বর্ধমান কাণ্ড: বাংলাদেশের জঙ্গিগোষ্ঠী না সিমি? কেন্দ্রীয় গোয়ান্দা সংস্থা-রাজ্যের রিপোর্টের ফারাকে বাড়ছে রহস্য

বর্ধমান বিস্ফোরণের পিছনে কারা? এ নিয়ে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ও রাজ্যের রিপোর্টে বিস্তর ফারাক। বিস্ফোরণের জন্য বাংলাদেশের জঙ্গিগোষ্ঠীকেই দায়ী করেছেন রাজ্য সরকার। বাংলাদেশের যোগের উল্লেখ NIA -রিপোর্টেও রয়েছে। কিন্তু, তাঁরা আরও বেশি জোর দিয়েছে সিমির ওপর। সিমি প্রশ্নে আবার রাজ্যের রিপোর্ট নীরব। বর্ধমান বিস্ফোরণ নিয়ে রাজ্যের রিপোর্টে বাংলাদেশের জঙ্গিগোষ্ঠীর দিকেই আঙুল তোলা হয়েছে। বলা হয়েছে অভিযুক্তেরা সকলেই বাংলাদেশের জামাত-উল-মুজাহিদিন সংক্ষেপে JMB-র সদস্য। এবং সেই যোগসূত্রের মূলে রয়েছেন নিহত শাকিল গাজি। রিপোর্টে উল্লেখ,

Updated By: Oct 6, 2014, 09:23 PM IST
বর্ধমান কাণ্ড: বাংলাদেশের জঙ্গিগোষ্ঠী না সিমি? কেন্দ্রীয় গোয়ান্দা সংস্থা-রাজ্যের রিপোর্টের ফারাকে বাড়ছে রহস্য

ওয়েব ডেস্ক: বর্ধমান বিস্ফোরণের পিছনে কারা? এ নিয়ে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ও রাজ্যের রিপোর্টে বিস্তর ফারাক। বিস্ফোরণের জন্য বাংলাদেশের জঙ্গিগোষ্ঠীকেই দায়ী করেছেন রাজ্য সরকার। বাংলাদেশের যোগের উল্লেখ NIA -রিপোর্টেও রয়েছে। কিন্তু, তাঁরা আরও বেশি জোর দিয়েছে সিমির ওপর। সিমি প্রশ্নে আবার রাজ্যের রিপোর্ট নীরব। বর্ধমান বিস্ফোরণ নিয়ে রাজ্যের রিপোর্টে বাংলাদেশের জঙ্গিগোষ্ঠীর দিকেই আঙুল তোলা হয়েছে। বলা হয়েছে অভিযুক্তেরা সকলেই বাংলাদেশের জামাত-উল-মুজাহিদিন সংক্ষেপে JMB-র সদস্য। এবং সেই যোগসূত্রের মূলে রয়েছেন নিহত শাকিল গাজি। রিপোর্টে উল্লেখ,

সক্রিয় জেএমবি সদস্য, ঢাকার বাসিন্দা শাকিল আহমেদ দুহাজার সাতে ভারতে আসেন

নদিয়ার করিমপুরের বারবাগপুরের এক ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন শাকিল

সেই প্রতিষ্ঠানের সম্পাদক রফিকুল ইসলামের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা সূত্রে তার খুড়তুতো বোন রাজিয়াকে বিয়ে করেন তিনি

সেই বৈবাহিক সম্পর্কের সুবাদেই রাজিয়ার বাবা আজিজুল হোসেন গাজিকেই, শাকিল নিজের বাবা বলে পরিচয় দিতে শুরু করেন।

এভাবে শাকিল আহমেদ হয়ে যান শাকিল গাজি। এই নামেই ভারতের ভোটার কার্ড তৈরি করান তিনি।

কলকাতা, নদিয়া ও মুর্শিদাবাদের একাধিক ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল শাকিলের

