ্মীকান্ত মিশ্রকে জমির মাটি ভরানোর কাজ দেওয়ার নাম করে পাঁশকুড়ার মঙ্গলদাঁড়ি বাজারে ফোন করে ডেকে আনা হয়। বাজারে পৌঁছনো মাত্র ৪ অপরিচিত যুবক জোরপূর্বক চোখ বেঁধে দেয় ওই গাড়ি ব্যবসায়ীর। তারপর বাইকে করে তুলে নিয়ে চলে যায়। একটি বুকিং অফিসে নিয়ে আসা হয় ওই গাড়ি ব্যবসায়ীকে। অফিসে ভিতর তাঁকে ঢুকিয়ে বেঁধে রাখা হয়। ব্যাপক মারধর চালানো হয়। এরপরই মুক্তিপণ চায় চার যুবক। প্রথমে লক্ষাধিক টাকা পণের দাবি করা হয়। লক্ষ্মীকান্ত মিশ্র তা দিতে অস্বীকার করেন। তখন ৭০ হাজার টাকা মুক্তিপণে রফা করে অপহরণকারীরা।
কিন্তু লক্ষ্মীকান্ত মিশ্র সেটাও দিতে অস্বীকার করলে তাঁকে ধারালো অস্ত্রের কোপ মারে অপহরণকারীরা। খুনের হুমকি দেওয়া হয় তাঁকে। বলা হয়, কেটে কুচি কুচি করে বস্তাবন্দি দেহাংশ খিরাই নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হবে। এরপরই ৭০ হাজার টাকা নিয়ে আসার জন্য লক্ষ্মীকান্ত মিশ্র তাঁর নিজের মোবাইল ফোন থেকে মামাতো ভাইকে ফোন করেন। টাকা নিয়ে ভাইকে একা আসতে বলেন লক্ষ্মীকান্ত মিশ্র। কাঁপা কাঁপা গলায় লক্ষ্মীকান্ত মিশ্রের কথা শুনেই সন্দেহ হয় মামাতো ভাই অর্ণব চক্রবর্তীর।
টাকা নিয়ে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে উপর মেছোগ্রাম ওভার ব্রিজে ভাইকে আসতে বলেন লক্ষ্মীকান্ত মিশ্র। ১০ মিনিট অন্তর অন্তর ফোন আসতে থাকে। বিষয়টি সুবিধাজনক না মনে হতেই, সোজা পাঁশকুড়া থানার পুলিশকে ঘটনাটি জানান অর্ণব চক্রবর্তী। ফোনে রেকর্ড করা পুরো কথপোকথন শোনার পর ৭০ হাজার টাকা সহ অর্ণব চক্রবর্তীকে একাই পাঠিয়ে দেয় পুলিস। আর তারপর চারদিকে আড়ি পেতে, জাল বিছিয়ে বসে পুলিস। কিছু পর একটি বাইকে করে দুই যুবক নির্দিষ্টস্থলে আসা মাত্রই পুলিস তাদের ঘিরে ফেলে।
আরও পড়ুন,বিধায়ক নন, সরিফুদ্দিনই কি ছিল টার্গেট? জয়নগরকাণ্ডে চাঞ্চল্যকর তথ্য
পুলিসকে দেখে পালানোর চেষ্টা করে দুই দুষ্কৃতী। কিন্তু পুলিস তাদের ধরে ফেলে। ধাওয়া করে অপহরণকারীদের খপ্পর থেকে উদ্ধার করা হয় লক্ষ্মীকান্ত মিশ্রকে। ঘটনাস্থল থেকেই গ্রেফতার করা হয় ৪ অহপরহণকারীকে। জেরায় ধৃতরা তাদের অপরাধ কবুল করেছে। ধৃতদের কাছ থেকে পুলিস ধারালো অস্ত্র, অজ্ঞান করার ওষুধ, ঘুমের ওষুধ, বেশকিছু ম্যাপ ও মোবাইল উদ্ধার করেছে। জানা গিয়েছে, ধৃত সেখ আখতার আলি,সামিম খান, গোলাম মোস্তাফা খান ও শেখর দলুই- চার জনেরই বাড়ি পাঁশকুড়ার গোটপোতা এলাকায়। লক্ষ্মীকান্ত মিশ্রের বাড়ি পাঁশকুড়ার তিলাগ্রামে।