হিন্দুত্বের লড়াইয়ে বিজেপির রথ রুখতে নাম সংকীর্তন বীরভূমের কেষ্টর

হরিনাম সংকীর্তন সঙ্গে খোল-খঞ্জনির বাজনা। সকাল থেকে জমজমাট ডাকবাংলোর মাঠ। 

Updated By: Dec 5, 2018, 11:44 PM IST
হিন্দুত্বের লড়াইয়ে বিজেপির রথ রুখতে নাম সংকীর্তন বীরভূমের কেষ্টর

কমলিকা সেনগুপ্ত

হরে রাম হরে রাম, রাম রাম হরে হরে... বছরখানেক আগে কেউ ভাবতে পারেননি ভোটের লক্ষ্যে রামনাম করতে হবে বাংলার কোনও রাজনৈতিক দলকে। বুধবার বোলপুরে ডাকবাংলোর মাঠে তৃণমূলের কোল-করতাল বিলির সভায় লাউডস্পিকারে ভেসে আসল কৃষ্ণনাম। পুরোহিত সম্মেলনের পর কীর্তন করিয়ে চমক দিলেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। লালমাটিতে বিজেপির রথের চাকা রুখতে কি  কীর্তনেই  ভরসা? তা অবশ্য মানছেন না অনুব্রত।

হরিনাম সংকীর্তন সঙ্গে খোল-খঞ্জনির বাজনা। সকাল থেকে জমজমাট ডাকবাংলোর মাঠ। বছরখানেক আগে এখানেই পুরোহিত সম্মেলন করেন অনুব্রত। এবার কীর্তন। লালমাটির জেলা বীরভূমের পরিসংখ্যান বলছে, জেলার ভোটব্যাঙ্কের ৬০% হিন্দু। আর রাজ্যে বিজেপির উত্থানের সঙ্গেই হিন্দুত্বের আবেগ ক্রমবর্ধমান। যা আগে কখনও পূর্ব ভারতের এই রাজ্যে দেখা যায়নি। উত্তর ভারতের হিন্দুত্ব ক্রমশ জাঁকিয়ে বসছে বাংলায়। তার সঙ্গে ক্রমানুপাতিক হারে শ্রীবৃদ্ধি ঘটছে গেরুয়া দলের। লোকসভা ভোটের আগে হিন্দুত্বের বর্ধিত পালে হাওয়ায় ভোট বৈতরণী পার হতে চান দিলীপ ঘোষরা। সেইলক্ষ্যই জেলা জুড়ে রথে ছোটানোর পরিকল্পনা করেছে গেরুয়াবাহিনী। ১৪ ডিসেম্বর আসছেন অমিত শাহ। গেরুয়া রথের মোকাবিলায় কি অনুব্রতর কীর্তন শরণ? প্রশ্নটা একবারে ছক্কা মারার ভঙ্গিতে মাঠের বাইরে উড়িয়ে দিলেন বীরভূমে তৃণমূলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ সভাপতি। নির্দেশ দেওয়ার ভঙ্গিতে বললেন, বিজেপির রথযাত্রার দিন খোল-করতাল নিয়ে নামতে হবে রাস্তায়।   

বিরোধী শূন্য বোর্ড। পঞ্চায়েত ভোটে ডিসটিংশন পান অনুব্রত। লোকসভা ভোটেও সেই রেজাল্টই রিপিট করতে চান। তার বার্তাও এদিনের মঞ্চ থেকেই দিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর কথায়, ''মরার সময়ে মানুষ হরিনাম করে। ২০১৯ সালে বিজেপি ফিনিশ''। ৪ হাজারের বেশি কীর্তন শিল্পীর হাতে এদিন খোল-খঞ্জনি তুলে দেওয়া হল। দীর্ঘ অবহেলার পর সম্মানিত। উচ্ছ্বাসে শিল্পীদের মুখেও কেষ্টনাম।   

এসবকে অবশ্য পাত্তা দিতে নারাজ গেরুয়া শিবির। রাজনৈতিক মহলের মতে, বিজেপির পাতা ফাঁদেই পা দিচ্ছে না তো তৃণমূল? হিন্দুত্বের মাটিতে বিজেপি হল পিএচডি প্রাপ্ত ছাত্র। হিন্দুত্বের লড়াইয়ে তাঁদের মাত দেওয়া কঠিনই নয়, বরং অসম্ভব। সেটা বারেবারে প্রমাণিত হয়েছে। বরং হিন্দুত্বের জিগির তুললে ভোটের ফসল কেটে নিয়ে যেতে পারে গেরুয়া শিবিরই। 

আরও পড়ুন- লকেটের হুঁশিয়ারির জন্যই কি মহিলা রক্ষী? কী জবাব অনুব্রতর?

.