গত জুনে বর্ধমানে আসেন শাকিল, কাপড়ের ব্যবসায়ী পরিচয়ে বাড়ি ভাড়া করেন

খাগড়াগড়ের ভাড়াবাড়িতে উদ্ধার তথ্যপ্রমাণের তালিকাও রাজ্যের সরকারের রিপোর্টে যুক্ত করা হয়েছে।

তথ্য প্রমাণের তালিকা
-------------
সেই তালিকায় রয়েছে, জেহাদি প্রচারপত্রিকা, নষ্ট করে ফেলা দুটি সিম কার্ট, একটি মোবাইলের সিম ও মেমরি চিপ, পঞ্চান্নটি হ্যান্ড গ্রেনেড, স্প্লিন্টার, শার্পনেল ও রাসায়নিক

মেমরি চিপে রয়েছে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ভাঙার ভিডিও এবং জেহাদি প্রশিক্ষণের ভিডিও

পাওয়া গেছে চুয়াল্লিশ হাজার টাকা, কার্তুজের খোল এবং লেদ মেশিন

রিপোর্টে বলা হয়েছে কওসর নামে এক বাংলাদেশি, নম্বরহীন মোটরসাইকেলে এসে ওই বাড়ি থেকে গ্রেনেডগুলি নিয়ে যেত

কিন্তু সেই গ্রেনেড কোথায় যেত তার উল্লেখ রিপোর্টে স্পষ্টভাবে করা হয়নি

তবে সেই গ্রেনেড যে শুধুমাত্র বাংলাদেশের যেত, রিপোর্টে ঘুরিয়ে তার ইঙ্গিত করা হয়েছে

রাজ্য সরকারের রিপোর্ট পুরোটাই বাংলাদেশ কেন্দ্রীক। তাতে সিমি বা অন্য কোনও জঙ্গি সংগঠনের যুক্ত থাকার সন্দেহমাত্র প্রকাশ করা হয়নি। কিন্তু, প্রশ্ন উঠছে,

যখন শাকিল আহমেদ ও কওসর ছাড়া অন্য অভিযুক্তেরা সকলেই ভারতীয়, তখন তাঁরা কেন জেএমবির সদস্যপদ নেবেন?

বাংলা ভাইয়ের মৃত্যুর পর বাংলাদেশে প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়া জেএমবির জন্য ভারতে বোমা তৈরি হবে কেন?

বাংলাদেশের জেহাদি সংগঠন ভারতে স্লিপিং সেল খোলার জন্য আর্থিক সহায়তা ও অন্যান্য সুবিধা কোথা থেকে পেল? রাজ্য সরকারের রিপোর্টের এই অংশগুলি নিয়েই প্রশ্ন তোলা হয়েছে এনআইএ রিপোর্টে। সেখানে বাংলাদেশ যোগের উল্লেখ থাকলেও, সিমি যোগের সম্ভাবনার ওপরই বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। NIA তার রিপোর্টে বলেছে,

বর্ধমান বিস্ফোরণে জঙ্গিযোগ জেএমবি-কে ছাড়িয়েও অনেকদূর বিস্তৃত

শাকিল আহমেদের কলকাতা বন্দর এলাকায় যাতায়াত ছিল

২০১২ সালে বন্দর এলাকাতেই ধরা পড়েন সিমি নেতা হারুন অল রশিদ

সিমির সর্বভারতীয় নেতা সফদর নাগোরিও দীর্ঘদিন মুর্শিদাবাদে ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লুকিয়ে ছিলেন

তাই শাকিলের সঙ্গে সিমির কোনও যোগাযোগ হয়নি একথা জোরের সঙ্গে বলা যায় না। এনআইএ-এর তদন্তকারীদের যুক্তি, আধুনিক সন্ত্রাসবাদ কখনও দেশ বা কালের বিচার করে না। তাই, খাগড়াগড়ের গ্রেনেড কারখানার ভারত বিরোধী কার্যকলাপ হত না এমন দাবি কখনই করা যায় না।

 

.